কলারোয়া পৌরসভার স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আক্তারুল ইসলামের উপস্থিতিতে সকাল ৯টার দিকে কলারোয়া বাজারের পূবালী ব্যাংকের সামনে ছাত্রদল নেতা রাজনের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন যুবক ইটপাটকেল নিয়ে এই হামলা চালায়। এতে তার গাড়ির গ্লাস ভাঙচুরসহ অন্যান্য ক্ষতি হয়।
তবে স্থানীয়দের প্রতিরোধের মুখে হামলাকারীরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
এ সময় গাড়িতে হাবিবুল ইসলাম হাবিব, তার স্ত্রী অ্যাডভোকেট শাহানারা আক্তার বকুল, ছেলে জয়সী ও মেয়ে ছিলেন।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার রায় ৪ ফেব্রুয়ারি
কলারোয়ার বিএনপি দলীয় মেয়রপ্রার্থী শরিফুজ্জামান তুহিন অভিযোগ করে বলেন, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী উপজেলা বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মো. আক্তারুল ইসলামের উপস্থিতিতে তার সমর্থকরা এই হামলা চালায়। হামলায় নেতৃত্ব দেয় ছাত্রদল কর্মী রাজন। তার সাথে সিরাজুল, রিগ্যান, সিগার, রিপন, ইশাসহ আরও ২০-২৫ জন উপস্থিত ছিলেন।
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল কবির জানান, লিখিত কোনো অভিযোগ না পেলেও ঘটনাটি তিনি শুনেছেন।
তিনি বলেন, বিএনপির একটা অংশের কর্মীরা এই হামলা চালিয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন।
এদিকে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৩৪ জনের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
বুধবার সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবির তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়ে রায় ঘোষণার জন্য আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন।
জামিন বাতিল হওয়া অন্যদের মধ্যে রয়েছেন কলারোয়ার দুইবারের সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা আক্তারুল ইসলাম, সাতক্ষীরা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার, সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ, তিনজন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন, রকিবুল ইসলাম ও রবিউল ইসলাম এবং বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন সমূহের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা: সাফাই সাক্ষ্য দিলেন রিজভী
এ মামলায় অভিযুক্ত ৫০ জন আসামির একজন টাইগার খোকন অন্য মামলায় জেলহাজতে গ্রেপ্তার রয়েছেন। পলাতক রয়েছেন সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল কাদের বাচ্চুসহ ১৫ জন।
প্রসঙ্গত, ধর্ষণের শিকার এক নারীকে দেখতে শেখ হাসিনা ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আসেন। ঢাকায় ফেরার পথে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলারোয়া বিএনপি কার্যালয়ের সামনে তার গাড়ি বহরে হামলার অভিযোগ উঠে তৎকালীন সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দীন বাদী হয়ে উপজেলা যুবদলের সভাপতি আশরাফ হোসেনসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৭০-৭৫ জনের নামে থানায় ব্যর্থ হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
পরে আদালতের নির্দেশে এক যুগ পর ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর কলারোয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। এরপর ২০১৫ সালের ১৭ মে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে ৩০ জনকে সাক্ষী রেখে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শেখ সফিকুর ইসলাম।