খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) ৩১ তম বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে।
সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদী চত্বরে ভিসি প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। পরে ভিসির উপস্থিতিতে র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
উদ্বোধনকালে ভিসি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শুধুমাত্র দক্ষিণাঞ্চলের একটি বিশ্ববিদ্যালয় নয়, এটি বাংলাদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়, এই বিশ্ববিদ্যালয় সুনামের সাথে এগিয়ে যাচ্ছে, এই ধারা ভবিষ্যতেও যাতে অব্যাহত থাকে সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাবো। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক, শিক্ষক, কর্মকর্তা কর্মচারী, ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
১৯৯১ সালের ২৫ নভেম্বর যাত্রা শুরু করে দক্ষিণাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৯১ সালে মাত্র ৪টি ডিসিপ্লিন এবং ৮০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে বর্তমানে ২৯টি ডিসিপ্লিনে পড়ছে সাত হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী।
একসময়ে ময়ূরী নদীর কোলঘেষে রেডিও স্টেশন ছিল, যা মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্যাতন ও গণহত্যা কেন্দ্রে রূপান্তরিত হয়। সেই বধ্যভূমিতে পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠিত হয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। তৎকালীন রেডিও স্টেশনটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরে শহীদ নজরুল ইসলাম ভবন নামে পরিচিত হয়।
সম্প্রতি এডি সাইন্টিফিক ইনডেক্স নামের আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা সংস্থা সারাবিশ্বের ২০৬ দেশের ১৩ হাজার ৫৩১ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত লক্ষাধিক বিজ্ঞানীর সাইটেশন এর ভিত্তিতে বিশ্ব বিজ্ঞানীদের তালিকায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯ জন বিজ্ঞানী ও গবেষক স্থান পেয়েছেন। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন স্থান পেয়েছেন।
তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি ও ফরেস্ট্রিতে প্রথম, দেশে চতুর্থ, এশিয়ায় ১৫১ ও বিশ্বে ৮২৫ তম স্থান লাভ করেন।
আরও পড়ুন: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খুলছে ১৮ অক্টোবর
বিজ্ঞান ও গবেষণার ওপর ভিত্তি করে প্রকাশিত সিমাগো-স্কপাসের ২০২০ সালের ইনস্টিটিউশনস র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের মধ্যে সার্বিক ক্যাটাগরিতে খুবি টানা দুই বছর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। উদ্ভাবনী ক্যাটাগরিতে গত বছরের চেয়ে ২৮ ধাপ এগিয়ে বৈশ্বিক ৪২১ তম স্থানে এবং দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে খুবি।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে পরিচালিত এ অন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় খুবি প্রথমবার দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে উদ্ভাবনীতে প্রথম, গবেষণায় দ্বিতীয় এবং সামাজিক গবেষণায় ৬ষ্ঠ স্থান লাভ করে।
বিদেশি শিক্ষার্থীদের আস্থা বাড়ছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে। ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়েছেন ১৯ বিদেশি শিক্ষার্থী, যা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ পর্যন্ত স্নাতক পর্যায়ে সর্বোচ্চ। ভারত, কানাডা ও নেপাল থেকে শিক্ষার্থীরা পড়ছেন জীববিজ্ঞান স্কুল ও বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি স্কুলে।
বছরে সারাটা সময়ই কোনো না কোনোভাবে রঙিন থাকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক চর্চার জন্য ২২টিরও অধিক সংগঠন সক্রিয় রয়েছে এখানে। বিতর্ক, গান, নাচ, আবৃত্তি, গবেষণা ও ফটোগ্রাফির মত দক্ষতা চর্চার জন্য যেমন সংগঠন রয়েছে; তেমনি পথশিশুদের শিক্ষাদান, দুস্থদের সাহায্য বা রক্তদানের মতো সামাজিক সেবামূলক কাজের সংগঠনেরও অভাব নেই।
আরও পড়ুন: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন