ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মহিলা যুব শাখার উচ্চাকাঙ্ক্ষী তরুণ নেত্রীরা গত ২০ বছরে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে পরিবর্তন না আসায় তাদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। পাঁচ বছর পর বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে সংগঠনটির তৃতীয় ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। সবার প্রশ্ন একটাই- এই সম্মেলনে কি নতুন নেতৃত্ব আসবে?
নাজমা আক্তার ও অপু উকিল ২০০৪ সাল থেকে যুব মহিলা লীগের শীর্ষ দুটি পদে আছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই ইউএনবিকে তাদের আক্ষেপ ও হতাশার কথা জানিয়েছেন।
এমন বাস্তবতায় পাঁচ বছর পর বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সংগঠনটির তৃতীয় ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন।
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
এদিকে এই সম্মেলনের মাধ্যমে যুব মহিলা লীগের শীর্ষ নেতৃত্বে পরিবর্তন আশা করছেন দলটির নেতারা।
যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী নেতারা এবারের সম্মেলনের মাধ্যমে শীর্ষ দুই পদে নতুন নেতৃত্বের প্রত্যাশা করছেন।
বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল বলেন, ত্রিবার্ষিক কাউন্সিলের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘নেতৃত্বের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে। তিনি যা ভালো মনে করবেন তাই হবে। তিনি আমাকে যেখানে কাজ করতে দেবেন আমি সেখানে কাজ করব।’
আরও পড়ুন: শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস: বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন আ.লীগের
যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি বলেন, ‘সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। ধারাবাহিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সম্মেলন হচ্ছে। যুব মহিলা লীগ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার তৈরি সংগঠন। জন্মলগ্ন থেকেই আমি সংগঠনের সঙ্গে আছি। তিনি (শেখ হাসিনা) আমাদের অভিভাবক। আমরা তার ওপর ভরসা ও আস্থা রাখি। তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন, আমরা সেটাই মেনে চলবো। আমাদের প্রার্থী হওয়া মুখ্য বিষয় না। সবকিছুই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে।’
সাংগঠনিক সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি বলেন, যুব মহিলা লীগের সৃষ্টি হয়েছে সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রীদের জন্য। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এমন একটা সময়ে সংগঠনটি তৈরি করেছেন যখন বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, নারীদের ওপর পাশবিকতা চলছিল। রাজপথের যোদ্ধা হিসেবে তখন তিনি যুব মহিলা লীগ তৈরি করেন। আমরা চাই, নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ছাত্রলীগ করেছে তারা এবং তারুণ্য প্রাধান্য পাবে। তবে যুব মহিলা লীগের নেতৃত্বের বিষয়ে তিনি (শেখ হাসিনা) যে সিদ্ধান্ত নিবেন, আমরা সবাই সেটা মেনে নিব।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সফাপতি পদে আলোচনায় রয়েছেন- আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ও ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মারুফা আক্তার পপি, বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের মেয়ে জাকিয়া নূর লিপি এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার।
আরও পড়ুন: তদন্তের স্বার্থে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে তল্লাশি চালায় পুলিশ: তথ্যমন্ত্রী
এছাড়া যুব মহিলা লীগ থেকে সভাপতি পদে আলোচনায় রয়েছেন- সংগঠনটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল, সহ-সভাপতি শিরিনা নাহার লিপি, কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি, আলেয়া সারোয়ার ডেইজী ও আফরোজা মনসুর লিপি।
২০০২ সালে প্রতিষ্ঠাকালে যুব মহিলা লীগের ১০১ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। ২০০৪ সালে অনুষ্ঠিত সংগঠনটির প্রথম সম্মেলনে নাজমা আক্তার সভাপতি ও অপু উকিল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৩ বছর পর যুব মহিলা লীগের দ্বিতীয় ও শেষ সম্মেলন ২০১৭ সালের ১৭ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে নাজমা আক্তার সভাপতি ও অপু উকিল সাধারণ সম্পাদক পদে পুনর্নির্বাচিত হন।
আরও পড়ুন: বিএনপিকে ২৪ ডিসেম্বর ঢাকায় বিশৃঙ্খলা না করার আহ্বান কাদেরের