জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপের জন্য কোনো বিদেশি সংস্থা কোনো চাপ দেয়নি বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘এক-এগারোর কুশীলবরা এবং অন্য কিছু ব্যক্তিবিশেষ সংলাপ চাচ্ছে। সংলাপ নিয়ে বিদেশিরা আমাদের কাউকে কোনো তাগাদা দেয়নি।’
রবিবার (১৬ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বিএনপির এক দফা দাবি হালে পানি পায়নি: তথ্যমন্ত্রী
এসময় হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপিও তো সংলাপের কথা বলছে না। তারা-তো বলছে না যে আমাদের সঙ্গে সংলাপ করতে চায়। এটা কারা বলছে, সেটা আপনারা কিছুটা জানেন, আমরাও জানি।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ১/১১ পরিবর্তনের পর যে ধরনের সরকার এসেছিল, সেই ধরনের সরকার আর কখনো চায় না। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, ইদানীং এক-এগারোর কুশীলবরা আবার সক্রিয় হয়েছে।
তারা নানা জায়াগায় প্রকাশ্যে-গোপনে বৈঠক করছে। বিভিন্ন দূতাবাসে গিয়ে ধরনাও দিচ্ছে। এক-এগারোর কুশীলবরা সক্রিয় হয়ে নানা ধরনের প্রেসক্রিপশনও দেওয়া শুরু করেছে।
বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, তারা যখন রাজনৈতিক কর্মসূচি দেয় তখন সরকারি দল হিসেবে আমাদের একটা বাড়তি দায়িত্ব আছে।
তিনি বলেন, সরকারি দলের দায়িত্ব হলো দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা, আগুন সন্ত্রাসীরা যাতে মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে না পারে তা নিশ্চিত করা। রাজনৈতিক কর্মসূচির ব্যানারে কেউ যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায় সেক্ষেত্রে জনগণের সঙ্গে থাকা আমাদের দায়িত্ব।
শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান ব্যবসায়ীরা, এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা দেশে শান্তি-স্থিতিশীলতা চাইবে সেটিই স্বাভাবিক। তাদের বক্তব্যে সেটি উঠে এসেছে।
মন্ত্রী বলেন, তারা জানে ও বোঝে যে সরকারের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে। দেশের অগ্রগতিও অব্যাহত থাকবে। সেটি অনুধাবন করতে পেরে শীর্ষ ব্যবসায়ীরা শেখ হাসিনাকে আবার প্রধানমন্ত্রী দেখতে চান বলে দৃঢ়ভাবে ইচ্ছা পোষণ করেছেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ২০০৭ সালের এই দিনে আওয়ামী লীগের সভাপতি, তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিনাপরোয়ানায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার বাসভবন সুধাসদন তছনছ করা হয়েছিল এবং তার প্রয়াত স্বামী বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছিল।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সত্যিকার অর্থে এক-এগারো পরিবর্তনের পর যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছিল, তারা দুর্নীতি-দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কথা বলে ক্ষমতা গ্রহণ করে। কিন্তু নিজেরাই দুর্নীতি ও দুঃশাসনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। ধারণা করা হয়েছিল, যাদের বিরুদ্ধে কথা বলে তারা ক্ষমতা গ্রহণ করে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, কিন্তু যে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি-দুঃশাসনের কারণে তারা ক্ষমতা গ্রহণ করেছিল, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
তিনি বলেন, কিন্তু তারা বুঝতে পারেনি, মুক্ত শেখ হাসিনার চেয়ে বন্দি শেখ হাসিনা কম শক্তিশালী নয়। শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করার পর হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার মুক্তির আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন সাধারণ জনগণ। সে কারণে এগারো মাস পরে শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিল তারা।
প্রকৃতপক্ষে আমাদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়াও মুক্তি লাভ করেছিলেন। আজকে সেই দিন। বাংলাদেশের মানুষ আর কখনো সেই ধরনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় না।
আরও পড়ুন: বিএনপির সংসদ বিলুপ্তির দাবি সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টির দুরভিসন্ধি: তথ্যমন্ত্রী