যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে রাঙ্গামাটিতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব আষাঢ়ী পূর্ণিমা পালিত হয়েছে। বুধবার সকালে আষাঢ়ী পূর্ণিমা উপলক্ষে রাঙ্গামাটির আনন্দ বিহার ও মৈত্রী বিহারসহ বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এদিন সকাল থেকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা পঞ্চশীল গ্রহণ, অষ্টশীল গ্রহণ, সমবেত প্রার্থনা, চীবরদান, গুরু ভক্তি, ছোয়াইং প্রদান (ভান্তেদের দান), মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জলনসহ নানা অনুষ্ঠান পালন করেন।
এসময় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে ধর্মীয় দেশনা প্রদান করেন আনন্দ বিহারের উপাধ্যক্ষ ধর্মেশ্বর ভান্তে থেরো।
বিকালে বুদ্ধ মূর্তি স্নান, ধর্মদেশনা, হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও দেশ-জাতির মঙ্গল কামনায় প্রার্থনার মধ্যদিয়ে শেষ হয় আষাঢ়ী পূর্ণিমার আয়োজন।
আষাঢ়ী পূর্ণিমা বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি ধর্মীয় উৎসব। কারণ এ তিথিতেই গৌতম বুদ্ধ মাতৃগর্ভে প্রতিসন্ধি লাভ, রাজ প্রাসাদ, রাজত্ব ও স্ত্রী-পুত্রের মায়া ত্যাগ করে দুঃখ থেকে মুক্তির পথ অন্বেষণে গৃহত্যাগ এবং বুদ্ধত্ব লাভের পর তাঁর পঞ্চবর্গীয় শিষ্যদের উদ্দেশে প্রথম ধর্মচক্র দেশনা দেন (ধর্মের বাণী প্রচার করেন)। এবং তিনি সংযম পালনের ব্রত নিয়ে এই আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা তিথি পর্যন্ত তিনমাস বর্ষাবাস শুরু করেছিলেন।
এ আষাঢ়ী পূর্ণিমার পরে তিনমাস বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বর্ষাবাস শুরু করেন। এ সময় ভিক্ষুরা জরুরি কোনো কারণ ছাড়া বিহারের বাইরে রাত্রিযাপন করতে পারেন না। এছাড়া এ তিনমাস বৌদ্ধ ভিক্ষুরা ধর্ম বিনয় অধ্যয়ন ও ধ্যান চর্চা করে থাকেন। তিনমাস বর্ষাবাস শেষ হওয়ার পর প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপনের মধ্যদিয়ে শুরু হয় মাসব্যাপী কঠিন চীবর দানোৎসব।
আরও পড়ুন: খাগড়াছড়িতে বৌদ্ধ বিহারে দানোত্তম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত