দেশের প্রথম রাজ্য হিসেবে আইনটিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে কেরালা।
ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের মাধ্যমে, এই যুক্তিতে এবার ভারতের শীর্ষ আদালতের কাছে যায় কেরালা সরকার।
সুপ্রিম কোর্টে ইতিমধ্যেই এই আইনটির বিরুদ্ধে ৬০টিরও বেশি আবেদন জমা পড়েছে। কেরালার বাম নেতৃত্বাধীন সরকার নিজেদের আবেদনে জানিয়েছে যে, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন সাম্যের অধিকারসহ সংবিধানের বিভিন্ন অনুচ্ছেদের নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। পাশাপাশি তারা আরও বলেছে, এই আইনটি সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার মূলনীতির পরিপন্থী।
এর আগে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ব্যাপক বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিক্ষোভকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত ২৩ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
কেরালা সরকার দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আবেদনে জানিয়েছে, সিএএ সংবিধানের ১৪, ২১ এবং ২৫ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন করেছে।
যদিও সংবিধানের ১৪ অনুচ্ছেদে সাম্যের অধিকার সম্পর্কে বলা হয়েছে। সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে ‘আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতি ছাড়া কোনো ব্যক্তি জীবন বা ব্যক্তিগত স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত হবে না’। এদিকে ২৫ নং অনুচ্ছেদের অধীনে বলা হয়েছে ‘সমস্ত ব্যক্তি বিবেকের স্বাধীনতার জন্য সমানভাবে অধিকারী।’
প্রসঙ্গত, নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের হিন্দু, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা যারা ভারতে অবৈধভাবে অবস্থান করছেন তারা যদি দেখাতে পারেন যে ধর্মের কারণে নিজ দেশে নির্যাতিত হয়েছেন তবে তারা সে দেশের নাগরিক হতে পারবেন। তবে এ আইনটি মুসলমানদের জন্য প্রযোজ্য হবে না।
সমালোচকরা এটিকে দেশের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন। তারা এটিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী সরকারের ভারতের ২০ কোটি মুসলমানকে বিতাড়িত করার একটি চক্রান্ত হিসেবে দেখছেন। তবে, মোদি আইনটিকে মানবিক হিসেবে ইঙ্গিত করেছেন। ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর নাগরিকত্ব আইন বাস্তবায়ন নরেন্দ্র মোদির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।