‘মেইড ইন জিনজিরার’ এসব প্রসাধনী পুরান ঢাকার চকবাজারের চম্পাতলী ও চুড়িহাট্টার বিভিন্ন গুদামে রেখে রাজধানীসহ দেশের মফস্বল এলাকায় বাজারজাত করা হচ্ছে। পাইকারিভাবে কম দামে কিনে আসল হিসেবে চড়া দামে বিক্রির সুযোগ থাকায় নামীদামি মার্কেটসহ সব জায়গায় এসব নকল ও ভেজাল পণ্যের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা।
ভেজাল ও নকলবিরোধী অভিযানে র্যাব প্রায়ই কেরানীগঞ্জের নকল প্রসাধনীর কারখানা মালিকেদের জেল-জরিমানা করলেও সেগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধ করা যাচ্ছে না। দুই মাস পর পর এসব কারখানা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে ফেলা হয়। সেই সাথে বাসাবাড়িতেও প্রসাধনী তৈরির কাজ চলে।
২৪ ফেব্রুয়ারি র্যাব-১০-এর ভ্রাম্যমাণ আদালত কেরানীগঞ্জের নেকরোজবাগ ও পটকাজোরে হাবিবুর রহমানের কারখানাসহ তিনটি কারখানায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে দুই লাখ জরিমানা ও দুই মাসের সাজা দেয়। পাশাপাশি কারখানা তিনটি সিলগালা করে দেয়া হয়।

২৮ ফেব্রুয়ারি বাবুবাজার সেতুর কাছে যানজটে আটকে থাকা একটি প্রাইভেটকারে দেখা যায় যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ব্র্যান্ড ডুয়েট’র পারফিউম বহন করা হচ্ছে। গাড়ির চালক আক্তার জানান, এসব পণ্যের মালিক কেরানীগঞ্জের আনোয়ার সিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন। তিনি এ ধরনের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রসাধনী তৈরি করেন।
আক্তার আরও জানান, তাদের পণ্য চকবাজারের চম্পাতলী ও চক মার্কেটের গুদামে রেখে বাজারজাত করা হয় এবং ম্যানেজার ইসমাইল পাইকারদের চাহিদা ও অর্ডার অনুযায়ী সরবরাহ দেন।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করার জন্য ইসমাইলের ফোনে কল দেয়া হলেও তিনি তা ধরেননি। পরে গাড়িচালক আক্তারের ফোন থেকে কল করা হলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, তাদের ডুয়েট পারফিউমের পাশাপাশি সব ধরনের পণ্য উৎপাদনের সনদ আছে। সেই সাথে তিনি পুলিশের সাথে বন্ধুত্বের পরিচয় দিয়ে এ সাংবাদিককে দেখে নেয়ার হুমকিও দেন।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহে এলিদ মাইনুল আমিন বলেন, তার প্রশাসন ও র্যাব যৌথভাবে কয়েকদিন পরপর নকল প্রসাধনী ও পণ্য তৈরির কারখানায় অভিযান চালিয়ে জেল-জরিমানা করে। এ রকম কোনো কারখানার সন্ধান পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।