জবাবদিহি নেই বলেই সরকার গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেছেন, ‘এই সরকারের জবাবদিহি থাকলে ১২ কেজি গ্যাস সিলিন্ডারে ১৯ টাকা বাড়ানো হতে পারে না। সীমিত আয়ের মানুষ যারা সিএনজি, রিকশাচালক কিংবা দিনমজুরি করে দিনানিপাত করে তাদের ওপর ভয়ঙ্কর চাপ পড়বে। এই মূল্যবৃদ্ধি অযৌক্তিক ও গণবিরোধী। এই সরকারের জবাবদিহি থাকলে গ্যাসের দাম বাড়াত না।’
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রয়ারি)দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটি বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন:নাটোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়কের বাসায় হামলার অভিযোগ
রিজভী বলেন, “আমরা গণতান্ত্রিক দল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সাপোর্ট দেই। কিন্তু আপনাদের (সরকারকে) মনে রাখতে হবে, আপনাদের সিদ্ধান্ত যেন গণবিরোধী না হয়, গরীব মানুষ মারার সিদ্ধান্ত যেন না হয়। এমনিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য প্রতিদিন বাড়ছে। চালের দাম কমাতে পারেননি। তার মধ্যে যদি গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়, তাহলে সেটি ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ ছাড়া আর কিছুই নয়।”
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘শেখ হাসিনা দেশের জনগণের ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছিল। সেই ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। এই দেশে কে সরকার গঠন করবে—তা নির্ধারণ করবে দেশের জনগণ। কিন্তু শেখ হাসিনা সেটা করতে দেয়নি। ছাত্র-জনতার রক্তঝরা গণআন্দোলনে সেই ভয়ঙ্কর ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছে এবং দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য জনগণের আশা জাগানোর জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অনেক কিছু করার আছে।’
‘দেশের জনগণ গত ১৬-১৭ বছর ধরে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেনি, ভোট দিতে পারেনি। জনগণের চাওয়া—অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেই পরিবেশটা তৈরি করবে, যাতে তারা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেন।’
তিনি বলেন, ‘সংস্কারের নামে জনগণের চোখে ধোয়াশা সৃষ্টি করা যাবে না। বিএনপির পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার করুক; তবে সংস্কারের সঙ্গে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার জন্য নির্বাচনের তারিখ ঠিক করতে হবে।’
‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। সংগঠন কিংবা দল কারা তৈরি করবে—সেই দায়িত্ব হচ্ছে সেই ব্যক্তির। এই দায়িত্ব প্রধান উপদেষ্টার নয়।’
দেশে গণতান্ত্রিক সরকার নেই বলেই অর্থনৈতিক খাতে বিনিয়োগ বিঘ্নিত হচ্ছে বলেও এ সময় মন্তব্য করেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ রাজনীতিক।
তার ভাষ্যে, ‘মানুষ অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে। এই অনিশ্চয়তা কাটানোর জন্যই রাজনৈতিক সরকার প্রয়োজন। বর্তমানে দেশকে বৈদেশিক ঋণের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। আমাদের রিজার্ভ আবার কমতে শুরু করেছে। এগুলো দূরীভূত করতে হলে অবশ্যই নির্বাচিত সরকারের পথে হাঁটতে হবে।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আফরোজা খান রিতা, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইদুল আলম বাবুল, সহ-অর্থ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, এস এ জিন্নাহ কবিরসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।