বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়, ফোনালাপে জো বাইডেন আমেরিকার নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়া, রাশিয়ায় চলমান পুতিনবিরোধী বিদ্রোহ এবং যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার মধ্যকার একমাত্র অবশিষ্ট পারমাণবিক অস্ত্র চুক্তির বিষয়ে কথা হয়েছে।
রাশিয়ার এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: দায়িত্ব পেয়েই বাইডেন প্রথমেই যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন
উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে তারা যোগাযোগ রক্ষা করে যাওয়ার বিষয়েও প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন উভয় দেশের রাষ্ট্রপ্রধান।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুতিনের বিষয়ে যথেষ্ট কঠোর ছিলেন না বলে অভিযোগ তোলেন সমালোচকরা।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও রাশিয়ার বিষয়ে কিছুটা দুর্বল ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার অধীনে জো বাইডেন ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
আরও পড়ুন: হোয়াইট হাউজ ছাড়লেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
ওইসময় ক্রাইমিয়ার সংযুক্তি, পূর্ব ইউক্রেনে আক্রমণ এবং সিরিয়ার ওপর জোর প্রয়োগ করার ইস্যুগুলোতে ক্রেমলিনের ওপর যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ না থাকার অভিযোগ তোলা হয় ওবামা প্রশাসনের ওপর।
ফোনালাপের বিষয়ে হোয়াইট হাউজ ও ক্রেমলিন যা বলছে
যুক্তরাষ্ট্র এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন পরিষ্কার করেছেন যে, রাশিয়ার যেসব পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রকে বা তার মিত্রদের ক্ষতি করে, সেসব পদক্ষেপের বিপক্ষে নিজেদের স্বার্থ রক্ষার্থে যুক্তরাষ্ট্র শক্ত পদক্ষেপ নেবে।’
আরও পড়ুন: কয়েক লাখ অভিবাসীকে নাগরিকত্বের মর্যাদা দিতে যাচ্ছেন বাইডেন
মঙ্গলবার বিকালের ওই ফোনালাপ সম্পর্কে হোয়াইট হাউজের বিবৃতিতে বলা হয়, দুই প্রেসিডেন্ট ‘সোলার উইন্ডস’ সাইবার হামলা, অ্যালেক্সেই নাভালনিকে বিষপ্রয়োগ ইত্যাদি বিষয়ে কথা বলেন।
তবে ফোনালাপ বিষয়ে ক্রেমলিনের বিবৃতিতে দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যকার উষ্ণ কথাবার্তার কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
রাশিয়ার কর্মকর্তারা বলেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হলে সেটি দুই দেশের জন্য ভালো এবং বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য সহায়ক বলে চিহ্নিত করেছেন।
আরও পড়ুন: ফের মিয়ানমারের পাশে চীন, রাশিয়া: জাতিসংঘের খসড়া প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট
ক্রেমলিনের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের নেতার মধ্যে আলোচনা অনেকটা ব্যবসায়িক এবং খোলামেলা ধাঁচের ছিল।’
দুই নেতা ওবামার সময়ে করা ‘নিউ স্টার্ট’ নামের একটি চুক্তি নতুন করে নবায়ন করার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রাগারে মিসাইল, লঞ্চার এবং ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা সীমিত করার বিষয়ে ছিল চুক্তিটি।
আগামী মাসেই এই চুক্তিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল আর ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।
দ্বন্দ্ব চান না বাইডেন
জো বাইডেন ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ডোনাল্ড ট্রাম্প যতটুকু শক্ত ছিলেন ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর, তিনি তার চেয়ে বেশি কঠোর থাকবেন।
দুই নেতার ফোনালাপ সংক্রান্ত খবরে বলা হচ্ছে, রাশিয়া যে ২০২০ ও ২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেছে, বাইডেন এই বিষয়টি জানেন বলে প্রেসিডেন্ট পুতিনকে বলেছেন।
আরও পড়ুন: রাশিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পেলেন স্নোডেন
এছাড়া সাইবার ষড়যন্ত্র বা কোনো ধরণের আক্রমণ প্রতিহত করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত বলেও প্রেসিপুতিনকে জানিয়েছেন তিনি।
জো বাইডেন এবং তার পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক দল ইউরোপ সম্পর্কে পুতিনের অভিসন্ধি এবং মানবাধিকার ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নেবে।
তবে তারা কোনো ধরণের দ্বন্দ্ব চায় না। বরং তারা সম্পর্ক বজায় রাখা এবং সহযোগিতা অব্যাহত রাখার মনোভাব জ্ঞাপন করেছেন।