বুধবার সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবির রায় ঘোষণার জন্য এ দিন ধার্য করেছেন।
একই সাথে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৩৪ জনের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
জামিন বাতিল হওয়া অন্যদের মধ্যে রয়েছেন কলারোয়ার দুইবারের সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা আক্তারুল ইসলাম, সাতক্ষীরা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার, সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ, তিনজন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন, রকিবুল ইসলাম ও রবিউল ইসলাম এবং বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন সমূহের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা: সাফাই সাক্ষ্য দিলেন রিজভী
শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা: এক আসামির মামলা বাতিল আবেদনের বিষয়ে আদেশ মঙ্গলবার
এ মামলায় অভিযুক্ত ৫০ জন আসামির একজন টাইগার খোকন অন্য মামলায় জেলহাজতে গ্রেপ্তার রয়েছেন। পলাতক রয়েছেন সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল কাদের বাচ্চুসহ ১৫ জন।
এর আগে আজ ষষ্ঠ দিনের মতো রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। এতে রাষ্ট্রপক্ষে অংশ নেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মুনীর, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন মৃধা এবং সাতক্ষীরার পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ।
অপরদিকে আসামিপক্ষে অংশ নেন অ্যাডভোকেট শাহানারা আক্তার বকুল, অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ, অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান পিন্টু, অ্যাডভোকেট আব্দুস সেলিম, অ্যাডভোকেট তোজাম্মেল হোসেন প্রমুখ।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এস এম মুনীর আদালতে ২০ জন সাক্ষীর জবানবন্দি তুলে ধরে বলেন, সাক্ষীদের বক্তব্যে সকল আসামি দোষী প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর প্রাণে বেঁচে যাওয়া তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার ওপর বারবার প্রাণনাশ চেষ্টায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। কলারোয়ার ঘটনা তারই অংশ বিশেষ। সাক্ষীদের বক্তব্যে সব আসামি দোষী প্রমাণিত হয়েছে। ন্যায়বিচার হলে সকল আসামি সর্বোচ্চ শাস্তি পাবেন।’
অপরদিকে বিবাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহানারা আক্তার বকুল ও অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ বলেন, মামলার এজাহার, পুলিশের অভিযোগপত্র এবং সাক্ষীদের জবানবন্দির মধ্যে তথ্যগত ব্যাপক গরমিল ও অসংলগ্নতা রয়েছে। সাক্ষীরা কোনোভাবেই আসামিদের দোষী প্রমাণ করতে পারেননি।
তারা বলেন, ঘটনার দিন সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিব কলারোয়ায় উপস্থিত ছিলেন এমন কোনো প্রমাণও তারা দেখাতে পারেননি। সাক্ষীরা বলেছেন হাবিবুল ইসলামের পরামর্শ ও নির্দেশে তার অনুসারীরা এই হামলা চালায়।
ন্যায়বিচার হলে সকল আসামি খালাস পাবেন বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা: ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন
শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলা ৩ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ
প্রসঙ্গত, ধর্ষণের শিকার এক নারীকে দেখতে শেখ হাসিনা ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আসেন। ঢাকায় ফেরার পথে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলারোয়া বিএনপি কার্যালয়ের সামনে তার গাড়ি বহরে হামলার অভিযোগ উঠে তৎকালীন সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দীন বাদী হয়ে উপজেলা যুবদলের সভাপতি আশরাফ হোসেনসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৭০-৭৫ জনের নামে থানায় ব্যর্থ হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
পরে আদালতের নির্দেশে এক যুগ পর ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর কলারোয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। এরপর ২০১৫ সালের ১৭ মে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে ৩০ জনকে সাক্ষী রেখে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শেখ সফিকুর ইসলাম।