এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেশের পোশাক শিল্পের সর্বোচ্চ সংগঠনটি বলে, ‘যদি শ্রমিকদের কল্যাণই আমাদের মূল লক্ষ্য হয়ে থাকে (আমরা সেটাই বিশ্বাস করি), তাহলে ডব্লিউআরসির কাছে আমাদের একান্ত অনুরোধ, তারা ও আমরা মিলে একটি যৌথ গবেষণা করে প্রকৃত ইস্যুগুলো তুলে ধরি এবং ভুল হলে সেগুলো সংশোধন করি।’
বিজিএমইএ জানায়, ডব্লিউআরসি সমালোচকের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ৪০ লাখ শ্রমিক অধ্যুষিত পোশাক শিল্পকে যে পর্যবেক্ষণ করেছে তাকে তারা স্বাগত জানায়। ‘আমরা মনে করি, যেকোনো তথ্য ও গবেষণা শিল্পকে পর্যবেক্ষণ করা এবং একে কমপ্লায়েন্সের পরবর্তী স্তরে উন্নীত করার জন্য সবসময়ই প্রয়োজনীয়।’
ডব্লিউআরসির ‘ব্যানিং হোপ: বাংলাদেশ গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স, সিকিং এ ডলার এন আওয়ার ফেইস ম্যাস ফ্রিংগস, ভায়োলেন্স অ্যান্ড ফলস অ্যারেস্ট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে পাঁচটি কেইস স্টাডি তুলে ধরা হয়। এ বিষয়ে বিজিএমইএ নিরপেক্ষ তদন্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানায় সংগঠনটি।
তবে তাদের আশা, ভবিষ্যতে পোশাক শিল্পের স্বার্থে এখাতের ‘অপচর্চাগুলোর’ বিষয়ে ঢালাও প্রতিবেদন বা মন্তব্য করা থেকে সবাই বিরত থাকবেন।
বিজিএমইএ’র মতে, ডব্লিউআরসির প্রতিবেদনে মজুরি বিষয়ে যে বিষয়গুলো উত্থাপন করা হয়েছে তার বেশিরভাগই ‘বিতর্কিত’।
বাংলাদেশের নিম্ন মজুরি পর্যবেক্ষণ করে একটি স্বাধীন নিম্নতম মজুরি বোর্ড। যেখানে শ্রমিক প্রতিনিধি, মালিক প্রতিনিধি, নিরপেক্ষ সদস্য (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) এবং স্বাধীন চেয়ারম্যান হিসেবে একজন জেলা জজ থাকেন।
কমিটি বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ধারা-১৪১ অনুযায়ী নিম্নতম মজুরি নির্ধারণের ক্ষেত্রে সব বিষয়গুলো বিবেচনা, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সাথে বিশদ আলোচনা এবং চূড়ান্তভাবে নতুন মজুরি কাঠামো নির্ধারনের বিষয়ে সুপারিশ করেছেন।
বিজিএমইএ আরও জানায়, ডব্লিউআরসির প্রতিবেদনে নতুন নিম্নতম মজুরি শ্রমিকদের প্রত্যাশা ও জীবনধারণের পক্ষে ন্যূনতম মজুরির (যদিও বিশ্বে এ বিষয়ে কোনা গ্রহণযোগ্য সংজ্ঞা নেই) তুলনায় অপর্যাপ্ত বলে অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিবেদনে এমন অনেক বিষয় উপেক্ষা করা হয়েছে যেগুলো প্রকৃতপক্ষে বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায় না। যেমন, যেকোনো দেশে নিম্নতম মজুরি নির্ধারণের ক্ষেত্রে সে দেশের জনগণের অর্থনৈতিক অবস্থা এবং আয়ের স্তর প্রধান বিবেচ্য বিষয়।
প্রতিবেদনে বলা হয় যে ২০১৯ সালের জানুয়ারির ধর্মঘটের কারণে সাড়ে ৭ হাজার থেকে ১১ হাজার ৬০০ শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিজিএমইএ জানায়, তারা দেখেছে যে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের যে সংখ্যা বলা হচ্ছে তা যাচাই করার কোনো উপযুক্ত সূত্র নেই। ‘তাছাড়া এ সংখ্যাটার বিষয়েও বিশদ কিছু বলা হয়নি।’
‘ডব্লিউআরসির মতো যে প্রতিষ্ঠানগুলো শিল্পের শ্রম চর্চা বিষয়ে সরব ভূমিকা পালন করে চলেছে তাদের প্রতি আমাদের একান্ত অনুরোধ, বিজিএমইএকে আপনাদের অংশীদার হিসেবে বিবেচনায় নিন। যাতে করে আমরা সর্বোচ্চ বিশ্বাস ও আস্থা নিয়ে একসাথে কাজ করতে পারি,’ যোগ করে পোশাক শিল্পের সর্বোচ্চ সংগঠনটি।
বিজিএমইএ আরও উল্লেখ করে, তারা পোশাক শিল্পের টেকসই উন্নয়ন এবং শ্রমিকদের কল্যাণ ও তাদের জীবনমান উন্নয়নে একান্তভাবে বিশ্বাস করে। ‘বিজিএমইএ একসাথে কাজ করায় বিশ্বাসী।’