তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, রেললাইন কাটা, গাড়িতে আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানো- এগুলো কোন ধরনের রাজনীতি।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে তথ্যমন্ত্রী একথা বলেন।
আরও পড়ুন: বিএনপিই দেশের প্রথম কিংস পার্টি: তথ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে গাজীপুরে ট্রেন লাইনের ২০ ফুট কেটে দেওয়া হয়েছে এবং এতে সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে, একজন যাত্রী নিহত হয়েছেন, অর্ধ শতাধিকের বেশি যাত্রী আহত হয়েছেন, ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, রাজধানীতেও কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। তাদের এই তথাকথিত অবরোধ শুরু হওয়ার পর দেশের কোথাও অবরোধ পালিত হয়নি। কিন্তু এ পর্যন্ত ৩৫০ যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে, সাতজনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং বহু মানুষ আগুনে দগ্ধ হয়েছেন।
তিনি বলেন, এই ট্রেন লাইন কাটা, গাড়িতে আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানো- এগুলো কোন ধরনের রাজনীতি? এই অপরাজনীতি চিরদিনের জন্য বন্ধ হওয়া দরকার। আমরা সবাই যদি এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলি তাহলে এই অপরাজনীতি চিরদিনের জন্য বন্ধ হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গুপ্ত স্থান থেকে প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করেন, মাঝে মধ্যে হঠাৎ ভোরে বা মধ্যরাতে তাকে রাস্তাতেও দেখা যায়।
তিনি বলেন, আচমকা ১০ কিংবা পাঁচ মিনিটের জন্য মিছিল করে আবার হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতারা যেরকম করেন, ঠিক ওরকমই তারা করছেন। মানুষ ও গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো, সন্ত্রাস নৈরাজ্য সৃষ্টি কখনো গণতান্ত্রিক আন্দোলন নয়।
আরও পড়ুন: বিএনপি আন্ডারগ্রাউন্ড সংগঠনে রূপান্তরিত হয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, এগুলো সন্ত্রাসী দেশবিরোধী, জনবিরোধী কর্মকাণ্ড। তাদের কর্মকাণ্ডের বর্বরতা, হিংস্রতা, নৃশংসতা হিংস্র হায়েনাকেও হার মানিয়েছে। তারা হিংস্র জন্তুর চেয়েও জঘন্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদের এই অপরাজনীতি চিরদিনের জন্য বন্ধ করতে আমরা বদ্ধপরিকর।
সন্ত্রাসীদের বিচার নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, অবশ্যই অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং অনেকে মনে করছেন, যারা রেললাইন কেটেছে পুলিশ তাদের খুঁজে পাবে না, কিন্তু পুলিশ অবশ্যই তাদের খুঁজে বের করবে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অবরোধের ডাককে মানুষ বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, আপনারা জানেন, দেশে ৪৪টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩০টি অর্থাৎ বেশিরভাগ দলই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। দেশ এখন নির্বাচনী উৎসবমুখর। কিন্তু নির্বাচন প্রতিহত করতে ক্রমাগতভাবে বিএনপি-জামায়াতের পক্ষ থেকে গুপ্ত স্থান থেকে অবরোধের ডাক দেওয়া হচ্ছে।
জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনা প্রশ্নে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, জাতীয় পার্টির মহাসচিব ইতোমধ্যেই স্পষ্ট করেছেন, তারা নির্বাচন করার জন্যই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আমিও বিশ্বাস করি, তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ভালো ফল করবেন। জাতীয় পার্টি আমাদের দীর্ঘদিনের সহযোগী, গণতন্ত্র ও সংবিধানকে রক্ষা করার জন্য তারা আমাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আজকের পরিস্থিতিতেও জাতীয় পার্টি আগের মতোই আমাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করবে।
সাংবাদিকদের মন্তব্য ‘বিএনপির সমমনা কিছু ছোট দল নির্বাচনবিরোধী উস্কানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছে’ প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেখুন ব্যাঙ অনেক ছোট কিন্তু ব্যাঙের আওয়াজ অনেক বড়। আমাদের রাজনীতিতেও কিছু দল আছে ব্যাঙ যেমন ছোট সে রকম, কিন্তু আওয়াজ অনেক বড়। এরা নানা ধরনের কথা বলে।
আরও পড়ুন: ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ কয়েকটি সংস্থা ও দেশ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবে: তথ্যমন্ত্রী