জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
ছুটিতে প্রাণহীন জাবি, ক্যাম্পাসেই ঈদ নিরাপত্তারক্ষীদের
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ছুটি হয়েছে ক্যাম্পাস। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরেছে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী, ঈদের আগের দিন চলছে শেষ মুহূর্তের ঘরে ফেরার তোড়জোড়। ফলে সবুজ-শ্যামল ক্যাম্পাসে নেই প্রাণচাঞ্চল্য; নেই রিকশার টুংটাং বেলের শব্দ, গাড়ির হর্ণের বিরক্তিকর আওয়াজ, চিরচেনা কোলাহল। স্থবিরতা নেমে এসেছে চারদিকে।
শহিদ মিনার চত্বরে শিক্ষার্থীদের জটলাও চোখে পড়ছে না। ক্যাফেটেরিয়া, লাইব্রেরিতেও কাউকে দেখা যাচ্ছে না। চিরযৌবনা ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) যেন মলিন হয়ে আছে। আবাসিক হলগুলোর ক্যান্টিন-ডাইনিংয়ে ঝুলছে তালা। বটতলার দোকানিরা তাদের দোকানের শাটার নামিয়ে কবেই বাড়ি ফিরেছে! রেইনট্রি গাছে শুধু কাকেদের ডাক শোনা যায়। খাবার না পেয়ে ক্যাম্পাসের কুকুর-বিড়ালগুলোও পাশের এলাকায় আস্তানা গেড়েছে।
সাংবাদিক সমিতির অফিসটার সামনে ধুলার আস্তরণ জমে গেছে। কলা ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে পায়চারি করছেন দুই-তিনজন নিরাপত্তারক্ষী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে কয়েকটি রিকশা অপেক্ষা করছে, যদি কেউ বের হয়—এই আশায়।
বলছিলাম জাঁকজমকের রাজধানী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) কথা। ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সংস্কৃতিতে ভরপুর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস সবসময় প্রাণচাঞ্চল্যে মুখর থাকলেও ঈদের ছুটিতে জনমানবহীন হয়ে পড়েছে।
ক্যাম্পাস ছুটি হয়েছে গত ২০ মার্চ। তারপর থেকেই ধীরে ধীরে ফাঁকা হতে শুরু করে ক্যাম্পাস। যারা টিউশনি করান, কোচিংয়ে ক্লাস নেন কিংবা অন্য কোনো পার্ট টাইম কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাদের কারও কারও এখনও বাড়ি ফেরা বাকি। এদের মধ্যে যারা বাড়ি ফিরবেন, ঈদের আগমুহূর্তে তারা ব্যাগ গোছানোর তোড়জোড় শুরু করেছেন সকাল থেকেই।
আরও পড়ুন: জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে জাবিতে হামলা: ২৮৯ শিক্ষার্থী বহিষ্কার, ৯ শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত
১৭ দিন আগে
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে জাবিতে বিক্ষোভ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্য প্রত্যাহার এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (২১ মার্চ) দুপুর সোয়া ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক-সংলগ্ন মূল ফটকের (ডেইরি গেইট) সামনে একটি প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম সদস্য সচিব ও জাবি শিক্ষার্থী জিয়াউদ্দিন আয়ানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা তীব্র আন্দোলন করে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগকে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে। হাজার হাজার ছাত্র-জনতার রক্তের দাগ লেগে আছে খুনি হাসিনার হাতে। কেউ যদি তাকে পুনর্বাসনের ন্যূনতম প্রচেষ্টা চালায় তাহলে ছাত্র-জনতা তাদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। গণঅভ্যূত্থানের মাধ্যমে যে আওয়ামী লীগকে মাইনাস করা হয়েছে, তাদের যদি কেউ পুনর্বাসনের চেষ্টা চালায় তাহলে তাদেরও মাইনাস করা হবে।
মিছিলে শিক্ষার্থীদের, ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘আওয়ামী লীগের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘হাসিনার দোসরেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ কর, করতে হবে করতে হবে’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘ভারতের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘ভারতীয় আগ্রাসন, রুঁখে দাও দিতে হবে’, ‘ভারতীয় প্রেসক্রিপশন, এই বাংলায় চলবে না’—স্লোগান দিতে শোনা যায়।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাবিতে মিছিল
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, ‘আমরা দেখেছি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটকে ধারণ করতে পারে নাই। ৫ আগস্টের পর কোনো যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্য আমাদের আবারও রাজপথে নামতে হবে—এটা আমরা কল্পনায়ও ভাবি নাই।’
‘আমরা দেখেছি, গতকাল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস বলেছেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। এই বক্তব্যকে আমরা প্রত্যাখান করছি সেইসঙ্গে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘এই সরকার বা অন্য কেউ যদি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের ন্যূনতম প্রচেষ্টা চালায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।’
গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের জাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ‘স্বৈরাচারী পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তি গত জুলাই বিপ্লবে হাজার হাজার ছাত্রজনতার প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এখনও হাজার হাজার মানুষ আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করে হাসপাতালের বেডে জীবন কাটাচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি এসব দেখছে না? তাদের কি চোখে পড়ে না? এত কিছুর পরেও তারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চালায় কার হুকুমে?’
হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, পার্শ্ববর্তী দেশের কোনো প্রেসক্রিপশন যদি এদেশে বাস্তবায়নের কোনো অপচেষ্টা চালানো হয়, তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেব।’
বাগছাসের কেন্দ্রীয় সংসদের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহবায়ক ও জাবি শিক্ষার্থী তৌহিদ সিয়াম বলেন, ‘সংগ্রামী ছাত্র-জনতা আপনারা দেখেছেন, ৩৬ দিনের দীর্ঘ আন্দোলন শেষে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এদেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের রায় দিয়েছে। স্বৈরাচারী আওয়ামী শক্তি দীর্ঘ ১৭ বছর বাংলাদেশকে একটি আবদ্ধ কারাগারে পরিণত করেছিল, কিন্তু এদেশের জনগণ পরাধীনতার শিকল ভেঙে দিয়ে খুনি হাসিনাকে লাল কার্ড দেখিয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছিল।’
তিনি বলেন, ‘কেউ যদি দিল্লি থেকে বা অন্য কোথাও থেকে প্রেসক্রিপশন নিয়ে এসে এদেশকে চালাতে চায় তাহলে তারা ভুল করবে। বাংলাদেশ কীভাবে চলবে, তা ঠিক করবে এদেশের ছাত্র-জনতা। আমরা আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের যেকোনো অপচেষ্টা রুঁখে দিতে রাজপথে সর্বদা তৎপর থাকব।’
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সাভার প্রতিনিধি জুলকারনাইন বলেন, ‘আমরা রক্ত দিতে শিখে গেছি। কীভাবে দাবি আদায় করতে হয়, তাও শিখে গেছি আমরা। কেউ যদি আমাদের চোখ রাঙায়, তাদের পাল্টা জবার দেওয়ার ভাষা আমাদের জানা আছে।’
তিনি বলেন, ‘সামরিক-বেসামরিক কোনো শক্তি যদি খুনি হাসিনাকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চালায়, তাহলে ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল শক্তিকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে তা মোকাবিলা করা হবে।’
গতকাল (বৃহস্পতিবার) ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের ব্যাপারে আমাদের কোনো পরিকল্পনা নেই।
এরপর গভীর রাতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চালের মূখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ সংক্রান্ত একটি ফেসবুক স্টাটাস দিলে, সেটি কেন্দ্র করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
২৬ দিন আগে
জুলাই অভ্যুত্থানে হামলাকারীদের পুনর্বাসনের প্রতিবাদে জাবিতে মানববন্ধন
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারীদের বিচার নিশ্চিত করা ও হামলাকারী ছাত্রলীগ কর্মীদের নানাভাবে পুনর্বাসনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দায়ী করে সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা।
বুধবার ( ৫ মার্চ) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে জাবি শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন পর্যন্ত কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি। বরং, আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদেরকে ক্যাম্পাস ছাড়া করেছে বলে মানববন্ধনে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার আহবায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের প্রোডাক্ট এই প্রশাসন— জুলাই বিপ্লবে হামলাকারী ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা আরও দেখতে পাচ্ছি, হামলাকারী সন্ত্রাসীরা হাসপাতালে বসে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।‘
তিনি আরও বলেন, ‘গত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের উপর গুলি চালানো ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী শামীম মোল্লার মৃত্যু হয়েছে পুলিশ হেফাজতে কিন্তু তার হত্যার দায় বিপ্লবীদের উপর দিয়ে তাদের ক্যাম্পাস ছাড়া করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: জাবিতে মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা, বেড়েছে ডেঙ্গু আক্রান্তের ঝুঁকি: কী ভাবছে প্রশাসন?
অতিদ্রুত হামলাকারী সন্ত্রাসীদের বিচার নিশ্চিত করা না হলে এবং তাদের পুনর্বাসন বন্ধ করা না হলে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করে হবে বলে জানান তিনি।
মানববন্ধনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার সদস্য নাহিদ হাসান ইমন বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি এই প্রশাসন জেনে বা না জেনেই গত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারী সন্ত্রাসীদের নানাভাবে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে বিপ্লবীদের ক্যাম্পাস ছাড়া করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, আপনারা যদি এমন হীন প্রচেষ্টা বন্ধ না করেন—তাহলে আপনাদেরকেও চেয়ার থেকে টেনে-হিঁচড়ে নামাতে দ্বিধা করব না।’
আরও পড়ুন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে জাবি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব জিয়াউদ্দিন আয়ান বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মদদদাতা শিক্ষকদের সাথে আঁতাত করছে। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে।’
তিনি প্রশাসনকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই আপনারা শহীদদের রক্তের উপর দিয়ে নির্বাচিত প্রশাসন। আপনারা যদি সেই শহীদদের সঙ্গে বেইমানি করেন, সন্ত্রাসীদের বিচার না করে তাদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করেন—তাহলে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে আপনাদেরও পতন ঘটানো হবে।’
৪২ দিন আগে
জাবির ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে শিক্ষার্থী-বড় বোন আটক
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষের (৫৪তম ব্যাচ) স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রে মোবাইল নিয়ে প্রবেশ ও মোবাইল দেখে লেখার অভিযোগে এক শিক্ষার্থীসহ তার বড় বোনকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জাবির ‘বি’ ইউনিটের (সমাজবিজ্ঞান অনুষদ) দ্বিতীয় শিফটের পরীক্ষা চলাকালীন সময় ঐ শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়।
আটক ওই শিক্ষার্থীর নাম পারমিতা দত্ত ভুমি (১৭) এবং তার বড় বোনের নাম নিবেদিতা দত্ত (২১)।
তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ছোট বোনের পরীক্ষা উপলক্ষে জাবিতে এসেছেন। তারা দুজন কিশোরগঞ্জ সদরের নন চন্দ্র দত্তের মেয়ে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি জানায়, সোমবার ছিলো জাবি ভর্তি পরীক্ষার শেষ দিন। ‘বি’ ইউনিটের দ্বিতীয় শিফটের পরীক্ষা চলছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ ভবনের ১৯ নম্বর কক্ষে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা দেখতে পান এক শিক্ষার্থী মোবাইল দেখে (ওএমআর) উত্তরপত্র পূরণ করছেন। পরে তার কাছে গিয়ে দেখা যায় ফোন দিয়ে প্রশ্নের ছবি তুলে বাইরে পাঠাচ্ছে এবং অপর প্রান্ত থেকে উত্তর পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরে তাকেসহ কেন্দ্রের বাইরে থাকা তার বড় বোনকেও আটক করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: জাবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে মামলা, একমঞ্চে ছাত্রদল-শিবির
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী ওই পরীক্ষার্থী নিয়মবহির্ভূতভাবে পরীক্ষার কেন্দ্রে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করে। এটা সম্পূর্ণ অন্যায়। ওই পরীক্ষার্থীকে মোবাইল ফোন দেখে ওএমআর শিট পূরণ করতে দেখে ফেলে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা। পরে তারা শৃঙ্খলা কমিটিকে খবর দিলে তারা এসে ওই শিক্ষার্থী আটক করে। তিনি তার বোনকে হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন পাঠাচ্ছিলেন ও তার বড় বোন উত্তর পাঠাচ্ছিলেন; এমনটাই স্বীকার করেছেন ওই শিক্ষার্থী।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এ বছর মোবাইল কোর্ট চালু করিনি। সেজন্য জালিয়াতি বা প্রতারণার দায়ে কোনো মামলা রুজু করতে পারিনি। তবে এটা প্রক্রিয়াধীন। সর্বশেষ তাদেরকে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আমরা মামলা করব।’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ বছর ৬টি ইউনিটে মোট ১ হাজার ৮১৪টি আসনের বিপরীতে ২ লাখ ৬২ হাজার ৪৯০টি আবেদন জমা পড়েছে। প্রতিটি আসনের বিপরীতে প্রায় ১৪৫জন শিক্ষার্থী লড়ছেন।
উল্লেখ্য, এ বছর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ সেশনের (৫৪তম ব্যাচ) স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা গত রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হয়ে আজ সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ‘বি’ ইউনিটের (সমাজবিজ্ঞান অনুষদ) পরীক্ষার মাধ্যমে শেষ হয়েছে।
৫৮ দিন আগে
জাবিতে ভর্তি পরীক্ষা শুরু আগামীকাল, মানতে হবে যেসব নির্দেশনা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের (৫৪তম ব্যাচ) স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামীকাল রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হয়ে সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত চলবে এই ভর্তি পরীক্ষা। এতে মোট আবেদন জমা পড়েছে দুই লাখ, ৬২ হাজার ৪৫০ জন। ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন ১৮১৪ জন।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) ও কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সদস্য সচিব সৈয়দ মোহাম্মদ আলী এমন তথ্য দিয়েছেন।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ‘ডি’ (জীববিজ্ঞান অনুষদ) ইউনিটের পরীক্ষা পাঁচ শিফটে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে শুধু মেয়ে শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে। পরদিন সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) একই ইউনিটের ছেলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা হবে প্রথম চার শিফটে।
একই দিনে পঞ্চম শিফটে আইবিএ-জেইউর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ছেলে-মেয়ে উভয় শিক্ষার্থী অংশ নিতে পারবে।
আগামী মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) প্রথম দুই শিফটে ‘ই’ ইউনিটের অন্তর্ভুক্ত বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম শিফটে মেয়ে শিক্ষার্থীদের এবং দ্বিতীয় শিফটে ছেলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: নানা অব্যবস্থাপনায় জাবিতে কমেছে অতিথি পাখির আগমন
একইদিন তৃতীয় শিফট থেকে পঞ্চম শিফট পর্যন্ত ‘এ’ ইউনিটে (গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদ এবং ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি) আবেদনকারী নারী শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়াও বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) পাঁচ শিফটে ‘এ’ ইউনিটে (গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদ এবং ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি) আবেদনকারী ছেলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এবং বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ছয় শিফটে ‘সি’ ইউনিটের অন্তর্ভুক্ত কলা ও মানবিক অনুষদ, আইন অনুষদ এবং তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এর মধ্যে প্রথম তিন শিফটে মেয়েদের এবং পরবর্তী তিন শিফটে ছেলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
ভর্তি পরীক্ষার শেষ দিন সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) প্রথম শিফটে ‘সি১’ ইউনিটের অন্তর্ভুক্ত নাটক ও নাট্যতত্ত্ব এবং চারুকলা বিভাগের (ছেলে-মেয়ে উভয়) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এবং পরের তিন শিফটে ‘বি’ ইউনিটের অন্তর্ভুক্ত সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এর মধ্যে প্রথম ২ শিফটে মেয়েদের এবং তৃতীয় শিফটে ছেলেদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া সি১ ইউনিটের অন্তর্ভুক্ত নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের লিখিত পরীক্ষায় (MCQ) উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে উপস্থিত থাকতে হবে এবং চারুকলা বিভাগে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক পরীক্ষা মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে।
যেসব নির্দেশনা মানতে হবে ভর্তিচ্ছুদের
ওএমআর ফরমের বৃত্ত সাধারণ কালো বলপেন দ্বারা পূরণ করতে হবে। ওএমআর ফরম পূরণে ভুল হলে উত্তরপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে। যৌক্তিক কারণ ছাড়া পরীক্ষার্থীকে অতিরিক্ত ফরম দেওয়া হবে না। ফরম ভাঁজ করা, কাটাকাটি করা, অবাঞ্ছিত দাগ দেওয়া, স্টাপলার বা পিনআপ করা এবং ফরমের ওপর পানি ফেলা যাবে না।
ভর্তি পরীক্ষার রোল নম্বর, দিনের শিফট ও প্রশ্নপত্রের সেট কোড অবশ্যই ইংরেজিতে লিখতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট ঘর যথাযথভাবে পূরণ করতে হবে। পরীক্ষা শেষে ওএমআর শিট ও প্রশ্নপত্র পরিদর্শকের কাছে জমা দিতে হবে।
ডাউনলোডকৃত প্রবেশপত্রের মাধ্যমে পরীক্ষার আসন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন পরীক্ষার্থী। পরীক্ষা শুরু হওয়ার নির্ধারিত সময়ের ন্যূনতম ১০ মিনিট আগে তাদের পরীক্ষা কেন্দ্রের নির্ধারিত কক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে।
পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা কেন্দ্রে ব্যাগ, বইপত্র, মুঠোফোন, ঘড়ি, ক্যালকুলেটর কিংবা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না। সময় দেখার জন্য পরীক্ষার হলে ঘড়ির ব্যবস্থা থাকবে।
পরীক্ষার্থী ও পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা ভিন্ন অন্য কেউ পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। ভর্তি পরীক্ষার ফল পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর থেকে সর্বোচ্চ সাতদিনের মধ্যে ju-admission.org ওয়েবসাইট থেকে জানা যাবে।
ভর্তি পরীক্ষার সময় পরীক্ষার্থীকে মাধ্যমিক পরীক্ষার মূল রেজিস্ট্রেশন কার্ড এবং ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র অবশ্যই সঙ্গে আনতে হবে।
আরও পড়ুন: জাকসু নির্বাচন আগামী ২১ মের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হবে: জাবি উপাচার্য
ঢাকা শহর থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ৩২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এ জন্য যেসব পরীক্ষার্থী ঢাকা শহর বা দূরবর্তী অন্য কোনো স্থান থেকে এসে পরীক্ষা দেবে, তাদের যানজটসহ অপ্রত্যাশিত দুর্ভোগ এড়ানোর জন্য পর্যাপ্ত সময় হাতে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বাসে পরীক্ষার্থী বা তাদের অভিভাবকেরা আসা-যাওয়া করার কোনো সুযোগ নেই বলে জানানো হয়েছে।
৬৭ দিন আগে
জাকসু নির্বাচন আগামী ২১ মের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হবে: জাবি উপাচার্য
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন চলতি বছরের ২১ মের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের এ কথা জানান তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও জাকসুর সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতেও এ তথ্য জানানো হয়।
উপাচার্য জানান, জাকসু নির্বাচন ২০২৫ সালের মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে (২১ মের মধ্যে) অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন জাকসুর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচনের ন্যূনতম ২১ দিন আগে অর্থাৎ ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করবে।
আরও পড়ুন: জাবিতে শেখ মুজিবের ম্যুরাল ও গ্রাফিতি মুছে দিল শিক্ষার্থীরা
এসময় উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, এর আগে আমাদের যে আশ্বাস দিয়েছিলেন, দলীয় প্রেসার হোক, কোন সংগঠনের প্রেসার হোক কিংবা কিছু শিক্ষকদের অসহযোগিতা হোক; আপনারা সেই কথা রাখতে পারেননি, আমরা চাই আজকের আশ্বাসই সবশেষ আশ্বাস হোক।
গত ৩০ ডিসেম্বর জাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রোডম্যাপ অনুযায়ী ১ ফেব্রুয়ারি তফসিল ঘোষণার তারিখ থাকলেও ছাত্রদলের সংস্কারের দাবির মুখে তা হয়নি।
৬৮ দিন আগে
নানা অব্যবস্থাপনায় জাবিতে কমেছে অতিথি পাখির আগমন
শীতের আড়মোড়া ভাঙতেই কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে জলাশয়ের পানিতে ভেসে থাকা শাপলা পাতার ওপর অতিথি পাখির জলকেলি, দলবেঁধে উড়ে যাওয়া, আবার ফিরে এসে পানিতে বসা, জলাশয়ের বুক চিরে এক পাশ থেকে আরেক পাশে ছোটাছুটি করা ও মনোমুগ্ধকর কিচিরমিচির শব্দ— শীতকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লেক ও জলাশয়ের চিত্র এমনই দেখা যেত। কিন্তু এখন যেন সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র। জাবিতে কমতে শুরু করেছে অতিথি পাখির সংখ্যা।
গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশ হওয়ায় শীতকালে দেশের বিভিন্ন জেলায় শীতপ্রধান দেশগুলো থেকে অতিথি পাখিরা আসত। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৬ সালে জাবির লেকগুলোতে প্রথমবারের মতো অতিথি পাখি আসে। এরপর ২০১৪ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে অতিথি পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করে তৎকালীন সরকার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো প্রশাসনিক ভবন-সংলগ্ন লেক, বন্যপ্রাণী উদ্ধার কেন্দ্র (ওয়ালইড লাইফ রেসকিউ সেন্টার), জাহানারা ইমাম ও প্রীতিলতা হল-সংলগ্ন লেক ও পরিবহন চত্বরের পেছনের লেকগুলো অতিথি পাখির মূল অভয়ারণ্য। এখন লেকগুলোতে পাখির কিচিরমিচির শব্দ মুখরিত ক্যাম্পাস। তবে দুই তিন বছর আগের তুলনায় তা আশঙ্কাজনক হারে কমেছে।
অতিথি পাখি আসার আগে তাদের সুস্থ ও সুন্দর আবাসস্থল নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজ দায়িত্বে অতিথি পাখির অভয়ারণ্য হিসাবে পরিচিত লেকগুলো পরিষ্কার করে থাকে। তাদের নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিতে প্রশাসন ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ক্যাম্পাসজুড়ে বিভিন্ন সচেতনতা ও তথ্যমূলক ব্যানার, ফেস্টুন টানায়। এ বছরও এসব উদ্যোগ নিতে দেখা গেছে সংশ্লিষ্টদের।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় নির্বিচারে অতিথি পাখি শিকার, বিক্রি হচ্ছে বাজারে
অতিথি পাখিদের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দেয় জলাশয়গুলোতে ফোটা লাল শাপলা। লাল শাপলার চাদরে পাখিদের বিচরণের দৃশ্য মন কেড়ে নেয় দর্শনার্থীদের।
প্রতি বছর শীতপ্রধান দেশ মঙ্গোলিয়া, নেপাল, সাইবেরিয়া ও ভারত থেকে হাজার হাজার অতিথি পাখি আমাদের এই নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে আসে। অক্টোবরের শেষ ও নভেম্বরের শুরুর দিকে দেশে আসতে শুরু করে পাখিরা। বাংলাদেশে আসা অতিথি পাখিদের একটি বড় অংশ আশ্রয় নেয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। প্রতিবছর শীত মৌসুমে ক্যাম্পাসে প্রায় দুই শতাধিক প্রজাতির পাখি দেখা যায়। এদের মধ্যে সরালি, পচার্ড, ফ্লাইফেচার, গার্গেনি, ছোট জিরিয়া, মুরগ্যাধি, কোম্বডাক, পাতারি অন্যতম। এ ছাড়াও আছে খঞ্জনা, পান্তামুখী, নর্থগিরিয়া, কমনচিল, কটনচিল, পাতিবাটান, পান্তামুখী, বুটি হাঁস, বৈকাল ইত্যাদি প্রজাতির পাখি। তবে জলাশয়গুলোয় পাতি সরালির বিচরণই বেশি লক্ষণীয়।
অতিথি পাখি দর্শনের সবচেয়ে ভালো সময় হচ্ছে ভোরে ও সূর্য ডোবার আগে। এ সময় পাখিরা ঝাঁক বেঁধে উড়ে বেড়ায় জলাশয়ের ওপর। নিভু নিভু সূর্যের আলো, শীতল আবহাওয়ার সঙ্গে শত শত পাখির কিচিরমিচির শব্দে এ সময়ে এক মনোরম পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
অতিথি পাখির অবাধ বিচরণ ও সৌন্দর্য উপভোগ করতে বাইরের অনেক দর্শনার্থী বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আসেন। বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোতে অতিথি পাখি দেখতে ছুটে আসেন তারা।
ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসা হৃদয় হাসান নামের এক দর্শনার্থী বলেন, ‘আমি প্রায় প্রতি বছরই আপনাদের ক্যাম্পাসে আসি অতিথি পাখি দেখতে। ঢাকা শহরে এই সুযোগটি নেই। বাসার ছোট ছেলেমেয়েদের এনেছি এবার। তারাও এই সময়টা খুব উপভোগ করছে।’
তবে উদ্বেগের বিষয় হলো, আগের তুলনায় গত কয়েক বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি পাখির আনাগোনা অনেকটাই কমে গিয়েছে। এর মূল কারণ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের জলাশয়গুলোর পাখিদের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাওয়াকে দায়ী করেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব জলাশয়ে পাখিরা থাকে, সেগুলো এখন তাদের বসবাস-উপযোগী নয়। জলাশয়গুলোর আশপাশে অধিক লোকসমাগম ও শব্দদূষণই এর প্রধান কারণ।’
‘পরিবহন চত্বরের পেছনে যে লেক, সেই লেকের ধারে সারা দিনই লোকজন থাকে। এর জন্য পাখিরা ওই লেকে বসতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। তাছাড়া অন্যান্য লেকেও এবার পাখির সংখ্যা খুবই কম।’
ড. কামরুল হাসান বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পাসের সবচেয়ে বড় যে লেক, সেটি হচ্ছে ওয়াইল্ড লাইফ সেন্টার-সংলগ্ন লেকটি। সংরক্ষিত এলাকা হওয়ায় ওই লেকে পাখির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। তবে লেকটি এখন পানা দিয়ে ভরে গেছে। পরিষ্কার না হওয়ায় পাখিরা পুরো লেকজুড়ে বসতে পারে না। অল্প কিছু অংশে পাখি বসে। তবে এবার প্রশাসন লেকটি পরিষ্কার করেনি। আমি নিজে প্রশাসনকে এ ব্যাপারে কয়েকবার অবগত করেছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অতিথি পাখিদের নিরাপদ আবাসস্থল নিশ্চিত না করা হলে পাখির সংখ্যা প্রতিনিয়ত কমতে থাকবে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া এবং জাহাঙ্গীরনগরের অতিথি পাখি তথা সকল বন্যপ্রাণীর জন্য সুষ্ঠু প্রাকৃতিক পরিবেশ নিশ্চিত করা।
আরও পড়ুন: নড়াইলের অরুণিমায় অতিথি পাখি দেখতে পর্যটকদের ভিড়
পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী অরিত্র সাত্তার বলেন, ‘এ বছর গতবারের তুলনায় পাখি বেশ কম এসেছে। আটটি লেকের মধ্যে মাত্র দুটিতে পাখি বসতে দেখা গিয়েছে, যার মধ্যে অধিকাংশই পাতি সরালি। ডব্লিউআরসি-সংলগ্ন লেক বাদে, অপর একটি লেকে পাখি বসলেও মাত্র দুই হাজারের কাছাকাছি পর্যবেক্ষণ করা গিয়েছে । অধিকাংশ লেক কচুরিপানায় পরিপূর্ণ হওয়ায় পাখিরা সেখানে বসতে চায় না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকেই শুনেছি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অতিথি পাখিদের অভয়ারণ্য, কিন্তু ক্যাম্পাসে এসে দেখছি উল্টো চিত্র। আগের মতো আর পাখি নাই। জীববৈচিত্র্য আজ হুমকির মুখে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, ‘অতিথি পাখির সংখ্যা আশংকাজনক হারে কমে যাচ্ছে— এ ব্যাপারে আমরা অবগত। কিন্তু প্রশাসনের উচ্চ স্তরের সদিচ্ছার অভাবের কারণেই দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ লক্ষ করা যাচ্ছে না।’
অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ, গাছ কাটা, লেক ভরাট ও পরিষ্কার না করাসহ আরও কিছু সমস্যা আছে। এগুলো সমাধান করতে পারলেই অতিথি পাখির আগমন আবারও বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘যেসব লেক পরিষ্কার করা হয়েছে সেখানে আবার স্থানীয় জলজ উদ্ভিদের পরিমাণ কম হওয়ায় বুনো হাঁসগুলো বসছে না, যদিও মাছ শিকারি পাখিগুলো, যেমন— পানকৌড়ি, সাপপাখি, মেটে মাথা কুড়া ঈগল ইত্যাদি এখানে পর্যবেক্ষণ করা গিয়েছে।’
প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল এইচ খান বলেন, ‘আসলে এটা শুধু আমাদের ক্যাম্পাসের সমস্যা নয়, পুরো দেশেই বর্তমানে এই চিত্র দেখা যাচ্ছে। তবে আমাদের জাবিতে যে বিষয়টা, পাখির আবাসস্থল লেকগুলো ঠিক আছে। তবে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা বহুতল ভবন এবং এগুলোর আলো পাখির আবস্থল ক্ষতিগ্রস্ত করছে। কেননা পাখিদের বিচরণ স্বভাবতই রাতে বা ভোরবেলায় বেশি হয়ে থাকে।’
‘আমরা প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে গত ৩ জানুয়ারি পাখি মেলার আয়োজন করে দেশবাসীকে আসলে পাখি আবাসস্থল সংরক্ষণ আর পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার মেসেজটাই দেওয়ার চেষ্টা করেছি।’
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলম ইউএনবিকে বলেন, ‘পাখি কমে যাওয়ার জন্য বেশকিছু কারণ রয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে উঁচু উচু ভবন নির্মাণ, যা পাখিদের বিচরণে সমস্যার সৃষ্টি করে। এ ছাড়াও রয়েছে কোলাহলপূর্ণ পরিবেশ (অতিরিক্ত যানবাহন থেকে তৈরি শব্দদূষণ) ও পাখির খাদ্য সংকট। পাখি আসলে ছোট ছোট মাছ খেয়ে থাকে, কিন্তু এই খাদ্যের অভাবে পাখির সংখ্যা কমে যেতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের পক্ষ থেকে উল্লেখযোগ্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আপনারা দেখবেন যে, পুকুরগুলো পরিষ্কার করে প্রতিটি পুকুরে পাখির বসার জন্য নির্দিষ্ট প্লাটফর্ম তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। লেক সংস্কার করেছি আট লাখ টাকা ব্যয়ে। এছাড়া আগে পুকুরগুলো লিজ দেওয়া হতো, কিন্তু বর্তমানে পাখির খাদ্যের কথা চিন্তা করে আর লিজ দেওয়া হচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘শব্দদূষণ রোধে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এ ছাড়াও আমরা বিবেচনায় রেখেছি, কীভাবে পাখির আগমন বাড়ানো যায়। সে ব্যাপারে আরও জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
বাংলাদেশে আবহমান জীববৈচিত্র্যের এক অপরুপ সৌন্দর্য এই অতিথি পাখির আগমন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সেই ঐতিহ্য ধরে রেখেছিল অনেক আগে থেকেই। কিন্তু নানা অব্যবস্থাপনায় সেই অতিথি পাখি জাহাঙ্গীরনগর থেকে সরে যাচ্ছে। এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে—এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
৬৯ দিন আগে
পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে জাবিতে এবার আমৃত্যু গণঅনশন
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে এবার আমৃত্যু গণঅনশন শুরু করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার নেতাকর্মীরা।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে তারা এ কর্মসূচি শুরু করেন।
এদিকে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখা।
অনশনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে লড়াইয়ের মূলমন্ত্র ছিল বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি বাতিল ও যৌক্তিক সংস্কার করা। সেজন্য অনেককে রক্ত দিতে হয়েছে। কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের পর সেই কোটা নিয়ে আবারও অনশনে বসতে হচ্ছে যা হতাশা ও লজ্জার বিষয়।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জাবি উপাচার্যের সাক্ষাৎ, পরামর্শ চাইলন জাকসু নির্বাচনের বিষয়ে
তাদের দাবি, ভর্তি পরীক্ষায় অযৌক্তিক পোষ্য কোটার জন্য বঞ্চিত হচ্ছে গরীব কৃষক ও শ্রমিকের সন্তান। তাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে চিরতরে অযৌক্তিক পোষ্য কোটার কলঙ্ক থেকে মুক্ত করার জন্য আমাদের আমৃত্যু অনশনে বসা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদ হাসান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি রয়েছে, তা গোড়া থেকে উপড়ে দিতে আমরা অনশনে বসেছি। ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে আমাদের প্রাণের দাবি ছিল—মেধা দিয়েই আমাদের মূল্য যাচাই হবে, কোনো কোটা দিয়ে নয়। কিন্তু অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে এমন অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি জাবিতে বিদ্যমান থাকা আমাদের জন্য লজ্জার। এমনকি আমাদের ভাইবোনের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা প্রশাসনের জন্যও লজ্জার। অযৌক্তিক পোষ্য কোটা বাতিল না হলে আমাদের কর্মসূচি চলবে।’
সংগঠক মোহাম্মদ রায়হান বলেন, ‘জুলাইয়ে কোটা পদ্ধতি বাতিলের জন্য আবু সাইদ, মুগ্ধসহ অসংখ্য ভাইবোন শহিদ হয়েছেন। এত রক্ত কোটা পদ্ধতি বাতিলের জন্য দেওয়া হলো, এরপরও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অযৌক্তিক পোষ্য কোটা রয়ে গেছে। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার।’
আরও পড়ুন: জাবিতে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি
অনশনে বসা শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান বলেন, ‘পৌষ্য কোটার মতো বৈষম্য আর নেই। আমরা বৈষম্যহীন এক নতুন বাংলাদেশের জন্য জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছি। অথচ মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য গলার কাঁটা নামক পোষ্য কোটা চালু রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে, যা গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যত্যয় ঘটায়।’
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার সদস্যসচিব তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও অযৌক্তিক পোষ্য কোটা বিদ্যমান। আমরা দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের কাছে এই পোষ্য কোটা সম্পূর্ণরূপে বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছি। যেহেতু এই কোটার কোনো যৌক্তিকতা নেই, সেহেতু এটি সংস্কারের প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না; এটি সম্পূর্ণরূপে বাতিল করতে হবে।’
৭৩ দিন আগে
জাবিতে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা ‘অযৌক্তিক’ অ্যাখ্যা দিয়ে তা বাতিলের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে জাবির নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার সদস্য সচিব তৌহিদ সিয়াম বলেন, ‘পোষ্য কোটা চিরতরের জন্য বাতিল করতে হবে। জাবির শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অন্তত একটা চাকরির ব্যবস্থা আছে। কিন্তু জাবিতে পড়তে আসা এমন হাজারো শিক্ষার্থী আছে, যাদের বাবা কৃষক বা শ্রমিক। তাহলে তাদের সঙ্গে সব থেকে বড় বৈষম্য করছে প্রশাসন।’
অতি দ্রুত জাবির ভর্তি পরীক্ষা থেকে এই বৈষম্যমূলক পোষ্য কোটা বাতিল করতে হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জাবি উপাচার্যের সাক্ষাৎ, পরামর্শ চাইলন জাকসু নির্বাচনের বিষয়ে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় নূন্যতম নম্বর তুলেই একজন পোষ্য ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে। অথচ দেশের কৃষক-শ্রমিকদের সন্তানরাও মেধার ভিত্তিতে ভর্তি হচ্ছে। তাই আমরা মনে করি, পোষ্য কোটা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বৈষম্য তৈরি করছে।’
তিনি বলেন, ‘বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের লক্ষ্যে সংগঠিত গণঅভ্যুত্থানের পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পোষ্য কোটা নামের কোনো কোটা থাকতে পারে না। দ্রুত জাবির ভর্তি পরীক্ষায় অযৌক্তিক পোষ্য কোটা বাতিল করতে হবে। অন্যথায় সচেতন শিক্ষার্থীদের নিয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’
এ সময় আরও বক্তব্য দেন ছাত্র অধিকার পরিষদ, জাবি শাখার সদস্য সচিব ইকবাল হোসাইন, সংস্কার আন্দোলনের মুখপাত্র নাজিরুল ইসলাম প্রমুখ।
৭৭ দিন আগে
কোটা আন্দোলন: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষে উত্তাল এক রাত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর সোমবার দিবাগত রাতে সহিংস হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। বহিরাগতদের নিয়ে দুই দফায় হামলা চালায় তারা। পরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ক্যাম্পাস।
এর আগে ছাত্রলীগের হামলার শঙ্কায় উপাচার্যের বাসভবনে আশ্রয় নেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। সেখানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হামলার শিকার হতে হয় তাদের। পরে বিভিন্ন হল থেকে শত শত শিক্ষার্থী এসে হামলাকারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিতাড়িত করে।
সোমবার দিবাগত রাত সোয়া ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, রাত ১২টার পরপর তিন শতাধিক কর্মী ও বহিরাগতদের নিয়ে প্রথম হামলা চালায় ছাত্রলীগ। হেলমেট পরে ধারালো অস্ত্র নিয়ে আসে তারা।
২৭৫ দিন আগে