মঙ্গলবার রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে আয়কর মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। করদাতাদের সংখ্যা বাড়ানো এবং তাদের উন্নত সেবা দেয়ার লক্ষ্যে ঢাকাসহ সব বিভাগীয় সদরে নবমবারের মতো শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী এই আয়কর মেলা।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার চায় যে এক কোটি মানুষের সাথে আরও তিন কোটির মতো মানুষ কর দিক।
‘যদি চার কোটির মতো মানুষ কর দেয় তাহলে তা দেশের মানুষকে বিভিন্ন ধরনের সেবা দিতে সরকারের জন্য সহায়ক হবে। সরকার বিভিন্ন ধরনের সেবা দিচ্ছে, এটা সম্প্রসারিত করা যাবে,’ যোগ করেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী স্মরণ করেন, একসময় দেশের মানুষ কর দিতে অনাগ্রহ দেখাত। তারা মনে করত, একবার যদি কর দেন তাহলে সারা জীবনের জন্য বিপদে পড়ে যাবেন। ‘আমার মনে হয়, এই ধরনের মনোভাব আজ আর নেই।’
এখন বিপুল সংখ্যক তরুণ স্বেচ্ছায় কর দিচ্ছে জানিয়ে মুহিত বলেন, ‘এটা পুরো জাতির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।’
মন্ত্রী জানান, আগে মোট করদাতার সংখ্যা ৩০ লাখের বেশি ছিল না, বড় জোর ১৫ লাখ ছিল।
সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচির গুণগান করে মুহিত বলেন, এসব কর্মসূচির কারণে দেশে ‘একক অর্থনীতির’ সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে অর্থনীতির গতি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
‘অর্থনীতির এই ফলের কারণে ধনী-দরিদ্রের অর্থনৈতিক ব্যবধান হ্রাস পেয়েছে। হ্যাঁ, দেশে ব্যবধান রয়েছে, কিন্তু তা উল্লেখযোগ্যভাবে কমছে। বর্তমানে দেশে দারিদ্রের হার ২২ শতাংশ,’ যোগ করেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী জানান, বর্তমানে তিন কোটির মতো মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করছে এবং এই তিন কোটি মানুষের উত্তরণ ঘটাতে হবে। ‘এটাই সরকারের লক্ষ্য, এটাই জাতীয় লক্ষ্য। আমাদের সরকার এটা মাথায় রেখে কাজ করছে।’
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান।
এবার বিভাগীয় সদরগুলোতে মেলা হবে সাত দিন। সেই সাথে ৫৬ জেলায় চার দিন, ৩২ উপজেলায় দুই দিন এবং ৭০ উপজেলায় এক দিন করে মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
ব্যক্তি খাতের করদাতাদের আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার শেষ দিন ৩০ নভেম্বর।
গত দুই বছর ধরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআরের নিজস্ব কার্যালয়ে মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। তবে এবার মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজের কারণে সৃষ্ট যানজট এড়াতে মেলা আগারগাঁও থেকে সরিয়ে অফিসার্স ক্লাবে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে এনবিআর।
এবার মেলায় নতুন অন্তর্ভুক্ত বিষয় হচ্ছে অডিও ভিজুয়াল মিডিয়ার মাধ্যমে কর প্রশিক্ষণ।
নতুন করদাতারা মেলায় ই-টিন (ইলেকট্রনিক কর শনাক্তকরণ নম্বর) সংগ্রহ করতে পারবেন, এছাড়া অন্য করদাতারা পুনরায় নিবন্ধনের মাধ্যমে ই-টিন সংগ্রহ করতে পারবেন।
ই-পেমেন্ট এবং মুক্তিযোদ্ধা, নারী, প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক করদাতাদের জন্য মেলায় পৃথক বুথ স্থাপন করা হয়েছে। করদাতারা মেলায় আয়কর রিটার্ন জমা ও ট্যাক্স-সংক্রান্ত অন্যান্য কাজ করতে পারবেন।