যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের পশ্চিমাঞ্চলে শুক্রবার মঞ্চে লেকচার দেবেন এমন সময় এক ব্যক্তি লেখক সালমান রুশদির ঘাড়ে ও পেটে ছুরিকাঘাত করেছেন।
৭৫ বছর বয়সী রুশদিকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হয়েছে এবং তার অস্ত্রোপচার হয়েছে।
লেখকের এজেন্ট অ্যান্ড্রু ওয়াইলি বলেছেন, রুশদি শুক্রবার সন্ধ্যায় ভেন্টিলেটরে ছিলেন। তার লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং একটি বাহুর স্নায়ু বিচ্ছিন্ন হয়েছে। তিনি একটি চোখ হারাতে পারেন।
হামলার সময় লেখকের সাহায্যের জন্য ছুটে যাওয়া চিকিৎসক ডা. মার্টিন হাসকেল বলেছেন, রুশদির ক্ষত ‘গুরুতর তবে আরোগ্যযোগ্য’।
পুলিশ হাদি মাতার (২৪) নামে একজনকে হামলাকারী হিসেবে শনাক্ত করেছে এবং ঘটনাস্থলে থেকে তাকে আটক করেছে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৭
তবে হামলার উদ্দেশ্য স্পষ্ট নয় বলে জানান রাজ্য পুলিশের মেজর ইউজিন স্ট্যানিসজেউস্কি।
নিপীড়নের শিকার লেখকদের আশ্রয় দেয় এমন একটি সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা ইভেন্ট মডারেটর হেনরি রিসও (৭৩) হামলার শিকার হয়েছেন।
পুলিশ জানায়, রিস মুখে আঘাত পান এবং হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে ছাড়পত্র পেয়েছেন।
১৯৮৮ সালে প্রকাশিত রুশদির ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ উপন্যাসটিকে ধর্ম অবমাননা বলে মনে করেন অনেক মুসলিম। এতে একটি চরিত্রে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে অপমান করা হয়েছে বলে তারা দেখে থাকেন।
ভারতের মুসলিম পরিবারে জন্ম নেয়া রুশদির বিরুদ্ধে প্রায়ই সহিংস বিক্ষোভ হয়েছে।
বইটিকে কেন্দ্র করে দাঙ্গায় অন্তত ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে রুশদির নিজ শহর মুম্বাইতে ১২ জনের মৃত্যু হয়।
১৯৯১ সালে বইটির এক জাপানি অনুবাদককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় এবং একজন ইতালীয় অনুবাদক ছুরিঘাতের শিকার হন। ১৯৯৩ সালে বইটির নরওয়েজিয়ান প্রকাশক তিনবার গুলিবিদ্ধ হন।
বইটি ইরানে নিষিদ্ধ। দেশটির প্রয়াত নেতা গ্র্যান্ড আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি ১৯৮৯ সালে রুশদির মৃত্যুর ফতোয়া বা আদেশ জারি করেন।
এছাড়া তার মাথার দাম হিসেবে তিন মিলিয়ন (৩০ লাখ) ডলার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়।