১২ বছর পর বৃহস্পতিবার সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো উপস্থিত হলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে কারাগারে যাওয়ার পর ছয় বছরের মধ্যে এই প্রথম তিনি জনসমক্ষে উপস্থিত হলেন এবং রাষ্ট্রীয় কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নিলেন। শেষবার তিনি ২০১২ সালে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন।
আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রীকে নিয়ে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে গুলশানের বাসা থেকে বের হয়ে পৌনে ৪টার দিকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পৌঁছান খালেদা জিয়া।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে খালেদা জিয়াকে সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ।
আরও পড়ুন: গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াসহ ২ জন খালাস
চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম এবং প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল এএসএম কামরুল আহসান আমন্ত্রণপত্রটি খালেদা জিয়ার কাছে হস্তান্তর করেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ২৬ নেতাকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
সেনাকুঞ্জে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী প্রতিষ্ঠার স্মরণে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আজ (বৃহস্পতিবার) সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালিত হচ্ছে।
খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, হার্ট, ফুসফুস, কিডনি ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিল স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন।
শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বাধীন মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে একাধিকবার চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি।
তাকে উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে বিশেষায়িত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা করেছে বিএনপি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন খালেদা জিয়া।
২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট তার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন। পরে তিনি জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হন।
কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড সাময়িক স্থগিত করে তাকে মুক্তি দেয়। শর্তসাপেক্ষে তাকে গুলশানের বাসভবনে থাকার এবং দেশ ত্যাগ না করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এভাবে তিনি ৭৭৬ দিন ছিলেন।
৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে খালেদা জিয়াকে তার শাস্তি থেকে সম্পূর্ণ অব্যাহতি দেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় ৭ বছর পর মামলা