এর আগে সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে রাজধানীর ধানমন্ডিতে সোবহানবাগ জামে মসজিদে নাসিমের নির্বাচনী এলাকা সিরাজগঞ্জ থেকে আসা পাঁচ শতাধিক লোকের উপস্থিতিতে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
বনানী জামে মসজিদে ১০টা ২৫ মিনিটে দ্বিতীয় জানাজা শেষে ১০টা ৫৫ মিনিটে বনানী কবরস্থানে মায়ের কবরে বর্ষিয়ান এ আওয়ামী লীগ নেতাকে দাফন করা হয়।
দ্বিতীয় জানাজায় কয়েকশ আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী শারীরিক দূরত্ব মেনে অংশ নেন।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে নিহত জাতীয় চার নেতার একজন এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এম মনসুর আলীর ছেলে নাসিম শনিবার সকালে রাজধানীর শ্যামলীতে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।
এর আগে শুক্রবার রাতে নাসিমের অবস্থার অবনতি হলে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ১২ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের জরুরি সভা বসে। নাসিমের ছেলেও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। গত সোমবার এ মেডিকেল বোর্ডটি গঠিত হয়।
রাজধানীর শ্যামলীতে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় নাসিমেরে স্ট্রোক হয়। এতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার পরে গত ৫ জুন সফল অস্ত্রোপচারও হয়।
তার আগে গত ২ জুন মোহাম্মদ নাসিমের নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস পজিটিভ আসে এবং পরবর্তীতে আবার নেগেটিভ আসে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাবেক মন্ত্রী নাসিম ১৯৯৬ সালেও স্বরাষ্ট্র, গৃহায়ন ও গণপূর্ত এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মোহাম্মদ নাসিমের জন্ম ১৯৪৮ সালের ২ এপ্রিল সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর উপজেলায়। নাসিম সংসদে পঞ্চমবারের মতো সিরাজগঞ্জের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছিলেন।
১৯৮৬, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালেও সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন মোহাম্মদ নাসিম। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে তিনি সিরাজগঞ্জ-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।
পারিবারিক জীবনে মোহাম্মদ নাসিম বিবাহিত এবং তিন সন্তানের জনক। তার স্ত্রীর নাম লায়লা আরজুমান্দ।
এদিকে, মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিজের পিতার মতো মোহাম্মদ নাসিমও আমৃত্যু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে ধারণ করে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে গেছেন। সকল ঘাত-প্রতিঘাত উপেক্ষা করে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রতিষ্ঠায় অনন্য অবদান রেখেছেন তিনি।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে বাংলাদেশ একজন দেশপ্রেমিক ও জনমানুষের নেতাকে হারাল। আমি হারালাম একজন বিশ্বস্ত সহযোদ্ধাকে।’
প্রধানমন্ত্রী মৃতের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
আরও পড়ুন:
সাবেক মন্ত্রী নাসিমের করোনা নেগেটিভ
স্ট্রোকের পর নাসিমের সফল অস্ত্রোপচার
স্ট্রোক করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম