ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শহরে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে পাঁচজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (৫ জুলাই) ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা পশ্চিম তীরের জেনিন শহরে বিমান হামলাসহ সন্ত্রাসবিরোধী তৎপরতা চালাচ্ছে।
ইসরায়েলি বাহিনী জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনারা 'একটি ভবন ঘিরে রেখেছে যেখানে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা(ইসরায়েল যাদের সন্ত্রাসী বলে) জড়ো হয়েছে।' সৈন্যরা গুলি করছে এবং ওই এলাকায় 'বেশ কয়েকজন সশস্ত্র যোদ্ধা'কে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৩৮ হাজার ছাড়িয়েছে: গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পাঁচজনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে। তবে তাদের পরিচয় সম্পর্কে কোনো তথ্য দেয়নি। তাৎক্ষণিকভাবে কোনো পক্ষের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত জেনিনে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল।
ইসরায়েলি বসতি স্থাপনবিরোধী একটি পর্যবেক্ষণ গোষ্ঠী জানিয়েছে, সরকার অধিকৃত পশ্চিম তীরের বসতিগুলোতে প্রায় ৫ হাজার ৩০০ নতুন বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনা করছে।
কট্টরপন্থী সরকারের বসতি স্থাপনের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে পিস নাউ গ্রুপ যে নির্মাণ পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে তা ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন ঠেকাতে পশ্চিম তীরের ওপর ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণ সুদৃঢ় করার কৌশলের অংশ।
ফিলিস্তিনিরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজা চাইছে। যে এলাকাগুলো ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় দখল করে নেয় ইসরাইল।
আরও পড়ুন: গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনায় প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছে ইসরাইল
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে পশ্চিম তীরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের অভিযানের প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়। এর বেশিরভাগ বেসামরিক নাগরিক। এসময় ২০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলিকে জিম্মি করে নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৩৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তবে নিহতদের গণনায় যোদ্ধা ও বেসামরিক নাগরিকদের আলাদা করে উল্লেখ করেনি মন্ত্রণালয়। তবে নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
কয়েক সপ্তাহ ধরে স্থগিত থাকার পর যুদ্ধবিরতি আলোচনা আবার শুরু হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। হামাস একটি চুক্তির জন্য মার্কিন সমর্থিত প্রস্তাবের সর্বশেষ প্রতিক্রিয়া হস্তান্তর করার একদিন পরে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় বৃহস্পতিবার(৫ জুলাই) জানিয়েছে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী আলোচনা পুনরায় শুরু করতে আলোচকদের পাঠাচ্ছেন।
গত কয়েক মাস ধরে বারবার একটি চুক্তি সম্পাদন ব্যর্থ হওয়ার পর পুনরায় মার্কিন, কাতার ও মিশরীয় মধ্যস্থতাকারীদের আলোচনা শুরু করার এই উদ্যোগ তাদের মধ্যে ব্যবধান কাটিয়ে ওঠার আরেকটি প্রচেষ্টা বলে মনে হচ্ছে।
তবে হামাস এমন একটি চুক্তি চায়, যার মাধ্যমে ইসরায়েলি সেনারা পুরোপুরি গাজা ত্যাগ করবে এবং যুদ্ধ শেষ হবে। অন্যদিকে নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসকে নির্মূল করার আগে যুদ্ধ শেষ হতে পারে না।
আমেরিকা, মিশর ও কাতারি কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আলোচনার জন্য ইসরায়েলি আলোচকরা শুক্রবার(৫ জুলাই) কাতারের রাজধানী দোহায় পৌঁছানোর কথা।
আরও পড়ুন: ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: দ্বিতীয় দফার ভোট গ্রহণ শুরু