সাতটি উপজেলা ও দুইটি পৌরসভা থেকে যারা ইতিমধ্যে পদত্যাগ করেছেন তাদের পক্ষ থেকে বুধবার মানিকগঞ্জ শহরের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
ওই সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সবগুলো আহ্বায়ক কমিটির মোট সদস্য ২৯৭ জন। এর মধ্যে ১৬৩ জন সদস্য পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে এবং মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বাধার কারণে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড বিএনপি কমিটি করতে পারছে না। পকেট কমিটি বাতিল করে ত্যাগী নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
বিকালে মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সিনিয়র নেতা অ্যাডভোকেট মোকসেদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আজাদ হোসেন খান, যুগ্ম আহ্বায়ক তোজাম্মেল হক তোজা প্রমুখ।
সাতটি উপজেলা ও দুটি পৌরসভার যারা পদত্যাগ করেছেন তাদের অধিকাংশ সদস্য সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
পদত্যাগী ওইসব নেতাদের অভিযোগ, ঢাকায় বসে মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জামিলুর রশিদ খান, যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রহমান এবং সদস্য সচিব এসএ জিন্নাহ কবির স্বাক্ষরিত ও অনুমোদিত উপজেলা ও পৌরসভা কমিটিগুলোতে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা, জেল জুলুম খাটা ও মামলার শিকার নেতাকর্মীদের বঞ্চিত করে অরাজনৈতিক নেতাদের দিয়ে, অসাংগঠনিকভাবে তাদের পকেট কমিটি গঠন করেছেন।
পদত্যাগী নেতাদের দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে তথাকথিত পকেট কমিটি বাতিল করে সর্বসম্মতিক্রমে একটি গ্রহণযোগ্য কমিটি গঠন করতে হবে। এই কমিটি বাতিল না করলে বিএনপি আগামীতে নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়বে। এমনকি খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন ও আগামীর লড়াই করতে পারবে না।
উল্লেখ্য, গত ১১ সেপ্টেম্বর জেলা বিএনপির জেলা আহ্বায়ক জামিলুর রশিদ খান, যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রহমান এবং সদস্য সচিব এসএ জিন্নাহ কবির মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলা ও দুটি পৌরসভার প্রতিটিতে ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেন। এর জের ধরে গত ২১ দিনে নবগঠিত উপজেলা ও দুটি পৌরসভার কমিটি থেকে এ পর্যন্ত ১৬৩ জন পদত্যাগ করেছেন। এর মধ্যে শিবালয় উপজেলার ২৩ জন, দৌলতপুর উপজেলার ২৪ জন, ঘিওর উপজেলার ১৮ জন,সাটুরিয়া উপজেলায় ২০ জন, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় ২০ জন, মানিকগঞ্জ পৌরসভায় ২২ জন, সিংগাইর উপজেলায় ১৮ জন এবং হরিরামপুর উপজেলায় ১৮ জন পদত্যাগ করেছেন।
তবে এ বিষয়ে জেলা বিএনপি আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জামিলুর রশিদ খান জানান, সকল নিয়মকানুন মেনেই উপজেলা ও পৌর সভার আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। পদত্যাগের যে সংখ্যা বলা হচ্ছে তা সঠিক নয়। কারণ আহ্বায়ক হিসেবে এ পর্যন্ত ২০-২২ জনের পদত্যাগপত্র পাওয়া গেছে। এর মধ্যে অনেকেই আবার পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন। যারা সংবাদ সম্মেলন করে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিচ্ছে তারা দলের জন্য ক্ষতিকর ব্যক্তি। তারা বিএনপির ভালো চায় না, খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার নেতৃত্ব মেনে নিতে পারছে না।