আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য বিক্ষুব্ধ প্রার্থীদের প্রায় ৫০০টি আপিল নিষ্পত্তি করায় গত পাঁচ দিনে মোট ২৫৫ জন প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন এবং প্রার্থিতা হারিয়েছেন আরও ৪ জন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন গত ৫ ডিসেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তাদের মনোনয়নপত্র গ্রহণ ও বাতিলের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ প্রার্থীদের আপিল শুনানি ও নিষ্পত্তি শুরু করে।
ইসি প্রায় ২৬০টি আপিল গ্রহণ করেছে, ২১৩টি আপিল খারিজ করে দিয়েছে এবং ২০টি আপিলের বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত স্থগিত রেখেছে।
২৬০টি আবেদন গ্রহণের মধ্য দিয়ে ২৫৫ জন প্রার্থী ৭ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ছাড়পত্র পেয়েছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তারা তাদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা সত্ত্বেও প্রার্থিতা হারিয়েছেন চারজন।
আরও পড়ুন: জাতীয় নির্বাচন: আরও ৬১ প্রার্থীকে বৈধ ঘোষণা করল ইসি
তবে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিরুদ্ধে দুটি পিটিশন দায়ের করা হয়েছিল। নির্বাচন কমিশন আবেদন দুটি গ্রহণ করেছে।
রবিবার ৫৬টি, সোমবার ৫১টি, মঙ্গলবার ৬১টি, বুধবার ৪৮টি এবং বৃহস্পতিবার ৪৪টি আপিল গ্রহণ করে কমিশন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর নির্বাচন ভবনে ১০০টি আপিলের শুনানিতে ৫২টি আবেদন নাকচ করে চারটি আপিল স্থগিত রাখে ইসি।
শুক্রবার আপিল শুনানি শেষ করবে কমিশন। এর মধ্যে ঝালকাঠি-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহজাহান ওমর, বরিশাল-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাম্মী আহমেদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ দেবনাথ, ফরিদপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম হক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদের আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের পুনঃতফসিল চেয়ে ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশের রিট আবেদন
প্রার্থিতা নিয়ে ইসির সিদ্ধান্তেও কেউ সংক্ষুব্ধ হলে তা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
মনোনয়নপত্র বাতিল বা গ্রহণের বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন ৫৬১ জন প্রার্থী।
তাদের অধিকাংশই মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে এবং কমপক্ষে ৩০ জন মনোনয়নপত্র গ্রহণের বিরুদ্ধে আবেদন করেছেন।
এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০টি আসনে স্বতন্ত্র ৭৪৭ জনসহ মোট ২ হাজার ৭১৬ জন মনোনয়নপত্র জমা দেন।
কিন্তু রিটার্নিং কর্মকর্তারা গত ১-৪ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাইয়ের সময় ১ হাজার ৯৮৫টি মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেন এবং ৭৩১ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন।
৭৩১টি মনোনয়নপত্রের বেশিরভাগই তিনটি কারণে বাতিল করা হয়েছিল - স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জমা দেওয়া ১ শতাংশ ভোটারের সইয়ের অসামঞ্জস্যতা, ঋণ ও ইউটিলিটি বিল খেলাপি এবং দ্বৈত নাগরিকত্ব।
প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর এবং প্রার্থীরা ভোট গ্রহণের ৪৮ ঘণ্টা আগে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি (সকাল ৮টা) পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারণায় যেতে পারবেন। ৭ জানুয়ারি সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে।
নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৯টি দল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে, যা প্রধান দল বিএনপিসহ কয়েকটি দল বর্জন করছে।
আরও পড়ুন: মাহি বি, হিরো আলমসহ ৫৬ জন প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন