আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করিনি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক পর্যন্ত স্থগিত করেছি। প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর থেকে ফিরে আমাদের সাথে বসবেন বলে জানিয়েছেন। তার সম্মানে আমরা ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি বলে জানিয়েছেন চা শ্রমিক ইউনিয়নের সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা।
দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবি চা শ্রমিকদের চলমান ধর্মঘট প্রত্যাহার নিয়ে বিভক্তির প্রেক্ষিতে শনিবার রাতে সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমানের সাথে বৈঠক শেষে শ্রমির পক্ষে থেকে এই সিদ্ধান্ত আসে।
বৈঠক শেষে রাজু গোয়ালা বলেন, আমাদের মজুরি মাত্র ২৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এতে আমরা কেউই সন্তুষ্ট না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যেহেতু আশ্বাস দিয়েছেন, ভারত থেকে ফিরে আগামী মাসে আমাদের সঙ্গে বসবেন। আমাদের দাবি দাওয়া শুনবেন তাই আমরা তার প্রতি সম্মান জানিয়ে ধর্মঘট আপাতত স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করি, প্রধানমন্ত্র্রী আমাদের দাবি দাওয়া শুনে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানের উদ্যোগ নেবেন।
আরও পড়ুন: মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে কাল থেকে চা শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট
রাজু বলেন, সারাদেশের কথা জানি না। তবে আমাদের সিলেট ভ্যালির ২৩ বাগানের শ্রমিকরা আন্দোলন স্থগিত করতে সম্মত হয়েছি। এখন আমরা আবার সব বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সঙ্গে বসবো।
রবিবার থেকে শ্রমিকরা যথারীতি কাজে যোগ দেবে বলে জানান রাজু।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান জানান, প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সম্মান দেখিয়ে রবিবার থেকে চা শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে সম্মত হয়েছেন।
বৈঠকে সিলেটের স্থানীয় সরকার উপপরিচালক মো. মামুনুর রশীদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আনোয়ার সাদাত, সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজমেরী হক ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে সিলেটের তারাপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক রিংকু চক্রবর্তী জানান, আমরা জেলা প্রশাসকের বৈঠকে উপস্থিত হয়েছি। চলমান সঙ্কট নিরসন হয়েছে। রবিবার চা শ্রমিকেরা কাজে যোগদান করবে। আপাতত ১৪৫ টাকা মজুরি দেয়া হবে। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে করণীয় ঠিক করা হবে।
আরও পড়ুন: চা শ্রমিকদের মজুরি ২০১৯ সালেই বৃদ্ধি করা উচিৎ ছিল: গবেষক আশ্রাফুল
গত ১৩ আগস্ট দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন চা শ্রমিকরা। ধর্মঘটের আট দিনের মাথায় শনিবার দুপুরে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের কার্যালয়ে শ্রম অধিপ্তর ও সরকারের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে বসেন চা শ্রমিক নেতারা। বৈঠকে শ্রমিকদের মজুরি ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করার প্রস্তাব দেয়া হয়। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী চা শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানানো হয়। এমন আশ্বাসের পর ধর্মঘট প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দেয়ার কথা জানান শ্রমিক নেতারা।