জনগণ যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় সরকার করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পরিপূর্ণ লকডাউনে যাচ্ছে।
‘১৪ এপ্রিল থেকে জরুরি সেবা ছাড়া সব বন্ধ থাকবে। ১৪ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত অত্যন্ত কঠোর লকডাউন আসছে,’ শুক্রবার জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ইউএনবিকে এ কথা বলেন।
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় গত ৫ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত সারাদেশ শপিংমল, গণপরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সরকার।
সরকারের প্রজ্ঞাপনে ১১ দফার নির্দেশনায় সরকারি ও বেসরকারি অফিস আদালত, ব্যাংক জরুরি প্রয়োজনে সীমিত পরিসরে খোলা রাখার কথা বলা হয়েছিল।
কোভিড-১৯ আক্রান্ত সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকার গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণা করলেও কর্মজীবীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গত বুধবার থেকে ঢাকাসহ দেশের সকল সিটিতে বাস চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়।
এরপর কয়েকদিন ধরে শপিংমল ও দোকান খোলার দাবিতে দেশব্যাপী
দোকান মালিক ও কর্মচারীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সরকার লকডাউনের মধ্যেই ৯ এপ্রিল থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত শপিং ও দোকান পাট খোলা রাখার অনুমতি দেয়।
গত সপ্তাহে দেশে রেকর্ড পরিমান করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃত্যু হয়েছে। কোভিড নির্দেশনা না মানলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।
ফরহাদ বলেন, লকডাউনের সময় মানুষ যে যেখানে আছে সেখানেই থাকবে।
‘কেউ এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যেতে পারবে না। অতি জরুরি সেবা ছাড়া কোনোভাবেই মানুষ বাড়ি থেকে বের হতে পারবে না। সে ব্যবস্থা করা হবে,’ বলেন তিনি।
কবে প্রজ্ঞাপন জারি হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আশা করছি আগামী রবিবার বা ১৩ এপ্রিলের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি হবে।’
শুক্রবার কোভিড-১৯ জাতীয় পরামর্শক কমিটির সভাপতি মোহাম্মাদ শহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক পত্রে বলা হয়েছে, করোনার সংক্রমণ বাড়ছে এবং মন্ত্রিসভার নির্দেশনা জনগণ মানছে না।
দুই সপ্তাহের পরিপূর্ণ লকডাউন ছাড়া পরস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব না বলে জানায় কমিটি।
বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি
দেশে মহামারি করোনাভাইরাসে ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭ হাজার ৪৬২ জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এনিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৭৩ হাজার ৫৯৪ জনে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ওই সময়ের মধ্যে করোনায় আরও ৬৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯ হাজার ৫৮৪ জনে দাঁড়িয়েছে।
সারা দেশে ২৪ ঘণ্টায় ২৪৩টি পরীক্ষাগারে ৩১ হাজার ৮৭৯টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। অ্যান্টিজেন টেস্টসহ পরীক্ষা করা হয় ৩১ হাজার ৬৫৪টি নমুনা।
২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২৩.৫৭ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬২ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
আরও পড়ুন: ১৪ এপ্রিল থেকে সর্বাত্মক লকডাউনের চিন্তা করছে সরকার: কাদের
এদিকে, ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ৩ হাজার ৫১১ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৬৮ হাজার ৫৪১ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৪ দশমকি ৪০ শতাংশ।
গত বছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।