খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার রুদাঘরা ইউনিয়নের চহেড়া গ্রামে অবস্থিত মেসার্স সেতু ব্রিকস-৪ ইটভাটার পরিবেশগত ছাড়পত্রের মেয়াদ গত ২০২১ সালের ৭ জুলাই শেষ হলেও ভাটাটি চালিয়ে যাচ্ছে মালিকপক্ষ। যদিও আইন অনুযায়ী পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া ইটভাটা পরিচালনা করার কোনো সুযোগ নেই।
পরিবেশ ছাড়পত্র বিহীন ইটভাটাটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এলাকাবাসী একাধিকবার পরিবেশ অধিদপ্তর, খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়, জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার খুলনা বরাবর আবেদন করলেও এখনো এর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য থেকে জানা যায়, ভাটাটির পরিবেশ ছাড়পত্রের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে ভাটা মালিক কর্তৃক ২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বর ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু ভাটাটি ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন মোতাবেক অবস্থান অগ্রহণযোগ্য বিবেচিত হওয়ায় এর যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ পূর্বক গ্রহণযোগ্য স্থানে স্থানান্তরের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর, খুলনা জেলা কার্যালয় কর্তৃক নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
আরও পড়ুন: ইটভাটার দূষণ শনাক্তে ‘ব্রিক ক্লিন ট্র্যাকার’ ব্যবহার করবে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে আরও জানা যায়, উক্ত নির্দেশ পালনে ব্যর্থ হলে ইটভাটার বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট ও উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনাসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়।
এরপরও ইটভাটাটি পরিচালিত হয়ে আসছে এবং এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
সরেজমিনে এই প্রতিবেদক দেখতে পান, ইটভাটার এক কিলোমিটারের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদরাসা, মসজিদ, মন্দির, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এমনকি ইটভাটার আইল বরাবর কয়েকটি পরিবারও বাস করে। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইনে এরূপ স্থানে ইটভাটার কোনো কার্যক্রম পরিচালনা নিষিদ্ধ।
আরও পড়ুন: বায়ুদূষণের দায়ে ৯ ইটভাটাকে ৪৪ লাখ টাকা জরিমানা
পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই ইটভাটা কীভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে তা জানতে চাইলে মালিক গাজী আব্দুল হক বলেন, ‘আমরা পরিবেশের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ অনুমোদন না দিলে কি করব!’
ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ নুরুল আলম বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন নেই, বিষয়টি আমরা জানলাম। অল্পদিনের মধ্যে আমরা ভাটাটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
উচ্ছেদ নোর্টিশ দেওয়ার পরও কীভাবে ইটভাটা পরিচালিত হচ্ছে এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের খুলনা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক পারভেজ আহম্মেদ বলেন, ‘আপনি অফিসে আসেন, আসলে কথা বলব।’
এই বলে তিনি ফোনটি কেটে দেন। পুনরায় ফোন কড়া হলে তিনি আর ধরেননি।
আরও পড়ুন: বায়ুদূষণের দায়ে ৭ যানবাহন ও ৬ ইটভাটাকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা