বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান বিজ্ঞানী ড. নওশাদ বলেছেন, ক্লিন হাইড্রোজেন সম্ভাবনা অন্বেষণে এবং এই বিশেষ ক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে বাংলাদেশের একটি ‘জাতীয় হাইড্রোজেন কৌশল’ থাকা দরকার।
অস্ট্রেলিয়া সরকারের কমনওয়েলথ বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা সংস্থা (সিএসআইআরও)-এর প্রধান বিজ্ঞানী ড. নওশাদ হক মেলবোর্নে তার অফিসে ইউএনবিকে বলেন, ‘আমি মনে করি বাংলাদেশের একটি হাইড্রোজেন কৌশল থাকা উচিত।’
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী কমপক্ষে ৯০টিরও বেশি দেশ হাইড্রোজেন কৌশল নিয়ে কাজ করছে এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো তাদের অনেকেরই আনুষ্ঠানিক হাইড্রোজেন কৌশল রয়েছে।
ড. নওশাদ বলেন, এই কৌশল দেশের জ্বালানি চাহিদা এবং জ্বালানি রপ্তানি, আমদানি ও ব্যবহারের ওপর নির্ভর করে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রকৌশলী, বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিল্পখাতে সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য নিজেদের প্রস্তুত রাখতে হবে। হাইডো্রজেন ইকোনমি একটি সম্ভাবনাময় খাত হয়ে উঠতে পারে।’
ড. নওশাদ ‘কূটনীতি ও উন্নয়ন’ এর জন্য বিজ্ঞান ব্যবহারের ওপর জোর দেন এবং বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রযুক্তিগত গবেষণা, উন্নয়ন এবং ক্লিন এনার্জি প্রদর্শনের এক্সপোজার প্রয়োজন।
তিনি বলেন, “সামর্থ্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা একটি চমৎকার হাতিয়ার হতে পারে। বাংলাদেশে ‘জাতীয় হাইড্রোজেন কৌশল’ উন্নয়নের জন্য কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ান বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করা যেতে পারে।”
ক্লিন প্রযুক্তি সম্পর্কে জানার জন্য এবং দেশে তা স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ থেকে বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, পেশাজীবী ও সাংবাদিকদের অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানো যেতে পারে বলেও জানান এই বিজ্ঞানী।
কোনো কার্বন নির্গমন না করা এবং জীবাশ্ম জ্বালানির তুলনায় ৩ গুণ বেশি উচ্চমাত্রার শক্তি ধারণ করায়, ভবিষ্যতে নবায়নযোগ্য হাইড্রোজেন জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতা বিলোপের হাতিয়ার হতে পারে। তবুও বর্তমানে ৯৬ শতাংশ হাইড্রোজেন উৎপাদন হয় জীবাশ্ম জ্বালানির মাধ্যমে এবং যা টেকসই নয়।
কেননা হাইড্রোজেন জ্বালানি, পরিবহন ও শিল্প খাতকে ডিকার্বনিজ করতে বিস্তৃত সম্ভাবনাময় একটি উপায়।
ড. নওশাদ বলেন, বাংলাদেশকে জনগণকে প্রশিক্ষণ দিয়ে, প্রযুক্তির উন্নয়নের মাধ্যমে এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের উপায় খুঁজে বের করে শক্তি ও সামর্থ্য বাড়াতে হবে।
২০১৮ সালে সিএসআইআরও এনার্জিতে যোগ দেন ড. নওশাদ। তিনি সিএসআইআরও’তে 'মাইন টু মেটাল' উৎপাদনের জন্য বেশ কয়েকটি অভিনব প্রযুক্তি এবং ফ্লোশিট তৈরিতে অবদান রেখেছেন।
তিনি বলেন, সাহায্য ও সহযোগিতা অপরিহার্য, কারণ একটি দেশের উদ্ভাবন অন্য দেশে ঠিক একইভাবে কাজ করে না। জ্বালানির চাহিদা, জ্বালানি ব্যবহারের ধরন, ব্যবহার, রপ্তানি ও আমদানির মতো বিষয়গুলো এক্ষেত্রে বিবেচ্য।
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারীদের আর্থিক সাক্ষরতা বাড়াতে কাজ করছে বিএসইসি: অধ্যাপক শিবলী