ভারতের উত্তরপ্রদেশে আন্দোলনরত কৃষকদের ওপর গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যার অভিযোগে অবশেষে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (৯ অক্টোবর) রাতে রাজ্য পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
এর একদিন আগেই ভারতের উচ্চ আদালত এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তর প্রদেশের রাজ্য সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেন। এতদিন তাকে গ্রেপ্তার না করায় রাজ্য পুলিশের ভূমিকারও সমালোচনা করেন আদালত।
উত্তর প্রদেশের পুলিশের উপপরিদর্ক আগারওয়াল দেশটির গণমাধ্যমকে জানান, রবিবার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রের ছেলে আশিস মিশ্রের বিরুদ্ধে লখিমপুরের খেরি জেলায় আন্দোলতরত আট কৃষককে গাড়ি চাপা দিয়ে ও গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি পুলিশের প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দেন নি। তিনি ঘটনার দায় এড়ানোর চেষ্টা করছেন।
আরও পড়ুন: রাতে ভারতে আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’
তিনি আরও জানান, শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১ টায় আটকের পর টানা জিজ্ঞাসাবাদেও আশিস মুখ খুলেন নি। এমনকি পুলিশের কিছু প্রশ্নের জবাব দিতে তিনি অস্বীকৃতি জানান।
গত রবিবার মন্ত্রীর গাড়িতে পিষ্ট হয়ে মারা যায় দীর্ঘদিন ধরে দেশটিতে চলা কৃষি আইন সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী কয়েকজন কৃষক। ঘটনাস্থলেই চারজন মারা যান।
কৃষক মৃত্যুর পর থেকেই দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীদের চাপে সোমবার পুলিশ মন্ত্রীর ছেলেকে দোষী সাব্যস্ত করে। সেসময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিহতদের পরিবারকে ৪৫ লাখ রুপি করে এবং আহতদের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।
আরও পড়ুন: ‘ভারত-বাংলাদেশ একে অপরের আপন ভাইয়ের মতো’
যদিও এর আগেই মন্ত্রী ওই ঘটনায় তার ছেলের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। তিনি জানান, তার ছেলে সেসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিতই ছিলেন না। তিনি আরও বলেন, দুর্বৃত্তরা আমার কর্মীদের ওপর লাঠি ও ছুরি নিয়ে হামলা করে।
সম্প্রতি কৃষকদের মৃত্যুকে কেন্ত্র করে আবারও উত্তাল হয়ে উঠেছে আন্দোলনরত কৃষকেরা। প্রায় একবছরের বেশি সময় ধরে দশ সহস্রাধিক কৃষক বিতর্কত কিছু কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। তাদের অনেকেই দাবি আদায়ের জন্য দীর্ঘদিন ধরে রাজধানী দিল্লির অদূরে অবস্থান কর্মসূচী পালন করছে। যদিও নরেন্দ্র মোদির সরকার এই বিতর্কিত আইন সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিন্তু কার্যত কোনও পদক্ষেপ নেয়নি দেশটির সরকার।