একটি সেতুর অভাবে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে এলাকার মানুষের স্বাভাবিক জীবন ব্যবস্থা। শুষ্ক মৌসুমে কোনোমতে পারাপার হওয়া গেলেও বর্ষা মৌসুমে দুর্ভোগের সীমা থাকে না দুটি ইউনিয়নের প্রায় ৭ হাজার মানুষের।
স্থানীয়রা জানান, ২০০৮ সালে ধলাই খালের ওপর সেতু নির্মাণ করা হয়। ২০১১ সালের বন্যায় সেতুটির আংশিক অংশ ভেঙে যায়। পরে বাঁশের সাঁকোতে জোড়াতালি দিয়ে পারাপার হতে থাকেন এলাকাবাসী। এরপর ২০১৭ সালের বন্যায় সেতুটি পুরোপুরি ভেঙে যাওয়ায় এলাকাবাসী বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছে। কিন্তু বাশেঁর সাঁকো হওয়ার কারণে কোনো যানবাহন চলতে পারে না।
আরও পড়ুন: তাহিরপুরে সেতু ভেঙে পারাপারে ভোগান্তি
ইসলামপুর, মালাইগাঁও, কুমিল্লা হাটি, খাসপাড়া, লম্বাহাটি, কাঁঠাল বাড়ি, ভৈরব হাটি, দূর্লভপুর, বনগাঁও, হাসাউর, চিনাউরাসহ ১৫টি গ্রামের প্রায় সাত হাজার মানুষ প্রতিদিন এই ভাঙা সেতু দিয়ে যাতায়াত করেন।
সেতু না থাকায় সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নারায়নতলা মিশন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, পাশের বিজিব ক্যাম্প, ব্যবসায়ী, কৃষকসহ এলাকার সর্বস্তরের মানুষের জীবনমান উন্নয়নসহ সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে এলাকাটি অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে বলে জানান তারা।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় সেতু ভেঙে ট্রাক পানিতে
ভৈরব হাটি গ্রামের বাসিন্দা হাজী সাদেক মিয়া বলেন, এই সেতুর জন্য আমাদের খুব কষ্ট করতে হয়। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে আমাদের কষ্ট মাত্রা আরও বেড়ে যায়। আমাদের দাবি কর্তৃপক্ষ যতো দ্রুত সম্ভব এই সেতুটি নির্মাণ করে এলাকাবাসীকে এই দুর্ভোগ থেকে রক্ষা করুক।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খালেক বলেন, সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই আমরা এলাকাবাসী স্থানীয় এমপি, জনপ্রতিনিধিদের কাছে সেতুটি নির্মাণ করার জন্য জোর দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু কী কারণে যে এই জনবহুল রাস্তার ওপর ভেঙে যাওয়া সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে না বুঝতে পারছি না।
আরও পড়ুন: সেতু ভেঙে ট্রাক পানিতে!
স্থানীয় জনগণের দুর্ভোগের বিষয়টি মেনে নিয়ে জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুখশেদ আলী বলেন, অনেক আগেই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আমরা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে প্রস্তাবনা দিয়েছি।
রংগারচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হাই বলেন, ‘সেতুটি জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের মধ্যে পড়ে। তবে এই সেতুটি ভেঙে যাওয়ার কারণে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন ও রংগারচর ইউনিয়নের মানুষ যাতায়াতে চরম দুর্ভোগে আছে। সেতুটি দ্রুত নির্মাণের জন্য আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলবো।’
এবিষয়ে সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবুল হোসেন বলেন, ‘সেতুটির কাজ খুব শিগগিরই শুরু হবে।’
আরও পড়ুন: একটি সেতুর জন্য ৪৯ বছর ধরে অপেক্ষা করছেন গ্রামবাসী!
এবিষয়ে সদর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শাহাদাৎ হোসেন ভূঞা (ভারপ্রাপ্ত) বলেন, ‘আমি কয়েকদিন যাবত সদর উপজেলার প্রকল্প অফিসের ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্বে আছি, সেতুটি নির্মাণের বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’