আজ জাপানে পালিত হচ্ছে হিরোশিমা দিবস। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের হিরোশিমাতে বিশ্ব ইতিহাসের প্রথম পারমাণবিক ও বর্বরোচিত মার্কিন হামলার ৭৬ বছর পূর্তি আজ। দিনটি উপলক্ষে হিরোশিমার মেয়র বিশ্ব নেতাদের পারমাণবিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ অবস্থান নেওয়ার আহবান জানান।
মেয়র কাজুমি মাতসুই বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশে আহবান জানিয়ে বলেন, বিশ্বের সকল দেশ বর্তমান মহামারি মোকাবিলায় যেমন এক হয়ে কাজ করছে, ঠিক তেমনিভাবে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ একসাথে কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন: টেকনাফে পানি সরবরাহ উন্নয়নে জাপান ও ইউএনএইচসিআরের সহায়তা
মাতসুই বলেন, ‘যুদ্ধ জয় করার জন্য পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা হয়েছে, কিন্তু এর অপর নাম পরিপূর্ণ বিনাশ। তবে বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশ একসাথে কাজ করার মাধ্যমে আমরা এই বিনাশ আটকাতে পারি। কোনও সভ্য সমাজ এমন গণহত্যা চালানোর অস্ত্র নিয়ে এগিয়ে যেতে পারে না।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট বিশ্বে প্রথমবারের মতো জাপানের হিরোশিমা শহরে পারমাণবিক বোমা হামলা চালায়। ওই হামলায় হিরোশিমার বেসামরিক ও নিরস্ত্র শিশু-নারী-পুরুষসহ প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়।
আবার ৯ আগস্ট, ওই হামলার তিন দিন পর যুক্তরাষ্ট্র নাগাসাকিতে দ্বিতীয় এবং বিশ্ব ইতিহাসের শেষ পারমাণবিক বোমা হামলা চালিয়ে ৭০ হাজার মানুষকে হত্যা করে।
আরও পড়ুন: সরবরাহের উদ্বেগের মধ্যে জাপানে করোনার টিকা দেয়া শুরু
এরই মাধ্যমে এশিয়া মহাদেশে প্রভাবশালী দেশ জাপান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজয় স্বীকার করে ১৫ আগস্ট আত্মসমর্পণ করে।
বিশ্ববাসী জাপানে পারমাণবিক হামলার ভয়াবহতা দেখতে পেলেও সময়ের সাথে সাথে নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্রের ভান্ডার গড়ে তুলেছে বিভিন্ন দেশের সরকার। বর্তমানেও এই পারমাণবিক অস্ত্র মজুদ নিয়ে পুরো বিশ্বেই চলছে এক নীরব স্থবিরতা।
২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে বিশ্বজুড়ে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা আরোপের লক্ষ্যে এক আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পাদিত হয়। এই চুক্তিতে এখন পর্যন্ত ৫০টি দেশ অংশ নিলেও, যুক্তরাষ্ট্রসহ পারমাণবিক অস্ত্র সম্পন্ন দেশগুলো চুক্তি স্বাক্ষর করেনি। এমনকি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে আমেরিকার ছায়াতলে থাকা জাপানও এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি।
এসময় হিরোশিমার মেয়র জাপান সরকারের পরমাণু অস্ত্রবিরোধী চুক্তিতে স্বাক্ষরের জোর দাবি জানান।
আরও পড়ুন: জাপানে ৬৪ জনের করোনাভাইরাসের নতুন ধরন শনাক্ত
তবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা চুক্তির বিষয়ে নিজেদের অবস্থানের বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, ‘পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি দেশেরই নিজস্ব কিছু নীতি রয়েছে। তবে ভিন্ন মতের দেশগুলোর মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি।’