স্থানীয় দখলদাররা নদীর পাড় দখলে রাখায় মাটি কাটতে গিয়ে প্রতিনিয়ত বিপাকে পড়ছে কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেড কর্তৃপক্ষ। এর ফলে কাজ সম্পন্ন করতে ব্যয় হচ্ছে অতিরিক্ত সময়।
জানা যায়, ঐতিহ্যবাহী তিতাস নদীর উৎপত্তি মেঘনা নদী থেকে। শত শত মাঝিমাল্লা ও জেলের জীবিকা নির্বাহ এবং হাজার হাজার একর কৃষি জমির সেচের একমাত্র উৎস এই তিতাস ও বুড়ি নদী।
ম্যাপে এ নদীর কোনো কোনো অংশের দৈর্ঘ্য ৭০০ ফুট থেকে এক হাজার ফুট পাওয়া গেলেও, উজানের পাহাড়ি ঢলে নেমে আসা পলি জমে নদীর পূর্ব তীরে চর জেগে ওঠায় সেটি এখন খালে পরিণত হয়েছে। এরপরও ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ভৈরব, নরসিংদীতে ৪০টি লঞ্চ, শতাধিক স্পিডবোট, শত শত কার্গো ও হাজারো ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলাচল করে নদী দুটিতে।
নাব্যতা সঙ্কট ও প্রভাবশালীদের দখল থেকে উদ্ধার করে তিতাস এবং বুড়ি নদীর অস্তিত্ব রক্ষায় অভ্যন্তরীণ নৌপথে ‘ক্যাপিটাল ড্রেজিং নৌপথ’ শীর্ষক প্রকল্পে নবীনগর থেকে কসবার কুটি বাজার পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার নৌপথ খননের উদ্যোগ নেয়া হয়।
সেই লক্ষ্যে নদী ১৮০ থেকে ১২০ ফুট প্রস্থ আর ১২ ফুট গভীর করার জন্য ২৬ কোটি ৬৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালের ৪ ডিসেম্বর থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেডের মাধ্যমে ড্রেজিং কাজ শুরু হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় নদীর ম্যাপ দেখে সীমানা নির্ধারণ করে খনন কাজ করতে গিয়ে বেশ কিছু মামলায় পড়তে হয়েছে কাজের অনুমতি পাওয়া ড্রেজার মালিক ও সেখানকার শ্রমিকদের।
গত ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে ২৪ কিলোমিটার নদী খনন কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, এখন পর্যন্ত কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি।
কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেডের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মো. উজ্জ্বল মিয়া বলেন, স্থানীয়রা নদী পাড়ের জমির মালিকানা দাবি করে হামলা-মামলা করায় খনন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া ডাইক তৈরি, পাইপ লাগানো ও মেকানিক্যাল কিছু সমস্যার কারণেও কাজে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।
সরকারের চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের আগে নদী খনন কাজ শেষ হবে এবং প্রয়োজনে আরও ড্রেজার আনা হবে বলে জানান তিনি।
এছাড়া নদী খনন কাজে এলাকাবাসীকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে, খনন কাজের কোন অনিয়মের বিষয়ে জানালে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুম।