এছাড়া প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের স্বাগত জানাচ্ছে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। যুক্তরাজ্যে এ সংক্রান্ত বিনিয়োগ ক্যাম্পেইনে ব্যাপক সাড়াও মিলছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ও দ্য সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির যৌথ উদ্যোগে সিলেট হাই-টেক পার্কে (সিলেট ইলেকট্রনিক্স সিটি) আগ্রহী বিনিয়োগকারীদের নিয়ে কর্মশালায় এ তথ্য জানানো হয়।
দ্য সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন সিলেট হাই-টেক পার্কের প্রকল্প পরিচালক ব্যারিস্টার মো. গোলাম সারোয়ার ভুইয়া।
কর্মশালায় বিনিয়োগ বিষয়ে ধারণা দেন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের উপ পরিচালক প্রকৌশলী মো. আতিকুল ইসলাম, উপ-পরিচালক (পরিকল্পনা) কল্যাণ কুমার সরকার।
প্রকল্প পরিচালক ব্যারিস্টার সরওয়ার তার বক্তব্যে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সরাসরি নির্দেশনায় প্রকল্পটি দ্রুত গতিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ করে বিনিয়োগের জন্য প্রকল্পটি বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
তিনি জানান, ২২ ফুট গভীর ১৬৭ একর প্রকল্পের ভূমিটির অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রায় শেষ পর্যায়ে। ইতোমধ্যে সাইট অফিস, প্রশাসনিক ভবন, দৃষ্টিনন্দন আইসিটি বিজনেস সেন্টার, শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের কাজ চলছে। নির্মাণ করা হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ব্রিজ এবং বিগত ৫০ বছরের অবস্থা পর্যালোচনাক্রমে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। স্থাপন করা হচ্ছে বিদ্যুতের সাব-স্টেশন এবং গ্যাস সংযোগ দেয়া হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই আরও কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ শেষ হয়ে যাবে।
কর্মশালায় জানানো হয়, ৪০ বছর মেয়াদী প্লট লিজ দেয়া হবে। প্রতি স্কয়ার মিটার ভূমির ভাড়া হবে প্রতি বছর ১.৫ ডলার। এছাড়া ৩১ হাজার স্কয়ার মিটার স্পেস বিনিয়োগকারীদের ভাড়া দেয়া হবে। বিনিয়োগকারীরা ট্যাক্স হলিডেসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি যৌথ বিনিয়োগে প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারবেন। কোনো ছাড়পত্রের জন্য কোনো দপ্তরে দৌড়াতে হবে না। ওয়ানস্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে ১৪৮টি সেবা প্রদান করা হবে। যতরকম সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন হবে তা সরকারই করে দেবে, তবে কোম্পানি গঠনের পর তা অন্য কারো কাছে হস্তান্তর করা যাবে না।
সভাপতির বক্তব্যে চেম্বার সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অংশ হিসেবে সিলেটে গড়ে তোলা হচ্ছে সুবিশাল হাই-টেক পার্ক সিলেট ইলেক্ট্রনিক্স সিটি। সরকার নিজ উদ্যোগে সম্পূর্ণভাবে অবকাঠামো তৈরি করে বিনিয়োগকারীদের সুযোগ করে দিচ্ছেন। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার খুবই আন্তরিক। এ লক্ষ্যে সম্প্রতি সিলেট চেম্বারের উদ্যোগে দেশে এবং বিদেশে বিভিন্ন সেমিনারের আয়োজন করে উদ্যোক্তাদের অবহিত করা হয়েছে। বিশেষ করে লন্ডনে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ও সিলেট চেম্বার অব কমার্সের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে আমার সাথে প্রকল্পের পরিচালক ব্যারিস্টার সরওয়ার ও সিরাজুল ইসলাম বাদশা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে প্রবাসীরা সিলেট হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগে ব্যাপক আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
তিনি সরকারের দেয়া এই সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য দেশি ও প্রবাসী প্রকৃত বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানান।
সেমিনারে আলোচনায় অংশ নেন আইসিটি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বাদশা, সিলেট চেম্বারের পরিচালক জিয়াউল হক, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ শরফুদ্দিন, আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলীমুল এহছান চৌধুরী, ট্রেড সিলেটের সিইও মো. ফখরুজ্জামান, সাংবাদিক ইকরামুল কবির, মো. ফয়ছল আলম, নূর আহমদ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের জিএম জীবন কৃষ্ণ রায়, সোনালী ব্যাংকের জিএম মো. আশরাফউল্লাহ, জনতা ব্যাংকের ডিজিএম সন্দীপ কুমার রায়, পরিচালক আব্দুর রহমান, চন্দন সাহা, ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, মুজিবুর রহমান মিন্টু, মাউন্ট এডোরা হসপিটালের এমডি প্রফেসর ড. কে. এম. আখতারুজ্জামান, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল সিলেট অফিসের প্রধান মধু সূদন চন্দ, টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দিগেন সিংহ, ওকাস সভাপতি খালেদ আহমদ, সিনিয়র সাংবাদিক কামকামুর রাজ্জাক রুনু, সিলেট চেম্বারের সদস্যবৃন্দ, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন আইটি প্রতিষ্ঠানের মালিক ও বিনিয়োগকারীবৃন্দ।