এ বছর অন্তত বিশ কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা করছেন তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত এক দশক ধরে ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষা নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার সাবদি, দীঘলদি ও মাধবপাশাসহ আটটি গ্রামে প্রায় চারশ বিঘা জমিতে বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন ধরনের ফুলের চাষ হচ্ছে। ফুল চাষ করে স্বচ্ছলতার মুখ দেখেছেন এখানকার হতদরিদ্র কৃষকেরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিভিন্ন রঙের গাঁদা, চেরি, চন্দ্রমল্লিকা, জবা, সূর্যমুখী, গ্যালেরিয়া, ডালিয়া, স্টার, মাম, কাঠমালতি, বেলি, ঝাড়বাড়া ও জিপসিসহ অন্তত চল্লিশ প্রকারের দেশি-বিদেশি হরেক রকমের ফুল চাষ হচ্ছে এখানকার বাগানগুলোতে।
দেশের ফুল ব্যবসার প্রধান কেন্দ্র রাজধানীর শাহবাগের চাহিদার বড় একটি অংশ পূরণ করে এখানকার বাগান মালিকরা। সময়ের সাথে গত কয়েক বছর ধরে এই সব বাগান সাধারণ মানুষের বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। আর তাই মনমুগ্ধকর সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত দর্শনার্থী সাবদি দীঘলদি এলাকায় ভিড় করছেন।
দীঘলদি গ্রামের বাগান মালিক অধীর চন্দ্র হালদার জানান, এই বছর ফুলের আশাতীত ফলন হয়েছে। সাবদি, দীঘলদি ও মাধবপাশার সবগুলো বাগানে যে ফুলের ফলন হয়েছে তা কমপক্ষে বিশ কোটি টাকা বিক্রি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি জানান, চাহিদা থাকা সত্ত্বেও আর্থিক সমস্যার কারণে এ অঞ্চলে ব্যাপকভাবে চাষ করা সম্ভব হচ্ছে না।
জেলার কৃষি দপ্তরে সহযোগিতা চেয়েও কোনো ফলপ্রসু হয়নি অভিযোগ অধীর চন্দ্র হালদার বলেন, সরকারে পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা পেলে এখানকার ফুল বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল কাদির বলেন, ‘ফুল চাষকে আরও প্রসারিত করতে ইতোমধ্যে নানা প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা ফুল বাগান মালিকদের সাথে কথা বলেছি। তাদের সমস্যার ব্যাপারে আমরা খোঁজ-খবর নিয়েছি। আমরা বাগান মালিকদেরকে বলে এসেছি যদি আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে আমরা ব্যবস্থা করব।’
উপজেলা পরিষদ ও জেলা পরিষদের ঋণ কমিটিতে তাদের বিষয়টি উপস্থাপন করে সহজ শর্তে বাগান মালিকদের ঋণ দেয়ার ব্যাপারে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা।
তিনি আরও জানান, সাবদিতে চলতি মৌসুমে ৫০ হেক্টরেরও বেশি জমিতে বানিজ্যিকভাবে ফুলের চাষ হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাস উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা ও নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকারি বিক্রেতাদের কাছে এই ফুল সরবরাহ করা হচ্ছে।