স্রেডার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানী সম্পর্কিত নীতি প্রস্তুত করার কাজে নিয়োজিত সংস্থাটি সম্প্রতি বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের মতামত ও অভিজ্ঞতার নিরিখে একটি গাইডলাইন চূড়ান্ত করেছে। গাইডলাইনটি বিদ্যুৎ বিভাগে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপনের অপেক্ষায় আছে।
স্রেডার এক সহকারী পরিচালক বলেন, ‘আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আমরা চুড়ান্ত গাইডলাইনটি বিদ্যুৎ বিভাগে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করতে পারবো।’
তিনি বলেন, স্রেডা এরই মধ্যে গাইডলাইনটি কিভাবে কাজ করবে এবং প্রয়োগে কোনও প্রযুক্তিগত বা আর্থিক সমস্যা আছে কিনা তা দেখার জন্য ইতিমধ্যে কুষ্টিয়ায় একটি পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।
স্রেডার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অফিস এবং শিল্প কারখানার ভবনের ছাদে স্থাপন করা সৌর প্লান্ট থেকে বিদ্যুৎ কেনার ক্ষেত্রে সরকারের সাফল্য থেকে সৌর-চালিত সেচ পাম্প প্লান্ট থেকে বিদ্যুৎ কেনার ধারণাটি নেয়া হয়েছে।
মৌসুমের বাকি সময়ে, সরকার সৌর চালিত সেচ কেন্দ্রের চালকদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনবে। পরিকল্পনার অনুযায়ি পাম্প চালকরা স্থানীয় বিতরণ গ্রিড লাইন ব্যবহার করে তাদের অব্যবহৃত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে বিক্রয় করতে পারবেন।
কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে সরকার স্রেডার তৈরি নেট মিটারিং গাইডলাইনের আওতায় বিভিন্ন ভবনের ছাদে স্থাপন করা সোলার কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনছে। তবে কিছু প্রযুক্তিগত ও আর্থিক বাঁধার কারণে কৃষকরা এ ধরনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
বিদ্যুৎ বিভাগের (নবায়নযোগ্য জ্বালানির দায়িত্বে থাকা) অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আলাউদ্দিন ইউএনবিকে বলেন, সৌর সেচ পাম্প প্রকল্পের ক্ষেত্রে থাকা বাঁধাগুলো সমাধান করে একটি গাইডলাইন প্রস্তুত করতে স্রেডা বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, নেট মিটারিং পদ্ধতি জনপ্রিয়তা পাওয়ার পরে সরকার সৌর-চালিত সেচ পাম্প থেকে বিদ্যুৎ কেনার দিকে এগিয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, ১৭৯ শিল্প গ্রাহকদের কাছ থেকে বিভিন্ন বিপণন সংস্থা ৪.২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিনছে।
স্রেডার আরেক কর্মকর্তা বলেন, দুটি প্রধান কারণে সরকার সৌর-চালিত সেচ পাম্প থেকে বিদ্যুৎ কিনতে যাচ্ছে।
তিনি উল্লেখ করেন, প্রথমটি হলো সেচ পাম্প পরিচালনার জন্য স্থাপিত সৌর প্লান্ট থেকে উত্পাদিত বিদ্যুতের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং দ্বিতীয় উদ্দেশ্যটি হলো সৌর চালিত সেচ পাম্প প্রকল্পগুলোকে বাণিজ্যিকভাবে টেকসই করা।
স্রেডার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে সারা দেশে প্রায় ৩৪ লাখ হেক্টর জমির জন্য ১৩ লাখ ৪০ হাজার ডিজেলচালিত সেচ পাম্প রয়েছে।
সরকার ডিজেলচালিত পাম্পগুলোকে সৌর চালিত পাম্প দিয়ে প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে সেচ খাত থেকে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উত্পাদন নিশ্চিত করবে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত এক হাজার ১০০টি ডিজেল চালিত পাম্পে সৌর-চালিত পাম্প প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
রাষ্ট্রমালিকানাধীন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (ইডকল) প্রকল্পগুলোতে অর্থায়ন করেছে ও কিছু এনজিও এবং বাণিজ্যিক সংস্থা ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে সৌর-চালিত পাম্প স্থাপন করছে।
এই উদ্যোগকে পুরোপুরি বাণিজ্যিক করার জন্য পাম্প চালকদের কিছু সহায়তা প্রয়োজন উল্লেখ করে এই কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্পগুলো যদি বাণিজ্যিকভাবে সফল প্রমাণিত করা যায় তবে বহু লোক সৌর-চালিত পাম্প প্রতিস্থাপনে উত্সাহিত হবেন।