বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) কর্তৃক ১ থেকে ১২তম নিবন্ধনধারীদের মধ্যে রিটকারী প্রায় ২ হাজার ৫০০ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করতে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বাতিল করেছেন আপিল বিভাগ।
সোমবার এনটিআরসিএর বিরুদ্ধে জারি করা আদালত অবমাননার রুল খারিজ করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ৬ বিচারপতির বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে এনটিআরসিএ’র পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার ফিদা এম কামাল। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. কামরুজ্জামান। রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান, মমতাজ উদ্দিন ফকির, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া ও ব্যারিস্টার মহিউদ্দিন হানিফ।
আরও পড়ুন: তালাকনামায় আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট
গত ৩১ মে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ১ থেকে ১২তম নিবন্ধনধারীদের মধ্যে রিটকারী ২৫০০ জনকে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চার সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগের সুপারিশ করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ২০১৭ সালের একটি রায় অবমাননার অভিযোগ তুলে করা আদালত অবমাননার আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
পরে গত ১৩ জুন হাইকোর্টের এই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ। গত ২২ জুন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদনটি শুনানির জন্য উত্থাপন করা হলে তা আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। সে অনুযায়ী সোমবার এনটিআরসিএ’র আবেদনের শুনানি নিয়ে আদেশ দেন আপিল বিভাগ।
আরও পড়ুন: ২০ বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তির বৈধতা প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল
জানা যায়, এনটিআরসিএ’র এক থেকে ১২তম নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে করা পৃথক ১৬৬টি রিট আবেদনের শুনানি করে২০১৭ সালে হাইকোর্ট সাত দফা নির্দেশনা দিয়ে একটি রায় দেন। ওই রায়ে এক থেকে ১২তম নিবন্ধনধারীদের একটি জাতীয় মেধাতালিকা তৈরি করে সেই মেধা তালিকা অনুযায়ী নিয়োগের সুপারিশ করতে আদেশ দেয়া হয়। কিন্তু ওই রায় বাস্তবায়ন না হওয়ায় পরবর্তীতে ২০১৯ সালে হাইকোর্টে আদালত অবমাননার মামলা করেন রিটকারীরা। সে প্রেক্ষিতে এনটিআরসিএ’র বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করে হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: ডিএজি ও এএজি নিয়োগের বৈধতা প্রশ্নের রুল শুনানিতে বিব্রত হাইকোর্ট
সর্বশেষ গত ৩০ মার্চ এনটিআরসিএ বেসরকারি স্কুল কলেজ ও মাদরাসায় প্রায় ৫৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগের জন্য তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে। এ অবস্থায় হাইকোর্টে আদালত অবমাননার আবেদন শুনানির জন্য উঠলে গত ৬ মে ১ থেকে ১২তম নিবন্ধনধারীদের মধ্যে রিটকারীদের এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৭ দিনের মধ্যে নিয়োগের সুপারিশ করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ৫৪ হাজার নিবন্ধনধারীকে নিয়োগের জন্য জারি করা গণবিজ্ঞপ্তি এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। পরে ৩১ মে হাইকোর্ট রিটকারী প্রায় আড়াই হাজার জনকে চার সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগের সুপারিশ করতে আদেশ দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তির ওপর স্থগিতাদেশ তুলে নেন। হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে এনটিআরসিএ গত ১৩ জুন আপিল বিভাগে আবেদন করেন, যার ওপর সোমবার আদেশ দেন আপিল বিভাগ।