পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৯৪ টন কাঁচা মরিচ দেশে এসেছে বলে জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
ক্রমবর্ধমান মূল্যের পরিপ্রেক্ষিতে, কৃষি মন্ত্রণালয় এ পর্যন্ত মোট ৩৬ হাজার ৮৩০ মেট্রিক টন কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি দিয়েছে।
রবিবার (২ জুলাই) মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: হিলি স্থলবন্দর দিয়ে কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু
এদিকে ইউএনবি সাতক্ষীরা সংবাদদাতা জানান, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে টানা পাঁচদিন বন্ধ থাকার পর রবিবার (২ জুলাই) থেকে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
দেশের বাজারে কাঁচা মরিচের অস্বাভাবিক দামবৃদ্ধির মধ্যে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে দেশে এসেছে ছয় ট্রাকভর্তি ৬০ টন কাঁচা মরিচ। রবিবার প্রথম পণ্যবোঝাই ট্রাক-লরিগুলো বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
ছুটি শেষে সকল আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরুর প্রথম দিন কাঁচা মরিচবোঝাই ছয়টি ভারতীয় ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
ট্রাকপ্রতি ১০ টন করে মোট ৬০টন কাঁচা মরিচ রয়েছে। আজ সন্ধ্যায় আরও কিছু কাঁচা মরিচের ট্রাক প্রবেশ করতে পারে বলে জানিয়েছেন সিএন্ডএফ এজেন্ট কর্তৃপক্ষ।
ভোমরা স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এ এস এম মাকসুদ খান বলেন, ঈদুল আজহার কারণে গত মঙ্গলবার থেকে শনিবার পর্যন্ত পাঁচদিন ছুটি ছিল ভোমরা স্থল বন্দরে। রবিবার থেকে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রবিবার মোট কাঁচা মরিচবাহী ছয়টি ট্রাক প্রবেশ করেছে। সন্ধ্যায় আরও কিছু কাঁচা মরিচ বন্দরে প্রবেশ করতে পারে।
কাঁচা মরিচের আমদানির ফলে স্থানীয় বাজারসহ দেশের বাজারে কাঁচা মরিচের দাম কমবে বলে তার আশা।
ভোমরা স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা ইফতেখার উদ্দীন বলেন, রবিবার সকাল থেকে কয়েকটি কাঁচা মরিচের ট্রাক প্রবেশ করেছে। ধীরে ধীরে আরও করবে। একটু সময় লাগবে।
সাতক্ষীরা কাঁচা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম বাবু বলেন, সাতক্ষীরার বাজারে কাঁচা মরিচ ৪শ’ থেকে ৪৫০ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু
তিনি বলেন, আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজি। কাঁচা মরিচের দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষ পড়েছে বিপাকে। তাদেও ক্রয় ক্ষমতার বাইওে চলে গেছে।
রবিবার দুপুরে ভোমরা দিয়ে কিছু কাঁচা মরিচের ট্রাক প্রবেশের পর ইতোমধ্যে দাম কমতে শুরু হয়েছে।
এর আগে গত ২৭ জুন (মঙ্গলবার) থেকে ১ জুলাই (শনিবার) পর্যন্ত টানা ৫ দিন ঈদের ছুটিতে বন্দরের সবধরনের আমাদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ ছিলো। তবে এ সময়ে পাসপোর্টধারী যাত্রীরা যথারীতি যাতায়াত করেছেন।
অন্যদিকে ইউএনবি’র বেনাপোল সংবাদদাতা জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে রবিবার ভারত থেকে ৩৪ মেট্রিক টন কাঁচা মরিচ দেশে এসেছে। ৫টি ট্রাকে করে ভারতীয় এসব কাঁচা মরিচ বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রবেশ করে।
এদিকে বেনাপোলের মেসার্স উষা ট্রেডিং, এন এস এন্টারপ্রাইজ ও এস এম করপোরেশনসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কাঁচা মরিচ আমদানির জন্য অনুমতিপত্র (আইপি) পেয়েছে।
শুধুমাত্র এসব অনুমতিপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি করবে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স উষা ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী রফিকুল ইসলাম রয়েল বলেন, দেশে কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে যাওয়ায় সরকার ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়। ২৫ জুন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে (খামারবাড়ী) কাঁচা মরিচ আমদানির জন্য আইপি প্রদান করে।
বেনাপোল স্থলবন্দর উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কর্মকর্তা হেমন্ত কুমার সরকার বলেন, দেশের বাজারে ঈদের আগে থেকে হঠাৎ করে কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে যাওয়ায় সরকার ভারত থেকে আমদানির অনুমতি দেওয়ায় আজ থেকে আমদানি শুরু হয়েছে।
বেনাপোল কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার তানভীর আহমেদ বলেন, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ শূন্য দশমিক ৫০ মার্কিন ডলারে শুল্কায়ন করে খালাশ করছে।
তিনি বলেন, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রতিকেজির মূল্য ৩২ দশমিক ২০ টাকা পড়ে। মোট শুল্ক হার ৫৮ দশমিক ৬০ শতাংশ।
তিনি আরও বলেন, কাঁচা মরিচ বন্দর থেকে দ্রুত খালাস দেওয়ার জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশে প্রতিকেজি মরিচ ১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়ার পর, সরকার ভারত থেকে কাচামরিচ আমদানির অনুমতি প্রদান করে।