সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বর্তমানে তার দেশে ১৯৭১-সালে পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশে) সৃষ্ট পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি ঘটানোর অভিযোগ করেছেন।
তিনি বলেছেন, পূর্ব পাকিস্তানে যা হয়েছে, তা এখন তার দেশে হচ্ছে।
শুক্রবার পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রধান বর্তমান অবস্থাকে ১৯৭০ সালের সঙ্গে তুলনা করেন। সেসময় ৭ ডিসেম্বরের নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেলেও সরকার গঠনের অধিকার দেয়নি পশ্চিম পাকিস্তান। ঠিক সে ঘটনার পরই পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান আলাদা হয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার পাঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদে লংমার্চ চলাকালে সশস্ত্র হামলা থেকে বেঁচে যাওয়ার পর পিটিআই-এর ইউটিউব চ্যানেলে সম্প্রচারিত একটি ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘পূর্ব পাকিস্তানে কি ঘটেছিল? নির্বাচনে জয়ী দলের (আওয়ামী লীগ) বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনী ব্যবস্থা নেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে বড় দল জয়লাভ করেছিল। কিন্তু তাদেরকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। একই বিষয় এই মুহূর্তে এখানে ঘটছে।’
আরও পড়ুন: ইমরান খানের ওপর হামলার নিন্দা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের
লাহোরের এক হাসপাতালে হুইলচেয়ারে বসে ৭০ বছর বয়সী সাবেক এই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা জানান, যদি হামলাকারীরা নিজেদের মধ্যে ‘সমন্বয় করে’ (একসঙ্গে গুলি চালালে) হামলা করত, তাহলে তিনি হয়তো বন্দুক হামলায় বাঁচতেন না।
হামলায় ইমরানের একজন সমর্থক নিহত ও দুই সংসদ সদস্যসহ ১৩ জন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকালের হামলার আগে পর্যন্ত ইমরান খানের প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশগুলো শান্তিপূর্ণ ছিল। এই হামলার ঘটনা রাজনৈতিক সহিংসতা ও হত্যার ইতিহাসসহ পাকিস্তানে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার বিষয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করছে।
ইমরান খানের অভিযোগ- গত এপ্রিলে পার্লামেন্ট থেকে তার বহিষ্কার ছিল বেআইনি এবং তাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ষড়যন্ত্র করেছিল।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে সরকারবিরোধী সমাবেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গুলিবিদ্ধ
যদিও দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ ও ওয়াশিংটন কর্তৃপক্ষ খানের এই অভিযোগ অস্বীকার করে।
এছাড়া ইমরানের দাবি সরকারকে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিতে হবে।
কয়েক হাজার সমর্থক নিয়ে শুক্রবার লাহোর থেকে শুরু করা লংমার্চের নেতৃত্ব দিয়ে তিনি বলেন, তার দাবি মেনে না নেয়া পর্যন্ত এ বিক্ষোভ চলবে।
তবে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ২০২৩ সালে নির্বাচন হবে।