শুক্রবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নবীনগর এলাকাবাসীর উদ্যোগে এ মেলার আয়োজন করা হয়।
করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে মেলায় বিভিন্ন বয়সী মানুষের ঢল নামে। মেলায় গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী ‘গাঙ্গি’ খেলা (কুস্তি) ছাড়াও ঘোড়দৌড়, সাইকেল দৌড় এবং তৈলাক্ত কলাগাছ বেয়ে ওঠা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: অমর একুশে গ্রন্থমেলা হবে, তবে সময় জানা যাবে পরে
পৌষমেলার প্রধান আকর্ষণ ছিল গাঙ্গি খেলা। হাঁক ছেড়ে গাঙ্গিবীরের হাত ধরে খোঁজা হয় তার প্রতিদ্বন্দ্বীকে। কেউ একজন এগিয়ে এলে তার সাথে চলে ওই গাঙ্গিবীরের গাঙ্গি খেলা। তিন মিনিটের খেলায় যিনি জয়ী হন তাকে নিয়ে হাত ধরে আবারও একইভাবে হাঁক ছেড়ে খোঁজা হয় পরবর্তী চ্যালেঞ্চারকে। এভাবেই একের পর একজন গাঙ্গিবীরের প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্য দিয়ে নির্ধারিত হয় খেলার চূড়ান্ত বিজয়ী।
বড়, মাঝারি ও ছোট এ তিনটি দলে অনুষ্ঠিত হয় গাঙ্গি খেলা। এ খেলা কোথাও ‘কুস্তি’ আবার কোথাও ‘বলি খেলা’ নামে পরিচিত।
স্থানীয় পৌর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিভিন্ন খেলা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় মনসাপূজা অনুষ্ঠিত, বসেনি ঐতিহ্যবাহী গুড়পুকুর মেলা
পৌষমেলার মাঠে বিভিন্ন পিঠা ও বাংলার ঐতিহ্যবাহী মজাদার খাবারের দোকান বসেছিল। পাশের পালপাড়া এলাকার মৃৎশিল্পীদের সুনিপুণ হাতে তৈরি নানা ধরনের খেলনা ও তৈজষপত্র ছাড়াও শিশুদের প্লাস্টিকের খেলনা, মেয়েদের প্রসাধনী ও চুড়ি-মালার পসরাও সাজিয়ে বসেছিলেন দোকানীরা।
গ্রামীণ ঐতিহ্যের চিনির তৈরি সাজ, উরফা, কদমা, বাতাসা, নিমকি, কালাই, খুরমা, ঝুরি ও মিষ্টিসহ বিভিন্ন মুখরোচক খাবারের দোকান ছিল।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে বন্ধ হয়নি আনন্দ মেলা, মেলায় ১ জনের মৃত্যু
পৌর কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম জানান, স্থানীয় এলাকাবাসী প্রায় দুই শতাধিক বছরের অধিক সময় ধরে এ মেলার আয়োজন করে আসছে। প্রতিবছর ছাওয়াল পীরের দরগাহ সংলগ্ন মাঠে বাংলা পৌষ মাসের শেষ দিকে এ পৌষমেলা অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি বলেন, জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার নারী-পুরুষ ও শিশুরা মেলায় ভিড় করে। শিশু-কিশোর ও তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষের উপচে পড়া অংশগ্রহণে পৌষমেলা হয়ে উঠে জমজমাট ও প্রাণবন্ত। মেলায় গ্রামের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারী-পুরুষ ভিড় জমায়।
আরও পড়ুন: নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলার ওয়েবসাইট উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী
পৌষমেলাকে ঘিরে নবীনগর ও আশপাশের এলাকার মেয়েদের বাবার বাড়ি ‘নাইওর’ (বেড়াতে) আসার প্রচলনও রয়েছে।
পৌষমেলার রাতে দরগাহ প্রান্তরে বসে বাউল গানের আসর।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস: চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা বন্ধ ঘোষণা