তিনি লেখেন, ‘অবশ্যই মানুষটার সাথে আমার যথেষ্ট কারণ না থাকলে বিচ্ছেদের মতো সিদ্ধান্তে আসতাম না। কাউকে অসন্মান করে যেমন কেউ বড় হতে পারে না তেমনি আমাদের কাছের সবাই ও পরিবার জানে কেন এই সিদ্ধান্তে আসা! তার বাইরে কাউকে কোনো ধরনের ব্যাখ্যা দেয়ার কোনো দরকারই নেই!’
‘আসলে আমরা চাইও নাই কাউকে জানাতে, কিন্তু ভুয়া ‘একি করলেন শবনম ফারিয়া’ নিউজ না দেখার জন্যে আমরা জানাতে বাধ্য হই!সুতরাং প্লিজ মাথায় নেন, শেষটাও সুন্দর হতে পারে, শেষটাও সন্মান দিয়ে, ভালোবাসার সাথে শেষ হতে পারে! আমার কষ্ট/আমার অভিমান সব আমার কাছেই থাক! মনে রাখবেন, কাউকে ছোট করা আল্লাহ কখনোই পছন্দ করেন না!’ লেখেন ফারিয়া।
‘যেই মানুষটা গত ৫ বছর ধরে আমার জীবনের সাথে প্রত্যক্ষ/পরোক্ষভাবে জড়িয়ে ছিল, এতো এতো স্মৃতি যা চাইলেই মোছা যাবে না, তাকে কীভাবে ছোট করি?’ প্রশ্ন করেন তিনি।
বেসরকারি চাকরিজীবী হারুন অর রশীদ অপুর সাথে ২০১৫ সালে ফেসবুকে শবনম ফারিয়ার পরিচয়। সেখান থেকে বন্ধুত্ব ও প্রেম এবং ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে আংটি। পরের বছরের ১ ফেব্রুয়ারি জমকালো আনুষ্ঠানিকতায় বিয়ে হয় তাদের। গত শুক্রবার বিচ্ছেদপত্রে সই করেন অপু ও শবনম ফারিয়া।
এর আগে শনিবার ফেসবুকে শবনম লেখেন, ‘মানুষের জীবন নদীর মতো। কখনও জোয়ার, কখনও ভাটা। কখনও বৃষ্টিতে পানি বেড়ে যায়, শীতকালে পানি শুকিয়ে যায়। আমাদের জীবনেও এমনটা হয়! আমাদের জীবনে কিছু মানুষ আসে; কেউ কেউ স্থায়ী হয়, কেউ কেউ কিছু কারণে স্থায়িত্ব ধরে রাখতে পারে না! আমার মা সব সময় একটা কথা বলে, “আল্লাহর হুকুম ছাড়া একটা গাছের পাতাও নড়ে না, আমরা শুধু চেষ্টা করতে পারি!”
‘ঠিক সেভাবেই আমি আর অপু অনেকদিন ধরেই চেষ্টা করেছি একসাথে থাকতে! কিন্তু বিষয়টা একটা পর্যায়ে খুব কঠিন হয়ে যায়! মানুষ কি বলবে ভেবে নিজেদের ওপর একটু বেশিই টর্চার করে ফেলছিলাম আমরা! জীবনটা অনেক ছোট, এতো কষ্ট নিয়ে বেঁচে থাকার কি দরকার? এইটা ভেবে আমরা এ বছরের শুরু থেকেই সিদ্ধান্তে আসি আমরা আর একসাথে থেকে কষ্টে থাকতে চাই না! তাও বছর খানেক সময় নিয়েছি পরস্পরকে বুঝতে! ফাইনালি আল্লাহ্ যা করেন ভালোর জন্যই করেন ভেবে আমরা আমাদের প্রায় আড়াই বছরের বৈবাহিক জীবনের অবসান ঘটিয়ে আবারও ৫ বছরের পুরানো বন্ধুত্বে ফিরে গিয়েছি। বিবাহে বিচ্ছেদ হয়, কিন্তু ভালোবাসার বিচ্ছেদ নেই! বন্ধুত্বের বিচ্ছেদ নেই! যতদিন বেঁচে আছি আমাদের ভালোবাসা ও বন্ধুত্ব থাকবে! শুধুমাত্র বৈবাহিক বন্ধন থেকে আমাদের সম্পর্কের ইতি টেনে নিলাম! এ ঘটনা আমাদের জীবনের গতি হয়তো রোধ করবে, ছন্দপতন করবে কিন্তু জীবন তো থেমে থাকবে না! অপুর জন্য আমার অনেক অনেক দোয়া, ভালোবাসা আর শুভ কামনা। আমরা যে সুখের জন্য আলাদা হলাম আমরা যেন সে সুখ খুঁজে পাই। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন,’ লেখেন তিনি।
তিনি আরও লেখেন, ‘দয়া করে মিডিয়ার বিয়ে টেকে না ধরনের কথা বলে আমাদের জন্য আমাদের সহকর্মীদের ছোট করবেন না! আমরা সম্পূর্ণ পারিবারিক কারণে, পারিবারিকভাবে, পারিবারিক সম্মতিতেই বিয়ের মতো ইনস্টিটিউশন থেকে বের হয়ে এসেছি! আমাদের কখনও ভালোবাসা কিংবা বিশ্বাসের অভাব ছিল না, হবেও না! দুজন মানুষের বিবাহ বিচ্ছেদ মানে, দুইটা পরিবারের বিচ্ছেদ, অনেক স্মৃতির বিচ্ছেদ! অনেক ভালো সময়ের সাথে বিচ্ছেদ এইটা কারও জন্য সুখকর অনুভূতি না! দয়া করে মুখরোচক অদ্ভুত সংবাদ প্রকাশ করে আমাদের আর বিব্রত করবেন না! আমরা একে অন্যের ওপর সম্পূর্ণ সন্মান বজায় রাখতে চাই!’