সরেজমিনে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কামারখালী ইউনিয়নের মচলন্দপুর বালুমহাল এবং ডুমাইন ইউনিয়নের ডুমাইন বালুমহাল ঘুরে দেখা যায়, মধুমতি নদীর উজান ও ভাটিতে উভয় পাড় থেকেই দিন-রাত বিরতিহীনভাবে বালু কেটে নেয়া হচ্ছে।
দুই জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় বালু মহালের নির্ধারিত এলাকা ছাড়িয়ে অনেক বাইরে গিয়ে মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর উপজেলার নাকোল ইউনিয়নের রাজধরপুর গ্রমের সীমানায় ঢুকে পড়েছে বালু তোলার মেশিন।
ফলে রাজধরপুরে মধুমতির তীরে অবস্থিত ৪৮ কেভি বিদ্যুৎ সঞ্চালন টাওয়ার যা মাগুরার সাথে জাতীয় গ্রীডে ফরিদপুরকে সংযুক্ত করেছে যে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন, সেটিও হুমকির মুখে পড়েছে। পাশাপাশি ঢাকা বিভাগের সাথে খুলনা বিভাগের অন্যতম সংযোগস্থল জনগুরুত্বপূর্ণ গড়াই সেতুর কয়েকটি পিলারও রয়েছে হুমকিতে।
অপরদিকে মচলন্দপুর বালুমহাল থেকে অব্যাহতভাবে বালু উত্তোলন করায় নদীর অপর পাড়ের বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের বাড়ি যাওয়ার একমাত্র সড়কটিও ভাঙনের কবলে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড গত কয়েক বছর সড়কটিতে অস্থায়ী মেরামত কাজ করলেও নদীতে ড্রেজার লাগিয়ে বালু উত্তোলন করায় সেই অস্থায়ী সংস্কার কাজও ও টেকানো যাচ্ছে না।
ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রাজস্ব বিভাগ সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরে ডুমাইন বালুমহালের ২ দশমিক ৪৩ একর জায়গা ১১ লাখ টাকায় এবং মচলন্দপুর বালুমহালের ৩১ একর জায়গা ৩১ লাখ টাকায় ইজারা দেয়া হয় মাগুরা জেলার জৈনক আলীয়ার রহমানকে।
এ প্রসঙ্গে ইজারাদার আলীয়ার রহমান বলেন, ডুমাইন বালুমহালে বেশির ভাগই মাটি, সেখানে বালু নেই বললেই চলে। সেজন্য মাগুরা জেলা প্রশাসন থেকে ইজারা নিয়ে রাজধরপুর থেকে বালু তোলা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এই বালু তোলায় বিদ্যুতের টাওয়ার বা ব্রীজের পিলার ক্ষতি হচ্ছে না। অপরদিকে মচলন্দপুর বালু মহাল সম্পর্কে এই ইজারাদার বলেন, বালু তোলায় নদীর অপর পাড়ের রাস্তা ক্ষতি হচ্ছে এটা ঠিক, কিন্তু এটা জেনেও ফরিদপুরের প্রশাসন কেন প্রতিবছর এটি ইজারা দিচ্ছে উল্টো প্রশ্ন তোলেন তিনি।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া বলেন, সরকারি বালুমহাল দুটির নির্ধারিত সীমানার বাইরে যত্রতত্র থেকে বলু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে শিগগিরই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।