সংশ্লিষ্টরা জানান, স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো গোমতী হয়ে পণ্য গেল ত্রিপুরায়। নৌপথে দুদেশের ব্যবসা সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে গত ৫ সেপ্টেম্বর দাউদকান্দি থেকে সিমেন্ট বোঝাই একটি কার্গো ত্রিপুরার সোনামুড়ায় প্রবেশ করে। কিন্তু ড্রেজিং না হওয়ায় নাব্যতা সংকটের কারণে গোমতী ভারী পণ্যবাহী নৌযান চলাচলের উপযোগী নয়। তাছাড়া এ নদীর ওপর কম উচ্চতার ১৮টি সড়ক সেতু ও দুটি রেলসেতু রয়েছে, যা বড় নৌযান চলাচলে বাধার কারণ হতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী জহির উদ্দিন আহমেদ বলেন, গোমতী নদীর পানি প্রবাহ সারা বছর এক রকম থাকে না। বর্ষা মৌসুমে এখানে প্রায় ৩ থেকে ৪ মিটার পানি হয়, কিন্তু শীত মৌসুমে কোথাও কোথাও ১ মিটার পানি থাকে। ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য এটাকে যদি সারা বছর নৌ চলাচলের উপযোগী করতে হয় তাহলে পুরো নদীকে পুনঃখননের আওতায় আনতে হবে।
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক নির্মল পাল বলেন, ‘নৌপথে আমদানি-রপ্তানি শুরু হলে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে, এখানকার ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন। কারণ আমাদের দেশ থেকে বিদেশে আরও পণ্য রপ্তানির সুযোগ তৈরি হবে, আমরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করব। তবে গোমতীর পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পেলেই নৌপথে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে। এতে গোমতীর ওপর নির্ভরশীল কৃষিতেও আমূল পরিবর্তন আসবে।’
গোমতী নদীপথে পরীক্ষামূলকভাবে কার্গো পরিচালনার কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক বলেন, ‘১২ থেকে ১৪টি স্থানে পলি জমে নাব্যতায় সংকট সৃষ্টি হওয়ায় নৌযানটি আটকে যায়। এ ট্রায়াল রানের মাধ্যমে আমরা সমস্যা চিহ্নিত করতে পেরেছি। কোথায় কম নাব্যতা রয়েছে, কোথায় সেতুর কম উচ্চতা রয়েছে তা নিয়ে আমাদের চিন্তা ভাবনা করতে হবে। গোমতী নদীর ড্রেজিংয়ের ব্যাপারে আমাদের প্রকল্প নেয়া হয়েছে। তা অনুমোদন পেলেই নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি করে আরও বেশি পরিমাণ মালামাল কীভাবে নিয়ে যাওয়া যায় তার ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভারত সরকার এ নৌপথে বাণিজ্যের জন্য বেশ আগ্রহী। বিবিরবাজার স্থলবন্দরের পাশে নৌবন্দর হলে আন্তসীমান্ত বাণিজ্যে বিশেষ সহায়ক হবে।’