বুধবার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা কংগ্রেসের অধিবেশন চলাকালে ক্যাপিটল ভবনে ঢুকে পড়লে কিছুক্ষণ অধিবেশন বন্ধ থাকে। ট্রাম্প সমর্থকদের এ হামলার ঘটনায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। পরে অধিবেশন আবার শুরু হলে অবশেষে জো বাইডেনকে জয়ী ঘোষণা করে মার্কিন কংগ্রেস।
দিনের শুরুতে হাজার হাজার ট্রাম্প সমর্থক ‘আমেরিকা বাঁচাও’ নামে এক গণজমায়েতে অংশ নিতে ওয়াশিংটনে আসেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ জনসভায় ভাষণ দিয়ে জো বাইডেনের বিজয় অনুমোদন করার বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: বাইডেনের অ্যারিজোনা জয় নিয়ে আপত্তি প্রত্যাখ্যান করেছে হাউজ
কয়েক ঘণ্টা ভবন দখল করে রাখার পর বিক্ষোভকারীরা ধীরে ধীরে ক্যাপিটল প্রাঙ্গণ ছেড়ে বাইরে চলে যেতে থাকে।
সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় পর সিনেটররা অধিবেশন পুনরায় শুরু করেন।
রিপাবলিকান দলের ১৩ জন সিনেটর এবং কয়েক ডজন প্রতিনিধি কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে যোগ দেন।
ক্যাপিটলে হামলা এবং বেশ কয়েকজন সিনেটর অধিবেশনে বাইডেনের জয়কে পাল্টানোর চেষ্টা করলেও সিনেট এবং প্রতিনিধি পরিষদ পেনসিলভানিয়া এবং অ্যারিজোনা রাজ্যে ভোটের আপত্তি খারিজ করে দিলে ইলেকটোরাল ভোট অনুমোদিত হয়।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ভবনে ট্রাম্প সমর্থকদের নজিরবিহীন হামলা, নিহত ৪
জো বাইডেন হলেন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট
গত ৪ নভেম্বরের ভোটে বাইডেন ৩০৬-২৩২ ইলেকট্রোরাল ভোটে ট্রাম্পকে পরাজিত করেন। তিনি ২০ জানুয়ারি শপথ নেবেন।
বিশ্ব নেতাদের নিন্দা
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা কংগ্রেসের ভবন ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্প সমর্থকদের ঢুকে পড়ার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্ব নেতারা। তারা প্রতিক্রিয়ায় বিস্মিত ও স্তব্ধ হওয়ার কথা জানিয়েছেন।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এ ঘটনাকে ‘লজ্জাজনক দৃশ্য’ বলে উল্লেখ করেছেন। সেই সাথে ‘শান্তিপূর্ণ এবং সুশৃঙ্খল ক্ষমতা হস্তান্তরের’ আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস বলেন, ‘ট্রাম্প এবং তার সমর্থকদের উচিত শেষ পর্যন্ত আমেরিকার ভোটারদের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া এবং গণতন্ত্রের পদদলন না করা।’
এক বিবৃতিতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ বলেন, ‘এটা পুরোপুরি অসুস্থ এবং হৃদয়বিদারক দৃশ্য। রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল কোনো দেশে এ ধরনের ঘটনার মাধ্যমে নির্বাচনের ফলকে বিতর্কিত করা হয়- আমাদের গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে এর কোনো স্থান নেই।’
আরও পড়ুন: মুসলিমদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা প্রথম দিনেই তুলে নেবেন বাইডেন
এক বিবৃতিতে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, ইতিহাস সঠিকভাবেই ক্যাপিটলের ওপর এ আক্রমণকে মনে রাখবে, আর সেটি হচ্ছে ‘এ মুহূর্তটি প্রচণ্ড অসম্মান এবং এ জাতির জন্য লজ্জাজনক।’
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ‘গণতন্ত্রের ওপর এ আঘাতের ঘটনায় কানাডিয়ানরা প্রচণ্ড বিরক্ত।’
আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্ন্দান্দেজ জো বাইডেনের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছেন এবং সহিংসতার ঘটনার প্রতি নিন্দা জানিয়েছেন।
একইভাবে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভান দোকে সহিংসতাকে প্রত্যাহার করে কংগ্রেসের সদস্যদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাস্টিয়ান পিনেরা ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার পদক্ষেপের’ নিন্দা জানিয়েছেন।