দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিতর্কিত সামরিক আইন ঘোষণায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর আটক অবস্থায় আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন।
আটক কেন্দ্রের কর্মীরা তার আত্মহত্যাচেষ্টা প্রতিরোধ করেছেন এবং সাবেক এই মন্ত্রী এখন স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন কর্মকর্তারা।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
এর আগে সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং হিউনকে বিদ্রোহ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি হলেন প্রথম ব্যক্তি যাকে ৩ ডিসেম্বর জারি করা সামরিক আইন আদেশের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আনুষ্ঠানিকভাবে আটক করা হয়।
এই ডিক্রি দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার ও অর্থনীতিকে সাময়িকভাবে অচল করে দিয়েছিল এবং সারা দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করে। এ ঘটনার পর প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ তাদের তদন্ত জোরদার করছে। পুলিশ ইয়ুনের অফিসে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) অভিযান চালিয়েছে। অন্যদিকে দেশটির বিরোধী আইনপ্রণেতারা গত শনিবার ব্যর্থ চেষ্টার পর প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের জন্য পুনরায় একটি প্রস্তাব জমা দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
ডেমোক্র্যাটিক পার্টি অভিযোগ করেছে, ইউনের সামরিক আইন জারি অসাংবিধানিক ছিল। তিনিসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে বিদ্রোহের জন্য অভিযুক্ত করে দলটি।
সামরিক কমান্ডাররা সাক্ষ্য দিয়েছেন,আইনপ্রণেতারা যাতে আদেশ উল্টাতে না পারে সেজন্য তাদের বাধা দিতে সৈন্যদের সরাসরি নির্দেশ দিয়েছিলেন ইউন। অন্যদিকে পাল্টা গোয়েন্দা কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, রাজনৈতিক বিরোধীদের আটক করার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল। সাংবিধানিক ধারাকে পাশ কাটিয়ে এবং গণতান্ত্রিক রীতিনীতি লঙ্ঘনের দায়ে গত ৪ ডিসেম্বর পার্লামেন্টে বাতিল হওয়া এই আদেশ ব্যাপক নিন্দার মুখে পড়ে।
অভিশংসন প্রক্রিয়া সফল হলে সাংবিধানিক আদালতের রায় না হওয়া পর্যন্ত ইয়ুনের ক্ষমতা স্থগিত করা হবে। পদ থেকে বরখাস্ত হলে নতুন করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রয়োজন দেখা দেবে।
এই অস্থিরতা আন্তর্জাতিকভাবে মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম অস্থিরতা সম্পর্কে প্রতিবেদন করেছে। এতে বলা হয়, এটি একটি বিরল পদক্ষেপ যা দক্ষিণ কোরিয়ার অস্থিতিশীলতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে বিক্ষোভকে নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা।
এদিকে, সমালোচকরা যুক্তি দেখান, চলমান রাজনৈতিক বিরোধের মধ্যে ইউনের সামরিক আইন জারি একটি বাড়াবাড়ি ছিল, যা এশিয়ার অন্যতম শীর্ষস্থানীয় গণতন্ত্রের বিভক্তিকে আরও গভীর করেছিল।