জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা না করায় হতাশা প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সফল করতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি না করতে বিএনপি নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দেন তিনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে রবিবার জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণে অনেকেই খুশি হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘তবে আমি কিছুটা হতাশ। আমি আশা করেছিলাম প্রধান উপদেষ্টা তার সমস্ত প্রজ্ঞা দিয়ে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করবেন এবং নির্বাচনের একটি রূপরেখা দেবেন।’
আরও পড়ুন: বিএনপিকে যারা থামাতে গিয়েছে, তারাই ধ্বংস হয়েছে: আমীর খসরু
মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার (১৮ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে এই আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় আসুক বা না আসুক নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের অর্ধেক সমস্যার সমাধান সম্ভব।
তিনি বলেন, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে নির্বাচিত সরকার গঠিত হলে যারা বাংলাদেশের ক্ষতি করতে চায়, অস্থিতিশীল করতে চায় এবং দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে চায় তারা পিছু হটতে বাধ্য হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা শুধু সংস্কার চাই না, আমরা সেগুলোর উদ্যোগ নিয়েছি এবং আমরা তা করব। আমরা আপনাদেরকে জনগণ-স্বীকৃত পদ্ধতিতে এগিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। আমরা এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করিনি, বরং আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে আপনাদের পাশে আছি।’
স্বৈরাচারের সহযোগীরা সচিবালয়ে তাদের পদে বহাল থাকা অবস্থায় সরকার কীভাবে সংস্কার করবে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
আরও পড়ুন: বিএনপি এককভাবে ক্ষমতায় যেতে চায় না: বুলু
মির্জা ফখরুল বলেন, 'আমি বিশ্বাস করি এই সরকার ও তরুণরাই নতুন বাংলাদেশ গড়তে সক্ষম হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি ১৭ বছর সংগ্রাম করলেও শেষ পর্যন্ত ছাত্ররাই শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। ‘তাই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো দূরত্ব তৈরি করা উচিত হবে না। এটা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। শিক্ষার্থীরা অনেক কিছু বলছে এবং তাদের সেই অধিকার আছে।’
তিনি বলেন, বিএনপি যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সংস্কার চায়। তা না হলে মানুষের মনে ধারণা জন্মাবে যে, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার জন্য সরকারের খারাপ উদ্দেশ্য রয়েছে। ‘আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, জাতির কল্যাণে নির্বাচন করতে হবে।’
ফখরুল বলেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করেই নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব একজন দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদ হিসেবে জাতির জন্য মাওলানা ভাসানীর অবদানের কথা স্মরণ করেন। তার উপস্থিতি আমাদের সমগ্র অস্তিত্বে অনুভূত হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ফখরুল বলেন, সাধারণ পরিবারে জন্ম নেওয়া ভাসানী ছিলেন একজন ব্যতিক্রমী ও কিংবদন্তি জাতীয় নেতা।
এর আগে রবিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নির্বাচনি সংস্কারের সিদ্ধান্ত হলেই সরকার নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করবে।
আরও পড়ুন: পাবনায় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১