এলাকার একমাত্র রাস্তা চৌধুরীপাড়া-চিলাইপাড় রাবারড্যাম্প রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সংস্কার, সম্প্রসারণ ও পাকাকরণের অভাবে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এ পথে যাতায়াতকারী শতশত মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের চৌধুরীপাড় থেকে পুরান বাঁশতলা হয়ে চিলাইপাড় রাবারড্যাম্প পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা। দেশ স্বাধীনের পর থেকেই রাস্তাটি পাকাকরণের দাবি উঠে গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে।
পুরান বাঁশতলা ও চিলাইপাড় গ্রামে প্রায় চার হাজার মানুষের বসবাস। গ্রীষ্ম ও বর্ষায় সামান্য বৃষ্টি হলেই এক হাঁটু কাদা জমে। তখন যানবাহন তো দূরের কথা, হেঁটে চলাচলও বিপজ্জনক হয়ে পড়ে। পুরান বাঁশতলা ও চিলাইপাড় গ্রামের একমাত্র সড়কে কাদা জল মারিয়ে চলে দুই গ্রামবাসী। একটু বৃষ্টি হলেই সমস্যায় পড়ে শিক্ষার্থী ও বয়স্করা। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি পাকা করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
তাদের অভিযোগ, নির্বাচন এলে রাজনৈতিক দলের নেতারা রাস্তাটি পাকা করার প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে আর পাকা করার উদ্যোগ নেয়া হয় না।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার ১নং বাংলাবাজার ইউনিয়নের পুরান বাঁশতলা, চিলাইপাড়, বামেরবন্দ, কুশিউড়া, রাঙাউঠি, মৌলারপাড়, চৌধুরীপাড়া, নতুন বাশতলাসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের প্রায় চার থেকে পাঁচ হাজার লোক চলাচল করে। সড়কটি কাঁচা থাকার কারণে চলাচলে তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জনগণের ব্যাপক চলাচলের কারনে প্রতি বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটিতে প্রায় হাটু পর্যন্ত কাঁদা হয়ে থাকে।
এছাড়া ওই গ্রামের প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন ওই কাচাঁ সড়ক দিয়ে কলেজ, বিদ্যালয় ও মাদরাসায় আসা-যাওয়ায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ওই রাস্থা দিয়েই চৌধুরীপাড়া বাজার, হকনগর বাজার, বাংলাবাজার, বোগলাবাজার, দোয়ারাবাজার যেতে হয়, এতে করে সাধারন মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।
এছাড়া পুরান বাঁশতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে কলাউড়া মার্কেট পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তার একই অবস্থা। এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশার শতশত পথচারী যাতায়াত করে থাকে। কিন্তু রাস্তাটি সংস্কার, সম্প্রসারণ ও পাকাকরণের অভাবে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।
পুরান বাঁশতলা গ্রামের সফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এমপি থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কেউ বাকি নেই যে আমরা তাদের কাছে যাইনি। এলাকার সর্দার মুরুব্বিসহ অসংখ্য মানুষ জনপ্রতিনিধিদের কাছে বার বার ধরণা দিয়ে শুধু প্রতিশ্রুতিই পেয়েছি।’
পুরাণ বাঁশতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু হানিফা জানান, ‘খুব খারাপ লাগে যখন দেখি ছোট ছোট কোমলমতি বাচ্চারা কাদামাটি মেখে স্কুলে আসছে। গ্রীষ্ম-বর্ষা মৌসুমে অনেক শিক্ষার্থী স্কুলেই আসতে পারেনা।’
তিনি জানান, রাস্তাটি পাকাকরণের দাবি ওঠে দেশ স্বাধীনের পর থেকেই। নির্বাচনের সময় রাস্তা নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে তারা ভোট নেন। কিন্তু নির্বাচনের পর কেউ আর তাদরে খোঁজ খবর নেন না। রাস্তাটি দ্রুত পাকাকরণের দাবি জানান তিনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রায়হানুল ইসলাম রবিন জানান, এ পথে যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হেটে চলাচলও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে যেমন তেমন, বর্ষা মৌসুমে পথচারীদের দুর্ভোগের সীমা থাকে না।
তিনি আরও বলেন, পাকা রাস্তা না থাকায় উৎপাদিত কৃষি পণ্য সঠিক সময়ে বাজারজাত করতে পারছেন না কৃষকরা। গবাদী পশু নিয়েও হতে হচ্ছে বিড়ম্বনার শিকার। সড়কটি মেরামত করলে এলাকার দুর্ভোগ কমবে।
এলাকার লোকজনের চলাচলের সুবিধার্থে এ সড়কটি পাকা করা দরকার। দ্রুত সড়কটি পাকা করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান তিনি।
বাংলাবাজার ইউপি চেয়ারম্যান জসিম মাষ্টার বলেন, ‘বর্তমান সরকারের সময়ে বাংলাবাজার ইউনিয়ন ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। কিছুদিন আগে ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে চৌধুরীপাড়া হতে পুরান বাশতলা গ্রামের রাস্তায় মাটির কাজ করেছি দেড় কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণ করা হয়েছে। ৩২ লখি টাকা ব্যয়ে কালভার্ট করা হয়েছে।’
পুরান বাঁশতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৯৮ লাখ টাকা ব্যয়ে বিদ্যালয় ভবনের কাজ চলমান রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ছাতক-দোয়ারার সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক মহোদয়ের সাথে আলোচনাক্রমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ওই রাস্তাটিও পাকাকরণ করার ব্যবস্থা করা হবে।’