ব্যাটারি ও সুক্ষ ইলেকট্রনিক সার্কিটের উপস্থিতির কারণে মোবাইল ফোন পানিতে পড়ে গেলে বেশ বিড়ম্বনার সম্মুখীন হতে হয়। দৈনন্দিন জীবনের একটি আবশ্যক বস্তু হওয়ার ফলে মোবাইল ফোন মানুষের চলাফেরায় একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই প্রায় সময় অনিচ্ছা সত্ত্বে বিভিন্ন দুর্ঘটনাবশত মোবাইল ফোনটি নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম ঘটে। খুব সাধারণের মধ্যে মোবাইল ফোন পানিতে পড়ে যাওয়াটাই বেশি পরিলক্ষিত হয়। তাই চলুন, জেনে নেয়া যাক মোবাইল ফোন পানিতে পড়লে কি কি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে।
মোবাইল ফোনটি পানিতে পড়ে গেলে কি করবেন
১। অবিলম্বে ফোনটি সুইচ অফ করা
পানি বিদ্যুৎ পরিবাহী হওয়ার কারণে যেকোন ভেজা বৈদ্যুতিক সার্কিট সমস্যার সম্মুখীন হতে বাধ্য। এক্ষেত্রে সুইচ অফ করা ফোনে বিদ্যুৎ না থাকায় ভেজা অবস্থার কাছে এটি ধরাশায়ী থাকে না। তবে বৈদ্যুতিক ডিভাইসটি ভিজে যাওয়ার অর্থ এই নয় যে, এটি একদম অকেজো হয়ে গেছে। ভাগ্য ভালো হলে বড় কোন ক্ষতি হওয়ার আগেই ফোন বন্ধ হয়ে গেলে সম্ভাব্য জটিলতা সৃষ্টি হবে না।
যখন পানি ফোনের ভেতরে ঢুকে পড়ে তখন একটি বিদ্যুৎ বহন করে ফোনের অভ্যন্তরে প্রতিটি অংশে পৌঁছে দেয়। ফলে ফোনটি বিদ্যুৎ-এ ওভারলোড হয়ে সার্কিট বোর্ড পুড়ে যায়।
কখনও কখনও পানি ফোনের দুর্বল অংশগুলোতে পৌঁছতে একটু বেশি সময় নিতে পারে। তবে দেরিতে হোক বা দ্রুত হোক; লবণাক্ত পানি মিঠা পানির তুলনায় ফোনকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে।
পড়ুন: সারাদেশে পাওয়া যাচ্ছে রিয়েলমি নারজো ৫০ ও সি৩১
২। একটি হালকা ভেজা কাপড় দিয়ে ফোনটা মুছে নেয়া
ব্যাপারটা মনে হতে পারে ভেজা ফোনকে আরও ভিজিয়ে দেয়া। কিন্তু আসলে ভেজা কাপড় মোবাইল ফোনকে ক্ষয়কারী বস্তুকে অপসারণ করতে সাহায্য করে। আজকাল বেশিরভাগ স্মার্টফোন স্যাঁতস্যাঁতে কাপড়ের সাথে মানিয়ে নিতে পারে। শুধু খেয়াল রাখতে হবে যে কাপড়টি যেন একদম ভিজে চুপচুপে না হয়। মুছে নেয়ার পর ফোনের গায়ে বিন্দু বিন্দু জমে থাকা ময়লা পানি আর থাকবে না।
৩। মোবাইলের অপসারণযোগ্য যন্ত্রাংশগুলো খুলে ফেলা
মোবাইল ফোনটির সিম কার্ড, মাইক্রো-এসডি কার্ড এবং সম্ভব হলে ব্যাটারিও খুলে ফেলতে হবে। যন্ত্রাংশগুলো অপসারণের সময় ফোনটি আলতো করে নাড়াতে হবে যেন ভেতরের পানি বেরিয়ে যায়। এ সময় সতর্ক থাকতে হবে যেন খুব ঝাকুনিতে গুরুত্বপূর্ণ পার্ট্স খুলে না যায়।
এভাবে ফোনের প্রতিটি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশের দুর্বল উপাদানগুলোতে পানি পৌঁছাতে বাধা দেয়া যায়। খুব সহজভাবে বলতে গেলে সমস্ত অপসারণযোগ্য অংশগুলো একটি শুকনো জায়গায় রেখে দেয়া ভালো।
পড়ুন: ফোন ফ্যাক্টরি রিসেট করার সঠিক পদ্ধতি
৪। পরিপূর্ণরূপে শুকিয়ে নিতে হবে
এ বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মোবাইল ফোন শুকানোর জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে।
টিস্যু বা নরম তোয়ালে
টিস্যু বা তোয়ালে মৃদু এবং লিন্ট-মুক্ত হলে ভালো। তোয়ালে দিয়ে ফাটল বা ফুটোগুলো মুছার সময় খুব সতর্ক থাকতে হবে। সিম কার্ড, মাইক্রো-এসডি কার্ড এবং ব্যাটারির মতো যন্ত্রাংশগুলো খুলে তোয়ালে দিয়ে মুছে নেয়া যায়। টিস্যুর ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যে মুছার সময় বেশি চাপ লেগে টিস্যুর ছেড়া অংশ মোবাইলের ভেতরের কোন ফুটোর ভেতরে সেধিয়ে না যায়।
ভ্যাকুয়াম ক্লিনার
পানি শুষে নিতে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করা যেতে পারে। টিস্যু বা তোয়ালে দ্বারা পরিষ্কার করা যায় না এমন অংশগুলোর জন্য এই কৌশলটি কার্যকর হতে পারে। একটি ভ্যাকুয়াম ক্লিনার প্রতিটি বিটে বিটে পানি শুষে নিয়ে অধিকতর ঝুঁকির সম্ভাবনা হ্রাস করতে সহায়তা করে। এখানেও সতর্ক থাকা দরকার। কেননা খুব শক্তভাবে টেনে নেয়ার সময় ফোনটিকে দ্রুত নাড়াবে এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ টেনে নিতে পারে।