ভারতের হিমাচল প্রদেশে বর্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে গত ৪১ দিনে বৃষ্টি, আকস্মিক বন্যা, ভূমিধস ও সড়ক দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ১৯৯ জন মানুষ মারা গেছেন এবং ৩১ জন নিখোঁজ হয়েছেন।
শুক্রবার (৪ আগস্ট) ভারতের গণমাধ্যম এএনআইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজ্যটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানায়, নিহত ১৯৯ জনের মধ্যে ৫৭ জন ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যার কারণে এবং ১৪২ জন বর্ষাকালে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।
রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘এখন পর্যন্ত বর্ষায় বিভিন্ন কারণে ১৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যায় ৫৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং সড়ক দুর্ঘটনা বা অন্যান্য কারণে ১৪২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এ ছাড়াও হিমাচল প্রদেশে ৩১ জন নিখোঁজ এবং ২২৯ জন আহত হয়েছে।’
রাজ্য সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মুখ্য সচিব অনিল খাচি বলেছেন, রাজ্যে বৃষ্টি ও বন্যায় প্রতিদিনই প্রাণহানি বাড়ছে।
আরও পড়ুন: চীনে ভয়াবহ বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২১
তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও দিন দিন বাড়ছে।
তথ্য অনুযায়ী, এ সময়ে অবকাঠামোর আনুমানিক ক্ষতি দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫৬৩ দশমিক ৫৮ কোটি টাকা।
বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় রাজ্যে ৭৭৪টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৭ হাজার ৩১৭টি বাড়ি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২৫৪টি দোকান ও ২ হাজার ৩৩৭টি গোয়ালঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, এ সময় রাজ্যে ৭৯টি ভূমিধস এবং ৫৩টি আকস্মিক বন্যা হয়েছে। রাজ্যে প্রায় ৩০০টি রাস্তা বন্ধ রয়েছে। ২৭৪টি বিদ্যুৎ ও ৪২টি পানি সরবরাহ প্রকল্প ব্যাহত হয়েছে।
রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার আগামী দুই দিনের জন্য সতর্কতা জারি করেছে।
অন্যদিকে, সোলান জেলার কালকা-সিমলা চার লেন জাতীয় মহাসড়ক-৫ ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সিমলার পর্যটন শিল্প হুমকির মুখে পড়েছে। এই বিপর্যয় রাজ্যের রাজধানীর ব্যবসার ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
হিমাচল প্রদেশ ট্যুরিজম স্টেকহোল্ডারস অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মহিন্দর শেঠ বুধবার বলেছেন, সাম্প্রতিক বৃষ্টি ও বন্যা শেষে আগামী সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে পর্যটকদের ভ্রমণ শুরুর আশা ছিল। তবে মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের ভয়ে পর্যটকরা ভ্রমণ বন্ধ রেখেছেন।
আরও পড়ুন: চীনে বন্যায় নিহত ২০, নিখোঁজ ২৭