১৯৭৬ সালের পর থেকে আর কোন মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়নি শ্রীলঙ্কায়। ওই বছর থেকে দেশটিতে কোন অপরাধের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার বিষয়টি স্থগিত রাখা হয়েছিল। কিন্তু এখন সেই স্থগিতাদেশ শেষ হচ্ছে চারটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার মাধ্যমে।
দেশটির কারা কর্তৃপক্ষের এক মুখপাত্র জানায়, শতাধিক প্রার্থীদের মধ্য থেকে বাছাই করে দুই জল্লাদকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাদের দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু হবে। সামনে চারটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতেই দেয়া হয়েছে এই নিয়োগ।
এই জল্লাদদের নিয়োগের পরই দেশটির প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা ঘোষণা দিয়েছেন যে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ওই চারজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে।
পাঁচ বছর আগে দেশটির সর্বশেষ জল্লাদ ফাঁসির বেদী দেখার পর পদত্যাগ করেছিলেন। গত বছরও একজনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি ভয়ে কাজেই আসেননি।
বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ফেব্রুয়ারি মাসে এই জল্লাদ পদের জন্য বিজ্ঞাপন দেয়া হলে ১০০টির বেশি আবেদন পরেছিল। ওই বিজ্ঞাপনে প্রার্থীদের ‘শক্তিশালী নৈতিক চরিত্র’ থাকতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়। বিজ্ঞাপনে আরও বলা ছিল যোগ্য প্রার্থীকে ‘মানসিকভাবে শক্ত’ হতে হবে এবং ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সী শুধুমাত্র শ্রীলঙ্কার পুরুষরাই এই পদের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
তবুও দুইজন নারী ও দুইজন মার্কিন নাগরিক ওই পদের জন্য আবেদন করেছিলেন।
কেন মৃত্যুদণ্ড প্রথা আবার চালু করছে শ্রীলঙ্কা?
শ্রীলঙ্কায় খুন, ধর্ষণ এবং মাদক কারবারিদের জন্য শাস্তি হল মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু শাস্তি ঘোষণা করা হলেও ১৯৭৬ সালের পর থেকে কোন মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়নি।
প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা বলছেন, দেশটিতে মাদক কারবারিদের মোকাবেলা করতেই মৃত্যুদণ্ড প্রথা আবার চালু করা হচ্ছে।
তবে শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বছরের শেষের দিকে দেশটিতে নির্বাচন রয়েছে। মৃত্যুদণ্ড প্রথা আবার চালু করে ভোট বাড়ানোর জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সিরিসেনা।
প্রেসিডেন্ট বলেন, শ্রীলঙ্কায় দুই লাখের মতো মাদকাসক্ত ব্যক্তি রয়েছে এবং কারাগারে যারা সাজা ভোগ করছেন তাদের ৬০ শতাংশই মাদকদ্রব্য সম্পর্কিত ঘটনার সাথে জড়িত।
‘আমি মৃত্যু পরোয়ানায় সই করেছি। তাদেরকে এখনও জানানো হয়নি। আমরা এখনি তাদের নামও ঘোষণা করতে চাইনা কারণ তাতে কারাগারে অশান্তি সৃষ্টি হতে পারে,’ যোগ করেন তিনি।