এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় প্রতিবছরই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর ইচ্ছাটুকু অপূর্ণ রয়ে যায়।
যশোর জেলা শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে- জেলার আট উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক, মাধ্যমিক, মাদরাসা ও কলেজ রয়েছে এক হাজার ৯০০। এরমধ্যে সাড়ে ৬০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো শহীদ মিনার নেই। সদর উপজেলায় ৪০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭৭টিতে, বাঘারপাড়া উপজেলায় ১৯৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৫টিতে, অভয়নগর উপজেলায় ২১৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৬টিতে, ঝিকরগাছা উপজেলাতে ২২৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৪টিতে, চৌগাছার ১৯৯টির মধ্যে ৫০টিতে, মণিরামপুর উপজেলার ৪৭১টির মধ্যে ১৩৮টিতে, শার্শা উপজেলার ২০৩টির মধ্যে ৬১টিতে এবং কেশবপুর উপজেলায় ২৯৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮০টিতে কোনো শহীদ মিনার নেই।
এতে, একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ভাষা শহীদদের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা জানাতে পারছে না। সারাদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দিনটি পালনের নির্দেশনা থাকলেও হাতেগোনা কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কলাগাছ, কাপড় ও বাঁশের কঞ্চি দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে পালন করে দিবসটি।
যশোর সদর উপজেলার দত্তপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার বলে, ‘আমাদের স্কুলে শহীদ মিনার না থাকায় একুশে ফেব্রুয়ারির দিনে ভাষা শহীদদের আমরা শ্রদ্ধা জানাতে পারি না।’
দত্তপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার বলেন, ‘শহীদ মিনার নেই, একথা সত্য। তবে আমরা শহীদ মিনার স্থাপনের উদ্যোগ নিচ্ছি। এটা খুব দরকার।’
এখন পর্যন্ত সরকারি বরাদ্দ না পাওয়ায় কলেজ প্রাঙ্গণে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি বলেও জানান তিনি।
সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর জানান, সদর উপজেলাতে ৪০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭৭টিতে শহীদ মিনার নেই। ‘যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই তাদের তালিকা প্রস্তুত করে জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে পাঠিয়েছি,’ বলেন তিনি।
জেলা শিক্ষা অফিসার এএসএম আব্দুল খালেক জানান, জেলায় যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সেখানে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য শিক্ষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। একইসাথে সরকারি বরাদ্দ পাওয়ারও চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শাম্মী ইসলাম জানান, অনেক বিদ্যালয়ে জায়গার সংকটে শহীদ মিনার নির্মাণ করা যায় না।
‘যেসকল বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই; তাদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা পাশের কোনো বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধা জানান। তবে জেলার সব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে,’ বলেন তিনি।