শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শাবির অন্যতম সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘শিকড়’। অমাবস্যা রাতের মতো অন্ধকারাচ্ছন্ন নিঃশব্দ মিলনায়তনে নিশ্চুপ দর্শক অনুষ্ঠানটি দারুণভাবে উপভোগ করেন।
অনুষ্ঠানের মঞ্চে হালকা আলোর মধ্যে অপরাজেয় বাংলার ছবি এবং অন্য পাশে ‘শব্দের ঝংকারে বারুদের গন্ধ’ লেখাটি। আর তখনই পাকিস্তানিদের উদ্দেশ্যে স্বাধীন বাংলা বেতারের অনুকরণে বঙ্গবন্ধুর সেই ঘোষণা পাঠ করে ‘এবারে তোমাদের বিদায় নিতে হবে, তবে অক্ষত অবস্থায় নয়। যে রক্ত এতোদিন তোমরা নিয়েছো সে রক্ত এবার আমরা নিবো।’
এ বিষয়ে ‘শিকড়’ সভাপতি আসাদ উজ জামান শ্রাবণ ইউএনবিকে বলেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ একটা ঘটনা মাত্র নয় এর রয়েছে মহাকব্যিক ব্যঞ্জনা। আমরা বর্তমান প্রজন্ম নিজের চোখে মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি। একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়ে জন্মাবার সৌভাগ্য অর্জন করেছি। মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অস্তিত্ব দিয়েছে, ভৌগোলিক অবস্থান দিয়েছে, আত্মপ্রত্যয়ে সুদৃঢ় হওয়ার বোধ দিয়েছে। কিন্তু বর্তমান সময়ে অনেকক্ষেত্রেই মুক্তিযুদ্ধ আমাদের কাছে কেবলই একটা আনুষ্ঠানিকতা মাত্র! মুক্তিযুদ্ধের সাথে সংশ্লিষ্ট দিবসগুলো দায়সারাভাবে পালন করেই যেন আমরা স্বাধীন দেশে জন্মাবার দায় এড়াতে চাই। শিকড় তার জন্মলগ্ন থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে এবং নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ছড়িয়ে দিতে বদ্ধ পরিকর। তারই ধারাবাহিক প্রচেষ্টা হিসেবে আমাদের এবারের প্রযোজনা স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের পরিবেশনাসমূহকে কেন্দ্র করে। যার মাধ্যমে সেই উত্তাল সময়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিকদের ভূমিকা কি ছিল তার একটি চিত্র ফুটে উঠবে।
এ বিষয়ে শিকড়ের উপদেষ্টা এবং শাবি প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমাদের চেতনা এবং দেশপ্রেমের জায়গা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ। আর এই মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করতে হলে সেই সময়কার ঘটনাগুলো জানা আবশ্যক। শিকড়ের এমন আয়োজনে এমন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা কিছুটা মুহূর্ত সেই সময়গুলো অনুধাবন করতে পেরেছি। এরকম অনুষ্ঠান নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ চেনাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’