মহাকাশ থেকে শুরু করে বাড়ির আঙ্গিনা, সবখানেই এক অনুগত সহকারী হিসেবে আবির্ভাব ঘটছে স্বয়ংক্রিয় যান্ত্রিক কাঠামো বা রোবটের। এর সঙ্গে মানুষের মতো অবয়ব ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আসফালনে মানুষের পাশাপাশি দ্বিতীয় স্বতন্ত্র সভ্যতার প্রবেশদ্বারে পৌঁছেছে রোবট। সম্প্রতি বিশ্বের সর্বাধুনিক হিউম্যানয়েড রোবট অ্যামেকা যেন ঠিক তারই প্রতিধ্বনি বয়ে বেড়াচ্ছে। ২০৩০ এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে শতকরা ৩০ ভাগ কাজ রোবটের দখলে চলে যাওয়ার এ যেন প্রথম পদক্ষেপ। চলুন, প্রযুক্তি জগতের এই অভাবনীয় সাফল্যের ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
অত্যাধুনিক হিউম্যানয়েড রোবট অ্যামেকা কি কি করতে পারে
অ্যামেকার কার্যকলাপের মধ্যে যেটি সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ে তা হল তার মুখের অভিব্যক্তি। মুচকি হাসির সময় সে চমৎকার ভাবে চারপাশ তাকাতে পারে। তার অবাক হয়ে তাকানো, নাক আঁচড়ানো, এমনকি দর্শকের সঙ্গে মজা করার বিষয়টি অভূতপূর্ব। অবশ্য একদম মানুষের মতো মুখভঙ্গি দেখে অনেকের পিলে চমকে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: টেসলার রোবট ‘অপটিমাস’ দেখালেন ইলন মাস্ক
অ্যামেকার প্রতিটি চোখে একটি করে ক্যামেরা আছে। এগুলো দিয়ে সে সামনের মানুষদের শনাক্ত করতে ও তাদের মুখ স্পষ্টভাবে ট্র্যাক করতে পারে। আচরণগত অভিব্যক্তি প্রকাশের সময় সে তার কাঁধ নাড়িয়ে মাথার পাশ পর্যন্ত নিজের হাত ওঠাতে পারে। যে কোনো বস্তু শনাক্ত করার সময় অ্যামেকার গতিবিধি অন্য যেকোনো রোবটের চেয়ে বেশ প্রাণবন্ত।
যুক্তরাজ্যের গবেষকদের একটি দল সম্প্রতি অ্যামেকার সিস্টেমে চ্যাটবট আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করেছে। ফলে অ্যামেকা মানুষের কাছ থেকে কোনো ইনপুট ছাড়াই স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছে। তবে এখন পর্যন্ত অ্যামেকার নীচের অর্ধাংশ অকার্যকর থাকায় সে হাঁটতে পারছে না।
আধুনিক হিউম্যানয়েড রোবট অ্যামেকার নির্মাতা
অ্যামেকার নেপথ্যে আছে ইঞ্জিনিয়ার্ড আর্টস নামের যুক্তরাজ্যের শীর্ষস্থানীয় একটি ডিজাইনার এবং মানবাকৃতির বিনোদন রোবট প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান৷ রোবটের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সর্বোচ্চ অভিজ্ঞতা প্রদানের লক্ষ্যে ব্রিটিশ কোম্পানিটি যাত্রা শুরু করেছিলো ২০০৫ সালে। তারপর থেকে ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে তারা মানবাকৃতির রোবটের বিকাশ নিয়ে সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ক্যান্সার খুঁজতে দেহের ভিতর সাঁতার কাটবে রোবট
২০১৬ সালে উদ্ভাবিত বিখ্যাত সোফিয়া রোবটে ব্যবহৃত প্রযুক্তির অনেকটাই ব্যবহার করা হয়েছে এই অ্যামেকাতে। ইঞ্জিনিয়ার্ড আর্টস অ্যামেকাকে ভবিষ্যত মানবাকৃতির রোবটের জন্য একটি অগ্রগামী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে প্রদর্শন করছে, যার ওপর ভিত্তি করে অজস্র বিকাশ ঘটানো যাবে রোবটিক্সে।
তাদের প্রস্তুতকৃত অন্যান্য রোবটগুলোর মধ্যে আছে মেস্মার, রোবোথেস্পিয়ান ও কুইন। এছাড়া গ্রাহকদের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে কাস্টমাইজ রোবট তৈরির লক্ষ্যেও তারা কাজ করছে।