বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই বইমেলা শুরু হয়েছে।
এ বছরের বইমেলা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষে তার স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০১৯ প্রদান করেন।
এবারের পুরস্কার প্রাপ্তরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রফিকুল ইসলাম (মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্য), মকিদ হায়দার (কবিতা), ওয়াসি আহমেদ (কথাসাহিত্য), স্বরোচিষ সরকার (প্রবন্ধ / গবেষণা), খায়রুল আলম সবুজ (অনুবাদ), রহিম শাহ (শিশুসাহিত্য), রতন সিদ্দিকী (নাটক), নাদিরা মজুমদার (কল্পনাবিজ্ঞান), ফারুক মঈনউদ্দিন (আত্মজীবনী / ভ্রমণকাহিনী) এবং সাইমন জাকারিয়া (লোককাহিনী)।
পুরস্কার প্রাপ্তরা তিন লাখ টাকার চেক এবং ক্রেস্ট গ্রহণ করেন।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলা একাডেমি প্রতিবছর সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করে থাকে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা ‘আমার দেখা নয়া চীন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
বাংলা একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এবং বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী।
পরে প্রধানমন্ত্রী বইমেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন।
৩ থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি প্রতিদিন বিকাল ৪টায় মেলা অনুষ্ঠানের মূলপর্বে সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। সেমিনারে বঙ্গবন্ধু এবং তার জীবন ও রচনা সম্পর্কিত বই নিয়ে আলোচনা হবে।
আগের বছরের মতো বইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং একাডেমির সামনে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় ৮ লাখ বর্গফুট জায়গায়। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২৬টি প্রতিষ্ঠানকে ১৭৯টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৬৩৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৯৪টি ইউনিট মোট ৫৬০টি প্রতিষ্ঠানকে ৮৭৩টি ইউনিট এবং বাংলা একাডেমিসহ ৩৩টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে ৩৪টি প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
বাংলা ভাষাকে মাতৃভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি আটজন বাঙালির আত্মত্যাগের স্মরণে প্রতিবছর মাসব্যাপী এই বইমেলার আয়োজন করা হয়।
আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৭২ সালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে মেলা শুরু হয়েছিল, তবে বাংলা একাডেমি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবছর বইমেলার আয়োজন করার জন্য ১৯৭৮ সালে দায়িত্ব গ্রহণ করে।
পরে এটি নামকরণ করা হয় ‘অমর একুশে গ্রন্থ মেলা’ এবং ১৯৮৪ সালে সাড়ম্বরে বর্তমানের অমর একুশে গ্রন্থমেলার সূচনা হয়।
রবি থেকে বৃহস্পতিবার প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত বইমেলা সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার বেলা ১১টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। এছাড়া ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে।