আজ ২২ মে; আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমি সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর সংরক্ষণের লক্ষ্যে একটি নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার।
গত মঙ্গলবার (১৩ মে) ঢাকার একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘কমিউনিটি-ভিত্তিক টাঙ্গুয়ার হাওর জলাভূমি ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক পাঁচ বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়।
৪০ লাখ ৫০ হাজার ডলার অর্থায়নে পরিচালিত এই প্রকল্পটি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়ন করবে পরিবেশ অধিদপ্তর। আর এতে অর্থায়ন করছে পরিবেশ সংরক্ষণে আন্তর্জাতিক অর্থায়নকারী সংস্থা গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি (জিইএফ)।
এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে টাঙ্গুয়ার হাওরের জলাভূমি ও বাস্তুতন্ত্রের টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা, জলাবন ও জলজ বাসস্থান পুনরুদ্ধার এবং পরিবেশবান্ধব বিকল্প জীবিকার সুযোগ সৃষ্টি করা।
আরও পড়ুন: পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে নদ-নদীর পানি বাড়ছে, শেরপুরে গ্রীষ্মেই বন্যার আশঙ্কা
প্রকল্প উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন, ‘কমিউনিটিকে ক্ষমতায়ন করাই পরিবেশগত স্থায়িত্বের চাবিকাঠি। টাঙ্গুয়ার হাওর শুধু সুনামগঞ্জের সম্পদ নয়, এটি আমাদের সবার। স্থানীয় প্রজ্ঞা ও বিজ্ঞানের সমন্বয়ে এই প্রকল্প বিশ্বে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের একটি মডেল হিসেবে কাজ করতে পারে।’
এই প্রকল্পে অর্থায়ন করায় গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটিকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জিইএফের অব্যাহত সহায়তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইউএনডিপি বাংলাদেশের রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ স্টেফান লিলার বলেন, ‘গত কয়েক বছরে ইউএনডিপি জাতীয় অংশীদারদের সঙ্গে মিলিতভাবে জিইএফের সহায়তায় ৩৫০ কোটি ডলারেরও বেশি উন্নয়ন সহায়তা এনেছে, যা বাংলাদেশের পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন অগ্রাধিকারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘টাঙ্গুয়ার হাওরের এই নতুন প্রকল্প পূর্ববর্তী সাফল্যের ভিত্তিতে এগিয়ে যাবে এবং সরকার, কমিউনিটি, সুশীল সমাজ ও বেসরকারি খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।’
স্টেফান লিলার আরও বলেন, ‘এই প্রকল্পে স্থানীয় বাস্তবতাকে গুরুত্ব দিয়ে ঝুঁকি-বিবেচনায় নেওয়া সংরক্ষণ পরিকল্পনা, অর্থনৈতিক মূল্যায়ন ও স্কেলযোগ্য প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান অন্তর্ভুক্ত থাকবে।’
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে স্থানীয় জ্ঞানের অন্তর্ভুক্তি এবং জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া।